গলাচিপা (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি : পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালীতে মাছের ব্যবসায়ী বিরোধের জেরে কেরিং ট্রলারে পেট্রোল ও কেরোসিন ঢেলে আগুন দিয়ে পড়ে দিয়েছে প্রতিপক্ষরা। ঘটনাটি ঘটেছে ১৪ অক্টোবর সোমবার গভীর রাতে উপজেলার চরআন্ডা গ্রামে সাগরপাড় বাজার সংলগ্ন এলাকায়।

কেরিং ট্ররারের মালিক হলেন চরআন্ডা গ্রামের মো. শাহজাহান প্যাদার দুই ছেলে মো. মজিবর প্যাদা (৩৪) ও মো. এমাদুল প্যাদা (২৮) এবং একই গ্রামের মৃত আতাহার সিকদারের ছেলে মো. ইউসুফ সিকদার (৪০)। তারা তিনজনে একসঙ্গে ব্যবসা করেন।

এ ঘটনায় কেরিং ট্রলারের মালিক এমাদুল প্যাদা (২৮) বাদি হয়ে সোমবার গলাচিপা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১২ জনকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেন।

আসামীরা হলো - একই গ্রামের মৃত অহেদ হাওলাদারের ছেলে জামাল হাওলাদার (৩৫), পুলিশ হত্যা মামলার আসামী কামাল হাওলাদার (৩৭), জয়নাল হাওলাদারের ছেলে ফিরোজ হাওলাদার (৩২), মৃত তৌছির হাওলাদারের ছেলে শাহজাহান হাওলাদার (৪২), মৃত রাজ্জাক হাওলাদারের ছেলে তুহিন হাওলাদার (৩৫), মৃত মকবুল মীরের ছেলে ঈমানী মীর (৩৮), মকবুল হাওলাদারের ছেলে সেলিম হাওলাদার (৪০), মো. ঈদ্রিস খাঁ’র ছেলে কাওছার খাঁ (৩৬), মৃত কাঞ্চন খাঁ’র ছেলে আলমাছ খাঁ (৩৭), মৃত মকবুল মীরের ছেলে হাসান মীর (৪২), সোহাগ মীর (২৪) ও মৃত ছত্তার খান এর ছেলে ঈদ্রিস খান (৬০)।

মামলার বিবরণীতে উল্লেখ করা হয়েছে, মজিবর প্যাদা ও তার আপন ছোট ভাই এমাদুল প্যাদা এবং তাদের ব্যবসায়ী পার্টনার ইউসুফ সিকদার কেরিং ট্রলারটি মেরামতের জন্য চরআন্ডা সাগরপাড় বাজার সংলগ্ন এলাকায় নদী থেকে স্থলভাগে উঠিয়ে রাখেন। এ সুযোগে উপরোল্লেখিত আসামীগণ একজোট হয়ে মাছের ব্যবসায়ী বিরোধের জেরে ১৪ অক্টোবর সোমবার গভীর রাতে কেরিং ট্রলারে পেট্রোল ও কেরোসিন ঢেলে আগুন জ্বালিয়ে দিলে কেরিং ট্রলারটির অধিকাংশ পুড়ে যায়। পরে আসামীরা পালিয়ে যায়। তখন বাজারের লোকজন আগুনের লেলিহান শিখা ও সোলার বাতির আলোতে আসামীদেরকে দেখে চিনতে পারেন। এসময় বাজারের কয়েকজন লোক ঘটনাস্থল থেকে এক কিলোমিটার দূরে অবস্থিত ট্রলার মালিকদের বাড়িতে গিয়ে খবর দিলে মজিবর প্যাদা ও এমাদুল প্যাদা দৌড়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। কিন্তু ততক্ষণে কেরিং ট্রলারটির অধিকাংশই পুড়ে যায়। পরে স্থানীয় লোকজন পানি দিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এতে ওই ট্রলার মালিকদের সাড়ে ৫ লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়।

ঘটনার পরের দিন ১৫ অক্টোবর মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৮ টার দিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন স্থানীয় এমপি’র রাঙ্গাবালী উপজেলা প্রতিনিধি ও রাঙ্গাবালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. আবুল হোসেন মাস্টার, ছোটবাইশদিয়া ইউপি সদস্য মো. হানিফ, স্থানীয় এমপি’র চরমোন্তাজ ইউনিয়ন প্রতিনিধি আলী আক্কাস ফরাজী ও মো. মনির প্যাদা, চরমোন্তাজ ইউপি চেয়ারম্যান মো. হানিফ মিয়ার ছেলে মো. রিপন মৃধা ও সাবেক চরমোন্তাজ ইউপি সদস্য মো. হানিফ খাঁ। গণ্যমান্য ব্যাক্তিবর্গরা ওইদিন বিকাল ৪টা পর্যন্ত ভুক্তভোগী ট্রলার মালিকদের সঙ্গে থেকে তাদেরকে সান্তনা দিয়ে চলে যান।

আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে রাঙ্গাবালী থানার ওসি-কে তদন্ত করে প্রতিবেদন দেয়ার নির্দেশ দিয়েছে।

(এসডি/এসপি/অক্টোবর ২১, ২০১৯)