গৌরীপুর (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি : কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার কারণে ময়মনসিংহের গৌরীপুর রেলওয়ে জংশন স্টেশন এলাকা গো-চারণ ভূমিতে পরিণত হয়েছে। স্টেশনের দুইধারে আউটার সিগনাল পর্যন্ত কোথাও গরু বাঁধা রেল লাইনের পাশে। কোথাও গরু বাঁধা রেললাইনের স্লিপারে। কোথাও আবার রশিতে বাঁধা গরু দুই রেললাইনে মাঝে চড়ে বেড়াচ্ছে গরু। ট্রেন আসার হুইসেল শুনলেই আতঙ্কে ছুটাছুটি গরুগুলো। দুর্ঘটনা এড়াতে গরুর মালিক দৌড়ে এসে রশি টেনে গরুকে রেললাইন থেকে সরিয়ে আনেন।

রেলওয়ের ১৮৬১ সালের ৫ নম্বর আইনের ১২ নম্বর ধারা মোতাবেক রেললাইনের দু’পাশে ১০ ফুট করে এলাকার মধ্যে রেলের কর্মী ছাড়া সাধারণ মানুষ কিংবা গবাদিপশুর প্রবেশ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। ওই এলাকায় সব সময়ই ১৪৪ ধারা জারি থাকে। ওই সীমানার ভেতর কাউকে পাওয়া গেলে আইনের ১০১ ধারায় যে কাউকে গ্রেফতার করা যায়। কিন্তু এই আইন মানা হচ্ছেনা গৌরীপুর রেলওয়ে জংশনে।

রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, গৌরীপুর জংশন হয়ে তিনটি রুটে প্রতিদিন আন্তঃনগর, কমিউটার, মেইল ও লোকাল ট্রেন সহ ৩২ ট্রেন আসা যাওয়া করে। কিন্ত প্লাটফরমের ট্রেন চলাচলের লাইনে গরু চড়ানো কারণে ট্রেন আসা যাওয়ার সময় যেকোনে মুহূর্তে দুঘর্টনার আশঙ্কা রয়েছে।

বুধবার বিকালে রেলওয়ে জংশনে গিয়ে দেখা যায় স্টেশনের প্লাটফরম থেকে উত্তর দক্ষিণ পার্শ্বের আউটার সিগন্যাল এলাকা তিনটি রেললাইনের বিভিন্নস্থানে প্রায় ২০ টি গরু রশিতে বেঁধে চড়ানো হয়েছে। গরুগুলো সব স্টেশন ও আশেপাশের এলাকার বাসিন্দাদের।

বুধবার বিকাল ৫টায় ময়মনসিংহ থেকে ছেড়ে আসা জারিয়াগামী ট্রেনটি স্টেশনের দুই নং লাইনে প্রবেশ করতেই রেললাইনের পাশে বাধ গরুগুলো ছুটাছুটি করতে শুরু করে। দূর থেকে ট্রেন দেখে দৌড়ে এসে নিজের একটি গাভীর রশি টেনে ধরেন গরুর মালিক নূর কাশেম।

রেললাইনে গরু চড়ানোর বিষয়ে জানতে চাইলে নূর কাশেম বলেন, স্টেশনের রেললাইন এরিয়ায় গরু চড়াতে আমাদের কেউ নিষেধ করেনি। রেললাইনের পাশে ঘাস আছে বলেই গরু চড়াই। ট্রেন আসার শব্দ শোনলে আমরা দুর্ঘটনা এড়াতে গরুর রশি ধরে রাখি।

স্টেশন ঘুরে দেখা যায় প্লাটফরমের মসজিদের সামনে ৩ নং লাইনের পাশে রশি দিয়ে বাঁধা লাল রঙের একটি গরু। বিকাল ৫টার নেত্রকোনা থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী মহুয়া এক্সপ্রেস ট্রেনটি হুইসেল বাজিয়ে গৌরীপুর স্টেশনে যাত্রাবিরতি করলে গরুটি আতঙ্কে ছুটাছুটি শুরু করে। এসময়ে ট্রেনে উঠতে গিয়ে যাত্রীরা বিপাকে পড়েন। তবে ওই সময় গরুর মালিককে পাওয়া যায়নি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে গৌরীপুর রেলওয়ে জংশনের স্টেশন মাস্টার আব্দুর রশিদ বলেন, স্টেশনের এলাকার উত্তরে রেললাইনের পাশে স্থানীয়রা অনেক সময় গরু বেঁধে রাখে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

(এস/এসপি/অক্টোবর ০৪, ২০১৯)