অমল তালুকদার, বরগুনা : বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে বরগুনার পাথরঘাটায় মাসের পর মাস জাকিয়া পূর্ণিমা (১৪) নামে স্কুল ছাত্রীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক গড়েন একই এলাকার আরেক কলেজ পড়ুয়া রাজু আহমেদ (২০)। একসময় অন্তঃসত্ত্বা হয় ঐ স্কুল ছাত্রীটি। শুরু হয় সম্পর্কের ভাঙন। ধর্ষক চলে যায় নিজ ক্যাম্পাস বরিশাল অমৃত লাল দে কলেজে। ওই স্কুল শিক্ষার্থীর শারীরিক পরিবর্তন হলে পরিবারের চাপে অন্তসত্তার খবর তার বোন রেশমাকে জানায় ।

অভিযুক্ত ছাত্রের নাম রাজু আহমেদ (২০)। তিনি বরিশাল অমৃত লাল দে কলেজে থেকে সদ্য এইচএসসি পাস করেছে এবং বরগুনা জেলার পাথরঘাটা উপজেলার কাঠালতলী ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের আব্দুল জলিলের ছেলে। ভুক্তভোগী জাকিয়া পুর্নিমা কাঠালতলী স্কুল এন্ড কলেজের নবম শ্রেণীর ছাত্রী ও একই গ্রামের দিনমজুর জাকির হোসেনের মেয়ে।

ধর্ষিতা গতকাল রবিবার রাত আটটার দিকে পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে একটি পুত্র সন্তান প্রসব করে।

এর আগে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ফাতিমা পারভীনকে বিষয়টি অবহিত করলে তিনি ভুক্তভোগী ছাত্রীকে নিয়ে পাথরঘাটা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের ভিত্তিতে পাথরঘাটা থানা পুলিশ অভিযুক্ত রাজুর বাবা আব্দুল জলিল কে আটক করে কারাগারে প্রেরণ করলেও রাজুকে আটক করতে পারেনি।

ধর্ষণের শিকার স্কুলছাত্রীর সন্তান প্রসবের খবর পেয়ে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সুব্রত মল্লিক, এডিশনাল এসপি আশরাফ উল্লাহ তাহের ও পাথরঘাটা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মোহাম্মদ শাহাবুদ্দিন নবজাতকের জন্য নতুন পোশাক নিয়ে হাসপাতালে গিয়ে মা ও সন্তানের খোঁজ খবর নেন। এ সময়ে তারা শিশু পুত্রকে সংগ্রাম নামে নামকরণ করেন।

এসময়ে এডিশনাল এসপি আশরাফ উল্লাহ তাহের বলেন, নিষ্পাপ শিশুটি যাতে তার পিতৃত্ব পরিচয় পায় সে লক্ষ্যে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। প্রয়োজনে ডিএনএ টেস্টে করে দেখা হবে বলেও জানান তিনি।

ভুক্তভোগী ছাত্রী সাংবাদিকদের জানান, স্কুলে আসা যাওয়ার পথে রাজু আমাকে প্রেমের প্রস্তাব দিতো। এক পর্যায়ে আমাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। পরে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে একাধিকবার শারীরিক সম্পর্কে দৈহিক মেলামেশা করে রাজু।

স্কুল ছাত্রীর বড় বোন রেশমা জানান, তার বোনের শারীরিক পরিবর্তন দেখে সন্দেহ হলে জানতে পারি সে ৬ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। তখন তার কাছ থেকে জানতে পারি একই গ্রামের রাজুর সাথে ওর শারীরিক সম্পর্কের কথাও। এর পর রাজুকে ফোন দিলে সে শারীরিক সম্পর্কের কথা স্বীকার করে বলে ভুলে হয়ে গেছে আপা, বাচ্চা নষ্ট করে দেন সব খরচ আমি দিবো।

রেশমা আরো জানান, এ নিয়ে প্রথমে এলাকার মেম্বার চেয়ারম্যানের কাছে অভিযোগ দিলে অভিযুক্তরা প্রভাবশালী হওয়ায় বাচ্চা নষ্ট করে দিয়ে দেড় লক্ষ টাকা জরিমানা দেওয়ার আশ্বাস দেন। এতে আমরা রাজি না হয়ে উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ফাতিমা পারভীনের কাছে জানালে তিনি আমাদের আইনি সহায়তা পেতে থানায় নিয়ে যান।

ভাইস চেয়ারম্যান ফাতিমা পারভীন জানান,আমার কাছে সালিশ-মিমাংসার জন্য আসছিলো কিন্তু বিষয়টি ধর্ষণের তাই মামলা করতে সহায়তা করেছি।

(এটি/এসপি/অক্টোবর ২১, ২০১৯)