স্টাফ রিপোর্টার : আইনি পথ ছাড়া খালেদা জিয়ার মুক্তির কোনো সুযোগ নেই বলে জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, খালেদা জিয়া রাজনৈতিক বন্দি নন। রাজনৈতিক বন্দি হলে আন্দোলনের প্রশ্ন আসে।

বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

হাছান মাহমুদ বলেন, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার বিষয়ে খালেদা জিয়া জানতেন এবং তারেক রহমানের নির্দেশে হয়েছে বলে উইকিলিকসে তথ্য এসেছে। এখন বিএনপি এ বিষয়ে কী জবাব দেবে?

তথ্যমন্ত্রী বলেন, যে তথ্যটি আমরা এতদিন বলে আসছিলাম, সে বিষয়টিই উইকিলিকসের তথ্যের মধ্যে উঠে এসেছে। এ বিষয়টি আদালতে স্বাক্ষি-প্রমাণের ভিত্তিতে প্রমাণিত হয়েছে। তারেক রহমানই ২১ আগস্ট হামলার মাস্টার মাইন্ড এবং খালেদা জিয়ার জ্ঞাতসারে ওই ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটানো হয়। মূলত জননেত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যা এবং আওয়ামী লীগকে নেতৃত্বশূন্য করতে চেয়েছিল তারা। সেটা আদালতে প্রমাণিত হয়েছে। আমরা যখনই বিষয়টি বলেছি তখনই বিএনপি এর বিরুদ্ধে বক্তব্য দিয়েছে। আমার প্রশ্ন জাগে, উইকিলিকসের ব্যাপারে বিএনপির কী বক্তব্য দেবে?

খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়টি আইনের ওপর নির্ভর করছে না-কি আন্দোলনের ওপর, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়টি আইনি বিষয়। কারণ খালেদা জিয়া দুর্নীতির জন্য শাস্তি পেয়েছে। তাকে মুক্ত করতে হলে আইনের মাধ্যমে করতে হবে।

বিএনপির কাছে প্রশ্ন রেখে হাছান মাহমুদ বলেন, তারা কোন পথে খালেদা জিয়ার মুক্তি চান? আইনের পথে হাঁটা ছাড়া অন্য কোনো পথে তার মুক্তি সম্ভব নয়। বিএনপি বারবার হুঙ্কার দেয় আন্দোলনের মাধ্যমে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করবে। বিএনপির আন্দোলনের নমুনা আমরা গত সাড়ে ১০ বছর ধরে দেখছি। সুতরাং বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়টি সম্পূর্ণভাবে আইনের বিষয়। অন্য কোনোভাবে মুক্তি সম্ভব নয়।

গত কয়েক দিন ধরে বিএনপি নেতাদের দৌড়ঝাঁপ নিয়ে সরকার নমনীয় কি-না, জানতে চাইলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, বিএনপির নেতারা আগেও দৌড়ঝাঁপ করেছে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করার জন্য। গত কয়েক দিনে বিএনপির সংসদ সদস্যরা খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করেছেন। তারপর তারা বলেছেন, খালেদা জিয়া মুক্তি পেলে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠাবেন। কিন্তু কোথায় পাঠাবেন, কী করবেন, এগুলো তো পরের বিষয়। প্রথমে তার মুক্তির বিষয়টি সুরাহা করতে হবে। এটা একান্ত আইনি বিষয়।

রাজনৈতিকভাবে বিএনপিকে সহযোগিতা করা হবে কি-না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মুক্তির বিষয়টি আইনি বিষয়। জামিনের মাধ্যমেও হতে পারে, আবার খালাস পেলে মুক্ত হতে পারে। আর প্যারোলে মুক্তির প্রসঙ্গ থাকলে সেটিও আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে করতে হবে। প্যারোল নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি বা তারাও আবেদন করেনি।

সরকার খালেদা জিয়াকে আন্দোলনের ভয়ে আটক রেখেছে। মির্জা ফখরুলের এমন মন্তব্য প্রসঙ্গে তথ্যমন্ত্রী বলেন, বেগম জিয়া শাস্তিপ্রাপ্ত আসামি। তাকে রাজনৈতিক কারণে বন্দি করা হয়নি। রাজনৈতিক কারণে কাউকে বন্দি করা হলে তাকে মুক্ত করার জন্য আন্দোলন হয়। খালেদা জিয়ার ক্ষেত্রে তা নয়। তার বিষয়টি হচ্ছে, তিনি এতিমের টাকা আত্মসাৎ করেছেন। সে কারণে আদালতে তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে তাকে শাস্তি দেয়া হয়েছে। সুতরাং তার মুক্তির বিষয়টি আদালতের মাধ্যমেই হতে হবে, অন্য কোনো মাধ্যমে নয়।

টিভিতে সিরিয়াল মানা হচ্ছে কি-না, জানতে চাইরে মন্ত্রী বলেন, আমরা নির্দেশনা দেয়ার পর বাংলাদেশের বেশির ভাগ টিভি চ্যালেন মেনে চলছে। যারা মানছে না তাদের বিরুদ্ধি ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। তবে যেটি প্রয়োজন, দেশ ডিজিটাল হয়েছে। তাই সম্প্রচার মাধ্যমটাও ডিজিটাল করতে হবে। আমরা চাই আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে ঢাকা-চট্টগ্রামকে সম্প্রচারের ক্ষেত্রে ডিজিটাল করতে। এরপর পর্যায়ক্রমে সারাদেশে ডিজিটাল সম্প্রচার করা হবে।

(ওএস/এসপি/অক্টোবর ০৩, ২০১৯)