স্টাফ রিপোর্টার, দিনাজপুর : উটপাখি গবেষণা খামার করে ব্যাপক সাফল্য পেয়েছে দিনাজপুর হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তপক্ষ।  ভেটেরিনারি অ্যান্ড এনিমেল সায়েন্স অনুষদে বিকল্প প্রাণিজ আমিষের উৎস হিসেবে পালন হচ্ছে এই উটপাখি।দুর্লভ এই উটপাখি’র বংশ বিস্তারেও কাজ করছেন তারা। এই উট পাখির খামার অনুপ্রাণিত হয়েছে অনেকেই। বিকল্প প্রাণিজ আমিষের উৎস এই উটপাখি’র খামার গড়তে অনেকে হয়ে উঠেছে আগ্রহী।

বিকল্প প্রাণিজ আমিষের উৎস নিয়ে প্রথম পর্যায়ে খরগোশ নিয়ে গবেষণার কাজ শুরু করে দিনাজপুর হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তপক্ষ। পরে বাংলাদেশের আবহাওয়ায় খরগোশের উৎপাদনসহ অনান্য বিষয়ে ভাল ফলাফল পাওয়ার পর শুরু হয় উটপাখি নিয়ে গবেষণা।

উড়তে না পারা এই পাখির খামার বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার জনপ্রিয় ও দর্শনীয় স্থানে পরিণত হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রী ছাড়াও বাইরে থেকে অনেক দর্শনার্থী আসছেন উটপাখি দেখতে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি অনুষদের অভিটোরিয়াম-২ এর পাশে গড়ে তোলা হয়েছে এই খামার।ভেটেরিনারি অ্যান্ড এনিমেল সায়েন্স অনুষদের জেনেটিক্স অ্যান্ড এনিমেল ব্রিডিং বিভাগের তত্ত্বাবধানে উটপাখির গবেষণা করছেন বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী। আর তাদের তত্ত্বাবধানে রয়েছেন দু’জন শিক্ষক।

দিনাজপুর হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনেটিক্স এন্ড এনিম্যাল ব্রিডিং বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড.এম.এ. গাফফার জানান, দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে প্রায় পৌনে দু’বছর বছর আগে ৭টি এবং ৯ মাস আগে ১৫টি আনা হয় ৭ দিন বয়সের উটপাখির বাচ্চা। বর্তমানে আছে ১৭টি। তাদের গড় ওজন প্রায় ৮৫ থেকে ১২০ কেজি। ইতোমধ্যে দু’টো ডিমও দিয়েছে উট পাখি।উটপাখি সাধারণত ২-৪ বছর বয়সে প্রজননক্ষম হয়।

উটপাখির চামড়া মূল্যবান এবং এদের মাংস আন্তর্জাতিক বাজারে অত্যন্ত উপাদেয় খাদ্য হিসাবে বিবেচিত। একটি প্রাপ্ত বয়স্ক উটপাখির ওজন ৮৫ কেজি থেকে ১৫০ কেজি পর্যন্ত হয়ে থাকে। এছাড়া অন্যান্য প্রাণীর মাংসের তুলনায় উটপাখির মাংসে চর্বিও পরিমাণ ৩ শতাংশের কম ও অসম্পৃক্ত ফ্যাটি এসিডের পরিমাণ বেশি থাকায় স্বাস্থ্য সচেতন লোকজন উটপাখির মাংস গ্রহণে আগ্রহী।

এই উটপাখি প্রসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফ্যাকাল্টি অব ভেটেরিনারি এ্যান্ড এনিমেল সায়েন্স বিভাগের ডীন প্রফেসর ড.এস.এম. হারুর উর-রশীদ বলেন, বাংলাদেশের আবহাওয়ায় তাদের বৃদ্ধি ঠিকই আছে। বাণিজ্যিকভাবে উটপাখির খামার আমাদের দেশে লাভজনক হবে। ‘পাখির প্রজননের সঙ্গে খাদ্যের সম্পূরক বিষয়টা নিয়েও গবেষণা চলছে। এখানে গবেষণায় প্রাপ্ত ফলাফলে সারাদেশ উঠপাখির খামার হবে ।

উট পাখিরখামার করে ব্যাপক সাফল্য পেয়েছেন দিনাজপুর হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তাদের সাফল্য এখন অনেকের অনৃপ্রেরণা। এই উটপাখি’র মাংসের সুষ্ঠু বাজার ব্যবস্থাপনা হলে এই উটপাখি খামারের প্রতিযোগিতাও বাড়বে এমনটাই মন্তব্য করেছেন সংশ্লিষ্টরা।

(এএস/এসপি/অক্টোবর ২৩, ২০১৯)