কাজী রহমান



পুরোনো রেল লাইনের পাশের ডোবাগুলোতে
মানুষের ফুলে ওঠা শব। লাফাত দাঁড়কাক।
মহানন্দে কর্কশ শব্দ করে
ছ্যাঁদা করত সেইসব।

তারপর,
ফুটো হয়ে গেলে,
অনায়াসে কুৎসিত কামড়ে
নাড়ি ধরে চাইত উড়ে যেতে।

উড়তে গিয়ে পড়ত লাশে,
মৃতদেহের প্রতিবাদে।

সত্যি বলছি, আমি দেখেছি,
আমার দুরন্ত কিশোর চোখে আমি দেখেছি
মরা মানুষের প্রতিবাদ, কর্কশ চকচকে দাঁড়কাক,
বারবার আছাড় খেয়েছিল, চোখ বাঁধা লাশেদের গায়ে,
গুলি কিংবা মার খাওয়া লাশ, দয়াগঞ্জের রেললাইনের পাশের ডোবায়।

দাঁড়কাক একা অথবা দলবদ্ধ হয়েও,
মৃতদেহের কাছে পরাজিত হয়েছিল সেদিন।

দয়াগঞ্জের রেললাইনের পাশে
দড়ির খাটিয়ায় বসে চোলাই মদ খেত মেথর,
ময়লা কাদা মাখতো, কতগুলো কালো শুয়োর,
মৃতসঞ্জীবনী সুধায় মেথরগুলো যখন মাতাল হতো,
সুখ পেত মনে, পুড়িয়ে খেতে চাইতো পোষা শুয়োর,
আমি দেখেছি, সেই দুর্গন্ধময় শুয়োরগুলোও প্রতিবাদী হত,
পালিয়ে যেত , গুঁতো মারতো, বিকট চিৎকারে প্রতিবাদ করত।

প্রবাহের জীবন্ত মানুষগুলো অন্তত প্রতিবাদী হোক।
চোখ বাঁধা, গুলি কিংবা মার খাওয়া লাশেদের কথা মনে করে,
বিব্রত হোক। লজ্জা পাক স্থবির মরা মানুষদের কাছে নির্লিপ্ত পরাজয় এড়াতে।