আন্তর্জাতিক ডেস্ক : জাপানে কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী টাইফুন আঘাত হেনেছে। স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৭টার কিছু আগে রাজধানী টোকিওর দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলীয় ইজু দ্বীপে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে ভূমিধ্বস আঘাত হেনেছে। ইতোমধ্যেই টাইফুনের প্রভাবে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ভারি বৃষ্টিপাত ও আকস্মিক বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। ঝড়ের প্রভাবে স্থবির হয়ে পড়েছে রাজধানী টোকিও।

শক্তিশালী টাইফুনের প্রভাবে এখন পর্যন্ত নয়জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। কয়েক লাখ মানুষকে নিরাপদে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। জাপান টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চিবা, গানমা, ফুকুসিমা, টোচিগি এবং কানাগাওয়া এলাকায় কমপক্ষে নয়জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া আরও ১৫ জন নিখোঁজ রয়েছে।

গত ৬০ বছরের ইতিহাসে এটাই সবচেয়ে শক্তিশালী টাইফুন। এখন এই ঝড়টি জাপানের মূল ভূখন্ডের পূর্বাঞ্চলীয় উপকূলের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে ঘণ্টায় ২২৫ কিলোমিটার বেগে প্রচণ্ড ঝড়ো বাতাস বয়ে যাচ্ছে। জাপানের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম এনএইচকের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, শক্তিশালী টাইফুনের প্রভাবে দুই লাখ ৭০ হাজারের বেশি বাড়ি-ঘর বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় রয়েছে।

ঘূর্ণিঝড় আছড়ে পড়ার আগেই সরকার এক সতর্কবার্তা জারি করে বলেছে, ১৯৫৮ সালের পর সর্বোচ্চ শক্তিশালী সুপার টাইফুন জাপানে আঘাত হানতে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে দেশটিতে নজিরবিহীন বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে; যে কারণে কর্তৃপক্ষ বর্ষণ দূর্যোগের সর্বোচ্চ সতর্ক সঙ্কেত জারি করেছে। কয়েক ঘণ্টার ভারী বর্ষণের কারণে ভূমিধস ও ভয়াবহ বন্যার শঙ্কায় ইতোমধ্যে ৬০ লাখ মানুষকে সরিয়ে নেয়ার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

এই ঝড়ের প্রভাবে গত ২৪ ঘণ্টায় টোকিওতে ইতিহাসের সর্বোচ্চ ৭০০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। প্রলয়ঙ্করী এই ঝড়ের কারণে দেশটিতে চলমান রাগবি ওয়ার্ল্ড কাপের দুটি ম্যাচ স্থগিত করতে বাধ্য হয়েছে কর্তৃপক্ষ। এমনকি রাজধানী টোকিও থেকে বিমানের সব ধরনের চলাচল স্থগিত রাখা হয়েছে।

ভূমিধ্বসের কারণে বাড়ি ধসে পড়ার ঘটনায় দু'জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া টোকিওর কাছাকাছি সাগামিহারার কাছে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। টোকিওর দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় কাওয়াসাকি এলাকায় ৬০ বছর বয়সী এক বৃদ্ধকে তার অ্যাপার্টমেন্টে মৃত অবস্থায় পাওয়া গেছে এবং টোচিগি এলাকায় এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। অপরদিকে চিবা এলাকায় ঝড়ের সময় গাড়ি উল্টে ৫০ বছর বয়সী এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে।

কিয়োদোর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এখন পর্যন্ত ১১ জন নিখোঁজ রয়েছে। এছাড়া আরও ৯০ জন আহত হয়েছেন। এদিকে এই শক্তিশালী টাইফুন আছড়ে পড়ার আগেই জাপানের পূর্ব উপকূলের হনশু দ্বীপে ৫ দশমিক ৭ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে।

(ওএস/অ/অক্টোবর ১৩, ২০১৯)