স্টাফ রিপোর্টার : ছাত্রসংগঠনকে রাজনৈতিক দলের অঙ্গসংগঠনে ব্যবহার না করার বিধান বাস্তবায়ন করার দাবি জানিয়েছে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)। এছাড়া ছাত্রদের অধিকারভিত্তিক গৌরবোজ্জ্বল ছাত্ররাজনীতি ফিরিয়ে আনার পরিবেশ নিশ্চিতের দাবি জানানো হয়েছে। বুধবার রাতে সুজনের পাঠানো এক বিবৃতিতে এমন দাবি জানানো হয়।

সুজনের পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, আমরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি যে, ফেসবুকে নিজের রাজনৈতিক মতপ্রকাশ করার জন্য বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে নৃশংসভাবে পিটিয়ে হত্যা করার ঘটনায় সারাদেশের মানুষ এখন স্তব্ধ এবং ক্ষুব্ধ। স্বাভাবিকভাবেই আবরার হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় এখন আন্দোলনে উত্তাল। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা আবরারের খুনিদের সর্বোচ্চ শাস্তিসহ বেশ কয়েকটি দাবি জানিয়েছে।

আবরার হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা এবং শিক্ষার্থীদের এই ন্যায্য আন্দোলনের প্রতি সমর্থন জানিয়ে সুজন জানায়, অতিসত্বর আবরার হত্যাকারীদের শাস্তির আওতায় এনে এ ধরনের ঘটনার যেন পুনরাবৃত্তি না হয় সে ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে আহ্বান জানানো হচ্ছে।

নাগরিক সংগঠন হিসেবে সুজন মনে করে সব নাগরিকের ভিন্নমত ধারণ এবং তা প্রকাশ করার স্বাধীনতা রয়েছে। কোনোভাবেই কেউ যেন তাতে বাধা সৃষ্টি করতে না পারে তা নিশ্চিত করতে হবে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে সর্বোচ্চ বিদ্যাপিঠ। শিক্ষার্থীরা এখানে জ্ঞান-বিজ্ঞান, পারস্পরিক সহমর্মিতা ও সৌহার্দ্যবোধ চর্চা করবে- এটাই কাম্য। সেখানে ভিন্নমত পোষণ করার জন্য আবরারকে অসুস্থ ছাত্ররাজনীতির বলি হতে হলো, যা কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না। বায়ান্ন’র ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধ এবং নব্বইয়ের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন- দেশের সব গুরুত্বপূর্ণ বাঁক পরিবর্তনে ছাত্ররাজনীতির গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা রয়েছে। অথচ দুঃখের বিষয় হচ্ছে, ছাত্রদের স্বার্থ বাদ দিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর লেজুড়বৃত্তিতে লিপ্ত হওয়ায় ছাত্ররাজনীতি এখন শুধুই ক্ষমতাচর্চার জায়গায় পরিণত হয়েছে। আমরা গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ ১৯৭২-এ উল্লিখিত ছাত্রসংগঠনগুলোকে রাজনৈতিক দলের অঙ্গসংগঠন হিসেবে ব্যবহার না করার বিধান অবিলম্বে বাস্তবায়ন করে ছাত্রদের অধিকারভিত্তিক গৌরবোজ্জ্বল ছাত্ররাজনীতি ফিরিয়ে আনার পরিবেশ নিশ্চিত করার দাবি জানাচ্ছি। একইসঙ্গে দেশে বিদ্যমান বিচারহীনতার সংস্কৃতির অবসান করতে হবে যাতে এ ধরনের ঘটনা করতে কেউ আর সাহস না পায়।

আবরারের পরিবারের প্রতি সহমর্মিতা জ্ঞাপন করে এতে বলা হয়েছে, আবরার হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে জড়িতদের খুঁজে বের করে যথাযথ বিচারের আওতায় নিয়ে আসার মাধ্যমে বুয়েটসহ দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়ার গণতান্ত্রিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনার জোর দাবি জানাই।

(ওএস/অ/অক্টোবর ১০, ২০১৯)