রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা : গৃহপরিচারিকার বাক প্রতিবন্ধী মেয়েকে (১৪) ধর্ষণের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করে এক ব্যক্তির যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড, দু’ লাখ টাকা জরিমান, অনাদায়ে আরো এক বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। 

বৃহষ্পতিবার সাতক্ষীরার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক হোসনে আরা আক্তার এক জানকীর্ণ আদালতে এ রায় ঘোষণা করেন।

সাজাপ্রাপ্ত আসামীর নাম আনছার আলী (৪৫)। তিনি সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের চাঁচাই গ্রামের আরশাদ আলীর ছেলে।

মামলার বিবরণে জানা যায়, কালিগঞ্জের বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের একটি গ্রামের এক নারী অভাবের তাড়নায় অসুস্থ হয়েও একই গ্রামের কামিল মাদ্রাসার ছাত্র আনছার আলীর বাড়িতে কাজ করতেন। তার দু’ মেয়ে বাক প্রতিবন্ধি ও এক ছেলে শারাীরিক প্রতিবন্ধি। মায়ের অসুস্থতার কারণে ছোট মেয়ে গত ২০১৩ সালের ৫ এপ্রিল সকাল আটটার দিকে আনছারের বাড়িতে মাকে কাজে সহযোগিতা করতে যায়। নিজের ঘরে ঝাড়– দিয়ে দেওয়ার কথা বলে আনছার ওই প্রতিবন্ধি মেয়েকে তার ঘরে নিয়ে যেয়ে ধর্ষণ করে। বাড়িতে এসে ওই মেয়ে তার ভাই ও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ঘটনা খুলে বলে। বিপদ বুঝে আনছার ওই মেয়েকে বিয়ের প্রস্তাব দেয়।

পরবর্তীতে বিয়ের কথা বলে একটি নন জুডিশিয়াল স্টাম্পে ধর্ষিতার টিপ সহি ও তার ভাই(মামলার বাদি) এর স্বাক্ষর নেয়। কয়েক মাস পর ধর্ষিতার একটি পুত্র সন্তান হলে আনছার ওই সন্তানের পিতৃ পরিচয় অস্বীকার করে। বাধ্য হয়ে ধর্ষিতার ভাই বাদি হয়ে আনছারকে আসামী করে গত ২০১৪ সালের ২১ আগষ্ট কালিগঞ্জ থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯(১) ধারায় একটি মামলা দায়ের করে। আনছারকে পুলিশ গ্রেপ্তার করলেও জামিনে মুক্তি পায়। পরবর্তীতে ডিএনএ টেষ্ট করার পর সে পালিয়ে যায়।

মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা কালিগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক নকীব অয়জুল হক ২০১৪ সালের ১৪ নভেম্বর আনছারের নাম উল্লেখ করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। ২০১৭ সালের ৩১ অক্টোবর ডিএনএ টেষ্ট করে প্রতিবন্ধি কিশোরীর সন্তানের পিতা আনছার বলে প্রমাণিত হয়।

মামলার চারজন সাক্ষীর জবানবন্ধি ও নথি পর্যালোচনা শেষে আসামী আনছার আলীর বিরুদ্ধে প্রতিবন্ধি কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আদালত তাকে উপরোক্ত কারাদণ্ড দেন।

রাষ্ট্রপাক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের স্পেশাল পিপি অ্যাড. এসএম জহুরুল হায়দার বাবু ও ব্রাক এর আইনজীবী অ্যাড. আব্দুর রাজ্জাক।

(আরকে/এসপি/অক্টোবর ০৩, ২০১৯)