রানীশংকৈল (ঠাকুরগাঁও) প্রতিনিধি : বৃহস্পতিবার সময় তখন ভোর দুপুর হঠাৎ করেই কয়েকটি অফিসারের গাড়ী এসে দাড়ালো এক বীরাঙ্গনা মুক্তিযোদ্বার বাড়ীতে। সাথে ব্যাটারী চালিত অটো চার্জার নিয়ে।

বাড়ীর আশ পাশের লোকজন সবাই হতবাক কি হতে যাচ্ছে এখানে? হ্যা এমনি হতবাক করে দিয়ে ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক ড.কে এম কামরুজ্জামান সেলিম গাড়ী থেকে নেমে সরাসরি গেলো বীরাঙ্গনা মুক্তিযোদ্বা টেপরী রাণীর বাড়ীর উঠানে। খোজ খবর নিলেন তার শরীর স্বাস্থ্যর। তারপর ছেলে মেয়েসহ সংসার কেমন চলছে তারও।

এর পর ব্যাটারী চালিত অটো চার্জারের গাড়ীর চাবিটি জেলা প্রশাসক নিজে তুলে দিলেন বীরাঙ্গনা মুক্তিযোদ্বা টেপরী রাণীর হাতে। এবং বললেন আপনার একমাত্র ছেলে সুধীর চন্দ্রকে দেওয়া হলো গাড়ীটি সে এ গাড়ী চালিয়ে এখন থেকে জীবিকা নির্বাহ করবে। এ কথা শুনে আত্বহারা টেপরী বেওয়া ধন্যবাদ দেওয়ার ভাষা হারিয়ে জেলা প্রশাসকের দিকে ছল ছল করে তাকিয়ে আনন্দে কেঁদে দিলেন। এরপর উপস্থিত জনতার কৌতুহল শেষ হলো আর ডিসি নিজে গাড়ী ড্রাইভ করে এর আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করলেন।

এ সময় ডিসির সাথে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক নুর কুতুবুল আলম, এনডিসি অমিত কুমার সাহা, উপজেলা চেয়ারম্যান শাহরিয়ার আজম মুন্না,উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মৌসুমী আফরিদা, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সোহাগ চন্দ্র সাহা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদুর রহমান, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান সোহেল রানা, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান শেফালী বেগম, প্রেসক্লাব সভাপতি মো: ফারুক আহাম্মদ সরকার, ইউপি চেয়ারম্যান জমিরুল ইসলাম প্রমুখ। এই টেপরী বেওয়া ঠাকুরগাও জেলার রাণীশংকৈল উপজেলার বলিদ্বারা গ্রামে বাসিন্দা। স্বাধীনতা যুদ্বের সময় অতি নির্যাতিত নারীদের মধ্যে তিনি অন্যতম। তাকে ইতিপূর্বে জেলা প্রশাসকের নিজস্ব তহবিল থেকে বিভিন্ন ভাবে সহযোগিতা করা হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে টেপরী বেওয়া বলেন, যখন এমন বড় বড় অফিসাররা এসে আমার সাথে ছেলের মত আচরণ করে তখন স্বাধীনতা যুদ্বের সময়কার কষ্টের কথা ভুলে যায়। অনেক ভালো লাগে তখন। আমার ছেলেকে চার্জার গাড়ী দিয়ে সহযোগিতা করায় আমি ডিসির প্রতি কৃতজ্ঞ।

জেলা প্রশাসক ড.কামরুজ্জামান সেলিম বলেন, যারা দেশের জন্য নিজেদের বিলীন করে দিয়েও স্বাধীনতার প্রতিক হয়ে আজও মুক্তিযুদ্বের শক্তি হয়ে দাড়িয়ে আছেন তাদের মধ্যে একজন এই টেপরী বেওয়া। আর এনাদের আমরা সব সময় সম্পদ হিসাবে মনে করি তাই এ সম্পদ রক্ষা করার দায়িতও¡ আমাদের। তার ছেলেকে জেলা প্রশাসকের নিজস্ব তহবিল থেকে অটো চার্জারটি দিতে পেরে আমি নিজেও আনন্দিত।

(কেএ/এসপি/অক্টোবর ০৩, ২০১৯)