স্পোর্টস ডেস্ক : প্রথম ইনিংসে মায়াঙ্ক আগরওয়াল আর রোহিত শর্মার অসধারণ ব্যাটিংয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার সামনে ৭ উইকেট হারিয়ে ৫০২ রান করে ইনিংস ঘোষণা করে ভারত। ডাবল সেঞ্চুরি করেছিলেন আগরওয়াল। ১৭৬ রান করেন রোহিত। উদ্বোধনী জুটিতে উঠেছিল ৩১৭ রান।

এরপর জবাব দিতে নেমে শুরুতেই মহা বিপর্যয়ে পড়ে যায় সফরকারী দক্ষিণ আফ্রিকা। অশ্বিন-জাদেজার স্পিন তোপের মুখে রীতিমত ত্রাহি অবস্থা হয়ে দাঁড়ায় প্রোটিয়াদের। ৬৩ রানেই তারা হারিয়ে বসে প্রথম সারির চারজন ব্যাটসম্যানকে। এরপরই ঘুরে দাঁড়ায় এক ওপেনার আর আরেক লেট অর্ডার ব্যাটসম্যানের বীরত্বে। শেষ পর্যন্ত তৃতীয় দিন শেষে ৮ উইকেট হারিয়ে ৩৮৫ রান করেছে দক্ষিণ আফ্রিকা।

রবিচন্দ্রন অশ্বিন-রবীন্দ্র জাদেজার স্পিন ভেলকিতে ৩ উইকেটে হারিয়ে ৩৯ রানে দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষ করে প্রোটিয়ারা। ৪৬৩ রানে পিছিয়ে থেকে তৃতীয়দিন সকালে ব্যাট হাতে ক্রিজে নামেন আগের দিনের দুই অপরাজিত ব্যাটসম্যান ওপেনার ডিন এলগার এবং টেম্বা বাভুমা।

দিনের সপ্তম ওভারে টেম্বা বাভুমাকে ফিরিয়ে প্রোটিয়া শিবিরে প্রথম ধাক্কাটা দেন পেসার ইশান্ত শর্মা। এলগারের সঙ্গে চতুর্থ উইকেটে ২৯ রান যোগ করে ব্যক্তিগত ১৮ রানে প্যাভিলিয়নে ফেরেন তিনি। এ সময় সবাই ধরেই নিয়েছিল, ফলো অনের দিকেই হয়তো যাচ্ছে প্রোটিয়া ব্যাটসম্যানরা।

কিন্তু ৬৩ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে ধুঁকতে থাকা দক্ষিণ আফ্রিকা ব্যাটিং লাইনআপ অক্সিজেন পেল ওপেনার ডিন এলগার এবং অধিনায়ক ডু’প্লেসির জুটিতে।

জাদেজা-অশ্বিনদের ঘূর্ণি সামলে তৃতীয় দিন শেষ করেছে তারা বেশ ভালো অবস্থানে থেকেই। যদিও এখনও ১১৭ রান পিছিয়ে। কিন্তু ফলোঅন এড়ানো থেকে শুরু করে শক্ত জবাব দিতে পারাটাও কম কথা নয়।

পঞ্চম উইকেটে এলগার-ডু’প্লেসির ১১৫ রানের জুটি গড়ার পর বিচ্ছিন্ন হন প্লেসি আর এলগার জুটি। ১৭৮ রানের মাথায় গিয়ে পড়ে ৫ম উইকেট। ১০৩ বলে ৫৫ রান করে আউট হন, ৮টি বাউন্ডারি এবং ১টি ছক্কার মার মারেন তিনি।

ফ্যাফ ডু প্লেসি আউট হওয়ার পর ডিন এলগারের সঙ্গে জুটি গড়েন কুইন্টন ডি কক। সাত নম্বরে নামা ডি কক যেন ভারতীয় বোলারদের সামনে হিমালয়ের সমান এক প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। এলগারের সঙ্গে ১৬৪ রানের বিশাল জুটি গড়ে তোলেন ডি কক। ৫ উইকেটে ১৭৮ থেকে ৩৪২ রান পর্যন্ত নিয়ে যান তারা দু’জন।

এ সময় ডিন এলগারকে তুলে নেন রবীন্দ্র জাদেজা। প্রথম থেকে দারুণ দৃঢ়তা দেখিয়ে ব্যাট করতে থাকা এলগার শেষ পর্যন্ত ফিরে যান ১৬০ রান করে। ২৭৮ বল মোকাবেলা করে ১৮টি বাউন্ডারি এবং ৪টি ছক্কার মার মারেন তিনি।

এলগার আউট হওয়ার পর কিছুক্ষণ চেষ্টা চালিয়ে যান কুইন্টন ডি কক। তবে ক্যারিয়ারের ৫ম সেঞ্চুরি করার পর আউট হয়ে যান ডি কক। ১৬৩ বল খেলে ১১১ রান করে তিনি। ৩৭০ রানের মাথায় ৭ম ব্যাটসম্যান হিসেবে ডি কক আউট হওয়ার পর ভারনন ফিল্যান্ডারও ফিরে যান কোনো রান না করে, ৩৭৬ রানের মাথায়।

তৃতীয় দিন শেষে প্রোটিয়াদের হয়ে উইকেটে রয়েছেন সেনুরান মুথাসামি ১২ রানে এবং কেশভ মাহারাজ ৩ রানে। ১১৭ রানে এগিয়ে রয়েছে ভারত। রবিচন্দ্রন অশ্বিন একাই নেন ৫ উইকেট। ২ উইকেট নেন রবীন্দ্র জাদেজা এবং ১ উইকেট নেন ইশান্ত শর্মা।

এর আগে দ্বিতীয়দিন মায়াঙ্ক আগরওয়াল ও রোহিত শর্মার রেকর্ড ৩১৭ রানের ওপেনিং পার্টনারশিপে ভর করে ৫০২ রান তুলে প্রথম ইনিংস ঘোষণা করে টিম ইন্ডিয়া। ২৩টি চার ও ৬টি ছক্কা রোহিত শর্মা ১৭৬ রানে আউট হলেও থামানো যায়নি মায়াঙ্ককে। প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরিকে ডাবল সেঞ্চুরিতে রূপান্তর করে, ২১৫ রানে আউট হন মায়াঙ্ক।

(ওএস/এসপি/অক্টোবর ০৪, ২০১৯)