স্টাফ রিপোর্টার : রাজধানীর গুলিস্তানসহ বিভিন্ন স্থানে পুলিশের ওপর বোমা হামলার ঘটনায় দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন নব্য জেএমবির সদস্য ফরিদ উদ্দিন রুমি। এছাড়া সংগঠনটির সদস্য মিশুক খান মিজানের বিরুদ্ধে দুদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

চারদিনের রিমান্ড শেষে রবিবার তাদের ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করে পুলিশ। এ সময় পল্টন থানার সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় ফরিদ উদ্দিন রুমির জবানবন্দি রেকর্ড করার আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগর হাকিম আশেক ইমান তার জবানবন্দি রেকর্ড করেন। জবানবন্দি রেকর্ড শেষে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

অপরদিকে মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য মিশুক খান মিজানের বিরুদ্ধে সাতদিনের রিমান্ড আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম আশেক ইমাম দুদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

পল্টন থানার আদালতের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা পুলিশের উপ-পরিদর্শক মোতালেব হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেন। গত ২৪ সেপ্টেম্বর মহানগর হাকিম সরাফুজ্জামান আনছারী রুমি ও মিশুকের বিরুদ্ধে চারদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

২৩ সেপ্টেম্বর যাত্রাবাড়ী ও নারায়ণগঞ্জের জঙ্গি আস্তানা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। ওইদিন ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম বলেন, নব্য জেএমবির প্রধান তামীম চৌধুরী মারা যাওয়ার পর মূসা নব্য জেএমবিকে শক্তিশালী করার চেষ্টা করেন। মূসার ইচ্ছা ছিল বিস্ফোরক সংগ্রহ করা। সিলেট-চাঁপাইনবাবগঞ্জে তাদের আস্তানা পাওয়া যায়। সেগুলো ধ্বংস হওয়ার পর তারা নতুন করে আবারও সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করে। নব্য জেএমবির একজন আমির আছে। সেই আমিরের তথ্য আমাদের কাছে রয়েছে।

মনিরুল ইসলাম আরও বলেন, রাজধানীর গুলিস্তানসহ পুলিশের ওপর পাঁচটি বোমা হামলার সঙ্গে নব্য জেএমবির পাঁচজনের এটি সেল জড়িত ছিল। তাদের পরিকল্পনায় হামলা হয়। তাদের বাইরে এ দুজনের ভূমিকা ছিল।

তিনি আরও জানান, নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় একটি অভিযান পরিচালিত হয়েছে। সেখান থেকে তিনজনকে আটক করা হয়। পরে দুজনকে আমরা গ্রেফতার দেখায়। তারা হলেন- ফরিদ উদ্দিন রুমি ও মিশুক খান ওরফে মিজান।

চলতি বছরের ২৯ এপ্রিল পুলিশের ওপর আইইডি (ইমপ্রোভাইসড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস) হামলা হয়েছিল। ওই হামলায় আমাদের তিনজন পুলিশ সদস্য আহত হন। সেই ঘটনার সঙ্গে তারা জড়িত। পাশাপাশি গতকাল যে বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক পাওয়া গেছে- এ ঘটনায় তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

গ্রেফতারদের পরিচয় উল্লেখ করে মনিরুল ইসলাম বলেন, ফরিদ উদ্দিন রুমি একজন ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার এবং তিনি একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক। মিশুক খান ওরফে মিজান মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা বেশকিছু তথ্য দিয়েছেন। তাদের আস্তানা থেকে একে-৭৪ খেলনা রাইফেল, খেলনা পিস্তল, ইলেকট্রিক্যাল ডিভাইস, তিনটি আইইডি উদ্ধার করা হয়।

তারা এ তিনটি আইইডি পুলিশের ওপর হামলার জন্য তৈরি করেছিল। প্রতি মাসের শেষ দিকে পুলিশের ওপর হামলা করা হয়। এবারও তারা সেই পরিকল্পনা করেছিল- জানান মনিরুল ইসলাম।

(ওএস/এসপি/সেপ্টেম্বর ২৯, ২০১৯)