স্টাফ রিপোর্টার : ক্যাসিনো ইস্যুতে সংসদ সদস্য রাশেদ খান মেনন, হুইপ শামসুল হক চৌধুরী, পর্যটন সচিব মহিবুল হক, স্বরাষ্ট্র সচিবসহ সংশ্লিষ্টদেরকে লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়েছে।

জনস্বার্থে বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) ডাক ও রেজিস্ট্রি যোগে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইউনুছ আলী আকন্দ এ নোটিশ পাঠান। বিষয়টি তিনি নিজেই নিশ্চিত করেছেন।

এ নোটিশের পর আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে যথাযথ কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে রিট করা হবে বলেও জানান তিনি।

ক্যাসিনো ইস্যুতে কারো কারো বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হলেও সংসদ সদস্য রাশেদ খান মেননসহ আরও অনেকের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করছে না, তাই জনস্বার্থে এ নোটিশ পাঠানো হয়েছে বলে জানান আইনজীবী ইউনুছ আলী আকন্দ।

তিনি জানান, ইয়ংমেন্স ক্লাবের গভর্নিং বডির চেয়াম্যান রাশেদ খান মেনন। কিন্তু তার বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে না।

লিগ্যাল নোটিশের বিষয়ে আইনজীবী জানান, ফকিরাপুলের ইয়ংমেন্স ক্লাবে এক সংসদ সদস্যের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ, জুয়া ও ক্যাসিনো নিয়ে এক হুইপের বক্তব্য এবং বিদেশিদের জন্য ক্যাসিনোর ব্যবস্থা নিয়ে পর্যটন সচিবের মন্তব্য নিয়ে লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়েছে।

সংসদ সদস্য রাশেদ খান মেনন, বেসামরিক বিমান ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী, সংসদ সদস্য ও জাতীয় সংসদের হুইপ শামসুল হক চৌধুরী, স্বরাষ্ট্র সচিব এবং বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মহিবুল হক বরাবর এ নোটিশ পাঠানো হয়েছে।

নোটিশে সংবিধানের একটি অনুচ্ছেদ ও পাবলিক গ্যাম্বলিং অ্যাক্ট-১৮৬৭ এর কথা উল্লেখ করা হয়েছে। তাই ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এ নোটিশের জবাব না পেলে তিনি হাইকোর্টে রিট করবেন বলে জানিয়েছেন।

সংবিধানের ১৮(২) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে- গণিকাবৃত্তি ও জুয়াখেলা নিরোধের জন্য রাষ্ট্র কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। এছাড়া পাবলিক গ্যাম্বলিং অ্যাক্টের ৩, ৪ এবং ১৩ ধারা অনুসারে এটা শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

ইউনুছ আলী আকন্দ বলেন, সংবিধানের ১৮ (২) অনুচ্ছেদ অনুসারে সরকার জুয়া বন্ধে ব্যবস্থা নেবেন। কিন্তু সেটা এখনো হয়নি। ফলে সারাদেশে জুয়া, ক্যাসিনো প্রভাব বিস্তার করেছে। সে জন্য অপরাধ বেড়ে যাচ্ছে, মানি লন্ডারিং হচ্ছে। ইদানিং সরকার পদক্ষেপ নিয়েছে। যাদের কিছু কিছু সংশ্লিষ্টতা আছে তাদের গ্রেফতার করছে। কিন্তু যারা গডফাদার তাদের গ্রেফতার করছে না।

‘পত্রপত্রিকায় এসেছে রাশেদ খান মেনন ইয়ংমেন্স ক্লাবের গভর্নিং বডির সভাপতি। তিনি লাল ফিতা কেটে উদ্বোধন করেছেন। তার ছবি সেই চেয়ারম্যান কক্ষে আছে। তার বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। গতকাল মিডিয়ায় দেখেছি পর্যটন প্রতিমন্ত্রীর উপস্থিতিতে সচিব বলেছেন বিদেশিদের জন্য ক্যাসিনোর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করবেন। এ বক্তব্য অসাংবিধানিক।

এছাড়া একজন হুইপ মিডিয়ায় জুয়া বা ক্যাসিনো বন্ধ নিয়ে মন্তব্য করেছেন। এগুলো বন্ধ হলে ক্লাব কিভাবে চলবে। এখন কথা হচ্ছে অবৈধভাবে উপার্জন করে ক্লাব চলবে?’

তিনি বলেন, এ অবস্থায় লিগ্যাল নোটিশ দিয়েছি। বিষয়গুলো মিডিয়ায় দেখা যায় তা কতটুকু সত্য এগুলোর বিষয়ে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে জানতে চেয়েছি। যদি ২৪ ঘণ্টার মধ্যে জবাব না পাওয়া যায় তাহলে ধরে নেয়া হবে মিডিয়ায় যা এসেছে তা সত্য এবং ১০২ অনুচ্ছেদ অনুসারে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট করবো।

(ওএস/এসপি/সেপ্টেম্বর ২৫, ২০১৯)