রূপক মুখার্জি, নড়াইল : নড়াইলের লোহাগড়ায় তুচ্ছ ঘটনায় শিশু রমজানকে খুন করেছে তারই  খালাতো বোন। অভিযুক্ত খালাতো বোন মীম আক্তার (১৩) সপ্তম শ্রেণিতে পড়ে। শিশু শ্রেণিতে পড়ত রমজান (৭)। লোহাগড়া পৌর এলাকার সিঙ্গা গ্রামে নানাবাড়িতে তারা বসবাস করত। মীমকে ‘ডিম’ বলে প্রায়ই ক্ষ্যাপাতো রমজান। গত বুধবার (১৬ অক্টোবর) দুপুরে ক্ষ্যাপাতে থাকলে রমজানকে মীম মারপিট করে। এ সময় রমজান বাড়ির উঠানে পড়ে গেলে মীম তার গলা চেপে ধরে। এতে শ্বাসরোধ হয়ে রমজানের মৃত্যু হয়। এরপর রমজানের মামি পুতুল বেগম তার লাশ কোলে করে নিয়ে পাশের ডোবায় ফেলে আসে।

হত্যাকান্ডের ঘটনায় গত শুক্রবার (১৯অক্টোবর) সন্ধ্যায় নড়াইলের আমলি আদালতের বিচারক আমাতুল মোর্শেদার কাছে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে মীম। গত বুধবার বিকেলে সিঙ্গা গ্রামের একটি বাগানের পাশে ডোবায় শিশুটির লাশ পাওয়া যায়। খুনের ঘটনায় শিশুটির নানা হাবিবুর রহমান গত শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের নামে থানায় মামলা করেন। পুলিশ এর আগে শিশুটির বাবা, মামা, খালা ও খালুকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে প্রেরন করে।

পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন জানান, শিশুটির মা মাবিয়া আক্তারের সঙ্গে পিতা ইলিয়াস শেখের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। সম্পর্কের এক পর্যায়ে মাবিয়া অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। এ অবস্থায় সামাজিক চাপে ইলিয়াস মাবিয়াকে বিয়ে করে। জন্মের পর শিশু রমজানকে নিয়ে বাবার বাড়িতেই ছিলেন মাবিয়া। তিন বছর আগে মাবিয়া হৃদরোগে মারা যান। এরপর নানাবাড়িতে চরম অযত্ন, অবহেলা আর মারধরের শিকার হয়ে বড় হচ্ছিল রমজান।

এ হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা লোহাগড়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মিলটন কুমার দেবদাস বলেন, ‘প্রথম থেকেই স্বজনদের দিকে সন্দেহের তীর ছিল। সে ভাবে জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে মীম আক্তার হত্যাকান্ডের বর্ণনা দেয়। পরে শনিবার সন্ধ্যায় আটক মীম ১৬৪ ধারায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়।’

(আরএম/এসপি/অক্টোবর ২০, ২০১৯)