স্টাফ রিপোর্টার : বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যা মামলায় বুয়েট ছাত্রলীগের বহিস্কৃত ক্রীড়া সম্পাদক মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

পাঁচ দিনের রিমান্ড চলাকালে তৃতীয় দিন শুক্রবার জিয়ন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে সম্মত হওয়ায় তাকে আদালতে হাজির করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক (নিরস্ত্র) মো.ওয়াহিদুজ্জামান। তিনি আসামির স্বেচ্ছায় দোষ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করার আবেদন করেন। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগর হাকিম সারাফুজ্জামান আনছারী জিয়নের জবানবন্দি রেকর্ড করেন। এরপর তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

গত ৮ আক্টোবর জিয়নের পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। মামলাটিতে গতকাল বৃহস্পতিবার বুয়েট ছাত্রলীগের বহিস্কৃত উপ-সমাজসেবা সম্পাদক ইফতি মোশাররফ সকাল আদালতে দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন।

এদিকে এদিন আবরারের রুমমেট মিজানুর রহমানকে আদালতে হাজির করে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা। প্রয়োজনে পরে তার রিমান্ড আবেদন করা হবে বলে তদন্ত কর্মকর্তা আবেদনে উল্লেখ করেন। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে একই আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

এর আগে এদিন আবরার ফাহাদ হত্যা মামলায় বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের আইনবিষয়ক উপ-সম্পাদক অমিত সাহা এবং হোসেন মোহাম্মদ তোহার ৫ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন একই আদালত।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর সবুজবাগ এলাকা থেকে অমিত সাহাকে আটক করে ডিবি পুলিশ। আবরারকে শেরে বাংলা হলের যে কক্ষে পিটিয়ে হত্যা করা হয় সেই কক্ষের (২০১১) বাসিন্দা বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের আইনবিষয়ক উপ-সম্পাদক অমিত সাহা। সেদিন আবরারকে ওই কক্ষে ডেকে নেওয়ার আগে অমিত মেসেঞ্জারে আবরারের খোঁজ করেন তার এক সহপাঠীর কাছে, যার স্ক্রিনশট পরে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।

বৃহস্পতিবার দুপুরে আটক হয় আবারের রুমমেট মিজানুর রহমান। সে বুয়েটের ওয়াটার রিসোর্সেস ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। এছাড়া বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টার দিকে গাজীপুরের মাওনা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় এজাহারভুক্ত আসামি মোহাম্মদ তোহাকে।

তোহা যন্ত্র প্রকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র এবং হল শাখা ছাত্রলীগের সদস্য। শেরোংলা হলের ২১১ নম্বর কক্ষে থাকতেন তিনি।

গত ৬ অক্টোবর রাতে বুয়েটের শেরেবাংলা হলের দ্বিতীয় তলার সিঁড়ি থেকে অচেতন অবস্থায় আবরার ফাহাদকে উদ্ধার করা হয়। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ওই রাতে হলের ২০১১ নম্বর কক্ষে আবরার ফাহাদকে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের কয়েকজন বেদম পেটায়।

এ ঘটনায় ১৯ জনকে আসামি করে সোমবার সন্ধ্যায় চকবাজার থানায় একটি হত্যা মামলা করেন আবরারের বাবা বরকতুল্লাহ।

(ওএস/অ/অক্টোবর ১১, ২০১৯)