ধামরাই (ঢাকা) প্রতিনিধি : ঢাকার ধামরাইয়ে শিশু ধর্ষণের অভিযোগের আড়াই মাস পরে থানায় মামলার ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সহযোগী অভিযুক্তের স্ত্রীকে উজালাকে গ্রেফতার করেছে করেছে পুলিশ। শিশুটিকে শারীরিক পরিক্ষার জন্য সোহরাওয়ার্দী হাসপতালে পেরণ করা হচ্ছে। ধর্ষকের স্ত্রী উজালা বেগমকে রিমান্ড প্রার্থনা করে আদালতে প্রেরন করা হয়েছে। 

এ ঘটনায় ধর্ষিতা শিশুর বাবা কে আটকে রেখে স্থানীয় একটি বখাটে চক্র সাদা স্ট্যাম্পে জোর পূর্বক সাক্ষর আদায়ের অভিযোগ ইউপি সদস্যসহ গ্রামের মাতাব্বরদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। শিশুটি এখন দুই মাসের অন্তঃসত্তা বলে জানাগেছে।

শুক্রবার রাতে ধর্ষক ও চার সন্তানের জনক মোঃ মোকছেদ আলীর স্ত্রী উজালা বেগমকে আটক করেছে পুলিশ।শনিবার সকাল এগারটায় ধামরাই থানা থেকে আদালতে প্রেরন করেছে পুলিশ। ধর্ষক পলাতক রয়েছে। শুক্রবার রাতে ধর্ষিতার বাবা বাদী হয়ে ধামরাই থানায় ধর্ষক,ধর্ষকের স্ত্রী সহ সাত জনকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেছে। উপজেলার মুন্সিরচর গ্রামে ধর্ষক মোঃ মোকছেদ আলীর বাড়িতে স্ত্রী উজালা বেগমের সহযোগিতায় গত আড়াই মাস ধরে এ ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে,ধর্ষিতা শিশুটি উপজেলার নিকলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী। তার বাবা দিনমজুর ও মা বাড়ি বাড়ি ঝিয়ের কাজ করেন। প্রতিদিনের ন্যায় ভুক্তভোগী শিশুটিকে বাড়িতে রেখে তারা কর্মস্থলে চলে যান।শিশুটি পাশের বাড়ির মোকছেদ আলীর (৫৫) বাড়িতে প্রায়ই টেলিভিশন দেখতে যেত। মোকছেদ আলী কৌশলে আড়াই মাস আগে ওই শিশুকে টিভি দেখার সুযোগ দিয়ে ও ভয়ভীতি দেখিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। এ ঘটনার কথা কাউকে জানালে শিশুকে মেরে ফেলার ভয় দেখায় ধর্ষক মোকছেদ আলী। ভয়ে শিশুটি একথা কাউকে না বলে চুপ থাকে। ধর্ষক সুযোগ বুঝে প্রাই এমন কাজ করতে থাকে। এই শিশুটি দুই মাসের অন্তঃসত্তা হয়ে পড়ে।শিশুটির শরীরে অস্বাভাবিক কতা দেখা দেয়। সে মাঝে মাঝে অসুস্থ হয়ে পড়ে।

এক পর্যায়ে শিশুটি তার মা-বাবাকে এঘটনাটি জানায়।চিন্তিত হয়ে পড়ে শিশুর মা বাবা। শিশুটির মা-বাবা একটি ক্লিনিকে তার শারীরিক পরীক্ষা করায় এতে মেয়েটি দুই মাসের অন্তঃসত্ত্বা হয়েছে বলে জানা যায়। চিন্তিত হয়ে পড়ে মা বাবা।

এঘটনা ফাস হয়ে পড়লে শিশুর পরিবারের সঙ্গে চার সন্তানের জনক ধষর্ক মোকছেদ আলী ও তার সহযোগিরা এঘটনা ধামা-চাপা দিতে আপোষের চেষ্টা চালায় । ধর্ষক আপোষে ব্যার্থ হয়ে প্রথমে স্থানীয় কথিত মাতাব্বদের দ্বারা ও পরে একটি বখাটে চক্র মেয়েটির বাবাকে ধামরাইয়ে আমতা ইউনিয়নের নান্দেশ্বরী গ্রামের বাস চালক চানমিয়ার বাড়িতে দুই দিন আটক রেখে প্রহসনের বিচারের নামে মেয়েটির বাবার কাছ থেকে ভয়ভীতি দেখিয়ে সাদা ষ্ট্যাম্পে (আপোষ নামা) স্বাক্ষর নেয়।

এতে মোটা অংকের টাকা লেনদেন হয় বলেও অভিযোগ উঠেছে।সে টাকা ধর্ষিতার বাবা হাতে যায়নি।অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় নামধারী কয়েক জনে মিলে ওই টাকা ভাগবাটোয়ারা করে নিয়েছে।

গতকাল শুক্রবার রাতে ধর্ষিতা ও দুই মাসের অন্তঃসত্তা শিশুর পিতা অভিযুক্ত মোকচ্ছেদ আলী ও স্থানীয় কথিত বিচারকসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে ধামরাই থানায় একটি মামলা(মামলা নং-৩৯)দায়ের করেন।রাতে ঘটনা সহযোগিতা ও ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টার অভিযোগে অভিযুক্ত মোকছেদের স্ত্রী উজালা বেগমকে আটক করেছে পুলিশ।

এ বিষয়ে ধামরাই থানার অফিসার ইনচার্জ দীপক চন্দ্র সাহা বলেন,ধর্ষণের ঘটনা সামাজিকভাবে আপোষযোগ্য নয়। যারা আপোষের চেষ্টা করেছে ধর্ষকসহ তাদের বিরুদ্ধেও আইনগত ব্যবস্থা ও মামলা দায়ের হয়েছে। শিশুটিকে শারীরিক পরিক্ষার জন্য সোহরাওয়ার্দী হাসপতালে পেরণ করা হচ্ছে। ধর্ষকের স্ত্রী উজালা বেগমকে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।

(ডিসিপি/এসপি/অক্টোবর ২৬, ২০১৯)