স্টাফ রিপোর্টার : বিচারাধীন বিষয়ে বক্তব্য দেওয়া এবং বক্তব্য প্রকাশ করায় দৈনিক সংগ্রাম পত্রিকার সম্পাদক, সংগ্রামের রংপুর প্রতিনিধি, সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ইকরামুল হক দুলু ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা অ্যাডভোকেট আজিজুর রহমান সরকার রাঙ্গার বিরুদ্ধে রুল জারি করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১।

আগামী ২০ আগস্ট আদালতে হাজির হয়ে কেন তাদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হবে না তার জবাব দিতে বলা হয়েছে।

রবিবার জামায়াত নেতা এটিএম আজহারের মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ চলাকালে চেয়ারম্যান বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এ আদেশ দেন।

গত বছরের ২৭ ডিসেম্বর দৈনিক সংগ্রামে ‘একাত্তর সালে আজহার নামে কোনো রাজাকার কমান্ডারের নাম শুনিনি’ এবং ১৯৬৯ সাল থেকে ১৯৭৪ সাল পর্যন্ত রংপুর কারমাইকেল কলেজে আজহার নামে কোনো ছাত্রনেতা ছিলেন না’ শিরোনামে সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ইকরামুল হক দুলু এবং সাবেক ছাত্রলীগ নেতা আজিজুর রহমান সরকার রাঙ্গার উদ্ধৃতি দিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।

ওই প্রতিবেদনটি আসামিপক্ষ আজহারের পক্ষে ডকুমেন্ট হিসেবে উপস্থাপন করতে গেলে ট্রাইব্যুনাল স্বপ্রণোদিত হয়ে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে রুল জারি করেন।

ট্রাইব্যুনাল বলেন, বিচার চলাকালে মামলা সম্পর্কে কোনো ধরনের মন্তব্য করা যায় না। এ মামলায় প্রসিকিউশনের সাক্ষ্য শুরু হয়েছে গত বছরের ২৬ ডিসেম্বর। কিন্তু ওই প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে তার পরের দিন ২৭ ডিসেম্বর। সুতরাং এ প্রতিবেদন আদালত প্রদশর্নী হিসেবে গ্রহণ করতে পারেন না। বরং বিচার চলাকালে এ মামলা সম্পর্কে কেন তারা বক্তব্য দিয়েছেন- তার জন্য আমরা রুল জারি করছি।

রবিবার মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলামের পক্ষে একমাত্র সাফাই সাক্ষী আনোয়ারুল হকের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়। পরে তাকে জেরা শুরু করেছেন প্রসিকিউশন। জেরা অসমাপ্ত অবস্থায় সোমবার পর্যন্ত মুলতবি করেছেন ট্রাইব্যুনাল।

সাক্ষী আনোয়ারুল হক তার সাফাই সাক্ষ্যে আজহারের শিক্ষাগত যোগ্যতার সার্টিফিকেট উপস্থাপন করেন।


এটিএম আজহারের বিরুদ্ধে গত বছরের ২৬ ডিসেম্বর থেকে রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষীদের সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। এর আগে তার বিরুদ্ধে গত বছর ১২ নভেম্বর ৬টি অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযোগ গঠন করা হয়। তার বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধকালে সংঘটিত ৯ ধরনের মানবতাবিরোধী অপরাধে ৬টি সুনির্দিষ্ট অভিযোগ আনা হয়েছে, যার মধ্যে সুপিরিয়র রেসপনসিবিলিটির (উর্ধ্বতন নেতৃত্বের দায়) রয়েছে।

মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে এ মামলায় ট্রাইব্যুনালের আদেশে রাজধানীর মগবাজারস্থ নিজ বাসা থেকে ২০১২ সালের ২২ আগস্ট আজহারকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর থেকে তিনি কারাগারে রয়েছেন।

(ওএস/এটিআর/আগস্ট ০৩, ২০১৪)