উত্তরাধিকার ৭১ নিউজ ডেস্ক : মানিকগঞ্জের হরিরামপুরের ঝিটকা আনন্দ মোহন উচ্চ বিদ্যালয়ের আড়াইশত মূল্যবান গাছ কাটার সিদ্ধান্ত বাতিল ও তিন কোটি টাকা আত্মসাতসহ বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তের দাবি উঠেছে। 

শুক্রবার সকাল ১০টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন করে নানা অভিযোগের তদন্তপূর্বক বিচার দাবি করেছেন ঝিটকা আনন্দ মোহন উচ্চ বিদ্যালয় প্রাক্তন ছাত্র পরিষদের নেতারা।

মানববন্ধনে অংশ নিয়ে বক্তব্য দেন সংগঠনের উপদেষ্টা সোনালী ব্যাংকের সাবেক ডিজিএম আবদুল গফুর ভূইয়া, সভাপতি সাবেক পুলিশ সুপার ফরিদ উদ্দিন আহম্মদ, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট হুমায়ুন কবির, নিওরোসার্জন ডা. আমির মো. খাঁন, সংগঠনের সাংগঠনিক সম্পাদক মোশাররফ হোসেন, কোষাধ্যক্ষ আহমেদ ফরিদ প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, বর্তমান ম্যানেজিং কমিটির মেয়াদ রয়েছে আর মাত্র ০২ (দুই) মাস। এই সময়ের মধ্যে শতশত পুরনো গাছ কেটে টাকা আত্মসাতের পাঁয়তারা করছে। ম্যানেজিং কমিটির বর্তমান সভাপতি মো. সেলিম মোল্লা অস্ত্র ও দুর্নীতির মামলায় এবং ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. সোহরাব উদ্দিন প্রতারণার মামলায় ইতিপূর্বে কারাভোগ করেন। সেলিম মোল্লার বিরুদ্ধে অস্ত্র ও দুর্নীতির মামলা রয়েছে। বিদ্যালয়ের গত দশ বছরের আয়-ব্যয়ের হিসাব প্রকাশসহ অবিলম্বে গাছ কাটার সিদ্ধান্ত বাতিল করার দাবি জানান তারা।

অন্যান্য দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে, ম্যানেজিং কমিটি কর্তৃক ভরাটকৃত সরকারি খাল পুনঃখনন করে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনা, স্কুলের নিজস্ব জায়গা হস্তান্তর করে অবৈধ মার্কেট নির্মাণ বন্ধ করা, প্রধান শিক্ষক ও সহকারী প্রধান শিক্ষক নিয়োগ প্রদানসহ ম্যানেজিং কমিটির কতিপয় সদস্যদের সীমাহীন দুর্নীতির অভিযোগ তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া।

বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটিকে দুর্নীতির আখড়া উল্লেখ করে বক্তারা বলেন, ১৯২৬ সনে স্থাপিত ঐতিহ্যবাহী ঝিটকা আনন্দ মোহন উচ্চ বিদ্যালয়টি বিগত সময়ে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় অভূতপূর্ব অবদান রাখতে সক্ষম হলেও বর্তমান দুর্নীতিগ্রস্ত ম্যানেজিং কমিটির দুর্নীতি ও লুটপাটের কারণে অত্র প্রতিষ্ঠানটি তার ঐতিহ্য হারাতে বসেছে। বর্তমান ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির কতিপয় সদস্য বিদ্যালয়ের বিভিন্ন খাতের অর্থ নিজেদের মধ্যে ভাগ বাটোয়ারা করে আত্মসাৎ করেছে। বর্তমান ম্যানেজিং কমিটি বর্তমানে শিক্ষার মান উন্নয়নের চেয়ে নিজেদের আর্থিক লাভবানের প্রতি অধিক যত্মবান ও ব্যতিব্যস্ত।

বিদ্যালয়ের বর্তমান পরিচালনা পরিষদ ৫-৬ একর ভূমিতে মাটি ভরাট করে বিদ্যালয়ের নিজস্ব জায়গা হস্তান্তর করে নিজেদের এবং স্বজনদের মধ্যে পজিশন বিক্রয় করে প্রায় ৩ (তিন) কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে। উক্ত জায়গার ওপর প্রায় আড়াইশত ইউক্যালিপটাস, আকাশমনি ও মেহগনির অপরিপক্ক গাছ ছিল, যেগুলো বিনা রেজুলেশনে বিক্রি করে টাকা আত্মসাৎ করেছে। বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ও সভাপতির যোগসাজসে ৩০ লক্ষ টাকা বিদ্যালয়ের ফান্ড থেকে উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেছে।

বর্তমান ম্যানেজিং কমিটি বিদ্যালয়ের পূর্ব দিকে ইছামতি নদীর সঙ্গে সংযোগকৃত সরকারি খালটি বেআইনিভাবে ভরাট করে ফেলেছে। উক্ত খালটি ভরাট করার ফলে তিনটি থানার অনেক গ্রামে পানি প্রবেশ করতে পারছে না। উক্ত গ্রামগুলোর কৃষি কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে এবং নৌ চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। বর্তমান ম্যানেজিং কমিটি স্কুলের মূল্যবান শত শত মেহগনি গাছ কেটে ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এসব গাছ হলে এলাকার পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হবে।

(পিআর/এসপি/অক্টোবর ২৫, ২০১৯)