স্পোর্টস ডেস্ক : মাশরাফি দীর্ঘ পরিসরের ফরম্যাটে জাতীয় দলের হয়ে খেলেন না ১০ বছর। যেহেতু টেস্ট খেলেন না, তাই ঘরোয়া প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট থেকেও দুরে জাতীয় দলের ওয়ানডে অধিনায়ক। তারপরও ম্যাচ ফিটনেস ধরে রাখতে গত কয়েক বছর একবার দু’বার হলেও জাতীয় লিগে খেলেছেন মাশরাফি; কিন্তু ‘পঞ্চ পান্ডবের’ অন্যতম সদস সাকিব আল হাসান বাংলাদেশের ঘরোয়া প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে প্রায় অনুপস্থিত।

বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার শেষ কবে জাতীয় লিগ খেলেছেন, তা অতিবড় সাকিবভক্তও চট করে বলতে পারবেন না। পারার কথাও নয়। কারণ, সাকিব প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট খেলেন খুব কম।

অনেক পরিসংখ্যান ঘেঁটেঘুঁটে জানা গেল, সাকিব সর্বশেষ জাতীয় লিগ (এনসিএল) খেলেছেন ২০১৫ সালে। তার মানে গত তিন বছর ঘরোয়া প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে একটি ম্যাচও খেলেননি দেশের ক্রিকেটের সব সময়ের সফলতম পারফরমার। এবং ভিতরের খবর, হয়ত এবার টানা চতুর্থবারের মত জাতীয় লিগ খেলা হবে না তার।

সিপিএল খেলে দেশে ফিরেই হয়তো বিশ্রামে চলে যাবেন সাকিব। তারপর বিপিএলের কোন রাউন্ড না খেলেই সরাসরি ২৫ অক্টোবর ভারত সফরের প্রস্তুতি কাম্পে যোগ দেবেন। আজ বিকেলে আকরাম খানের কথায় মিললো তেমন আভাস।

শনিবার বিকেলে শেরে বাংলায় নিজ অফিস কক্ষে উপস্থিত সাংবাদিকদের সাথে বিপিএল, জাতীয় দল, নারী দলের পাকিস্তান সফর ও সাম্প্রতিক ক্রিকেটীয় কর্মকাণ্ড নিয়ে কথা বলতে গিয়ে বিসিবি পরিচালক ও ক্রিকেট অপারেশন্স কমিটির প্রধান আকরাম খান বলেন, ‘গতকাল পর্যন্ত সাকিবের এনওসি (ছাড়পত্র) ছিলো। তবে এরপর সে আরো একটু (সময়) বাড়িয়ে নিয়েছে। যেহেতু ওর দল সিপিএল ফাইনালে খেলছে, তাই আমাকে ফোন করে আমার সাথে কথা বলেই সাকিব এনওসি বর্ধিত করেছে। আশা করি ১৩ বা ১৪ তারিখে ফিরবে।’

দেশে ফিরে কি ১৭ অক্টোবর থেকে অনুষ্ঠেয় জাতীয় লিগের দ্বিতীয় পর্বে খেলবেন সাকিব? খুব প্রাসঙ্গিকভাবেই উঠল এ প্রশ্ন। তার জবাবে আকরাম খান যা বললেন, তা শুনে মোটেই মনে হলো না সাকিব আদৌ জাতীয় লিগ খেলবেন কি না। বরং মনে হলো, সাকিব ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জের সিপিএল খেলে ক্লান্ত থাকবে। তাই তারও (সাকিবের) বিশ্রামের ব্যাপার আছে।’

তবে এরপরও আকরাম খান শেষ কথা বলেননি। তিনি বলটা ঠেলে দিয়েছেন প্রধানর কোচ ডোমিঙ্গোর কোর্টে। তার ভাষায়, সেটা হেড কোচ রাসেল ডোমিঙ্গোর ওপর নির্ভর করছে। তাই তো কন্ঠে এমন কথা, ‘এটা কোচের উপর নির্ভর করবে। কোচের প্ল্যানই আমরা অনুসরণ করছি। কোচ যেটা বলবে সেটা। কোচের সাথে আলাপ করে সিদ্ধান্ত নিবো।’

বিসিবি পরিচালক ও ক্রিকেট অপারেশন্স কমিটি চেয়ারম্যান আরও একট কথা বলেছেন। তাহলো, হেড কোচ বলে গেছেন, জাতীয় দলের যেসব ক্রিকেটার টেস্ট এবং টি-টোয়েন্টি দলের অটোমেটিক চয়েজ, তারা যেন প্রথম দুই রাউন্ড (জাতীয় লিগের) খেলে।

ওই প্রেসক্রিপশন মানলে সাকিবের অন্তত এক রাউন্ড খেলার কথা; কিন্তু ক্রিকেটারটির নাম সাকিব। তাই ভিন্ন চিন্তার উদ্ভব ঘটছে। কারণ, ইতিহাস ও পরিসংখ্যান জানাচ্ছে সাকিবের ঘরোয়া ক্রিকেট খেলার চেয়ে বিশ্রামটাই বড়। সাকিব ঘরোয়া ক্রিকেটে প্রায় অনিয়মিত। এবার না খেললে টানা চার জাতীয় লিগ খেলার বাইরে থাকবেন। শুধু তাই নয়, দেশের প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটের ফ্রাঞ্চাইজি আসর ‘বিসিএলে’ একবারও খেলেননি তিনি।

তাতে কি! মাঠে সাকিবই সবার চেয়ে উজ্জ্বল। টেস্টে বল হাতে সাকিবই সবচেয়ে উজ্জ্বল। ব্যাট হাতেও রান করে যাচ্ছেন নিয়মিত। তাই জাতীয় লিগ না খেলেই যদি ভারত যান, সেটাও অস্বাভাবিক হবে না। অতীতেও সাকিব এভাবে ঘরোয়া আসর না খেলে এবং সবার চেয়ে কম প্র্যাকটিস করেও মাঠের সেরা পারফরমার হিসেবে নিজেকে মেলে ধরেছেন।

কে জানে এবার ভারতের বিপক্ষে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজের সেরা পারফরমার হতেও পারেন সাকিব!

(ওএস/অ/অক্টোবর ১২, ২০১৯)