মাদারীপুর প্রতিনিধি : মাদারীপুর মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মাহমুদা আক্তার কণার হস্তক্ষেপে স্বামীর ঘরে ফিরলেন দুই সন্তানের মা জুলিয়া আক্তার (২২)। রবিবার রাতে নতুন করে কবিন রেজিস্ট্রারের মাধ্যমে বিয়ে দিয়ে সন্তানসহ জুলিয়াকে স্বামী বাদল হাওলাদারের (২৬) হাতে তুলে দেয়া হয়েছে।

মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর, স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, ২০১২ সালে কালকিনি উপজেলার আলীনগর ইউনিয়নের কুলচর গ্রামের দিদার সরদারের মেয়ে জুলিয়া আক্তারের সাথে মাদারীপুর সদর উপজেলার মস্তফাপুর ইউনিয়নের মৃত মাজেদ হাওলাদারের ছেলে বাদল হাওলাদারের পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়।

বিয়ের আনুষ্ঠানিক কাজ করেন মস্তফাপুরের কাজী মাওলানা মো. মান্নানের সহযোগি মো. মোস্তফা। ধর্মীয়ভাবে বিয়ে হলেও বিয়ের সময় জুলিয়ার বয়স ১৮ বছরের কম থাকায় রেজিস্ট্রার কাবিননামায় কাজী কোন স্বাক্ষর না দিয়েই বিয়ের কাজ সম্পন্ন করেন।

এদিকে জুলিয়া শশুরবাড়ি গেলে কয়েক মাস ভালো থাকলেও পরে যৌতুকের টাকাসহ নানা কারণে তার স্বামী বাদল হাওলাদার ও তার পরিবারের লোকজন মারধরসহ শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করে। পরে তার দুটি সন্তানের জন্ম হলে নির্যাতন আরো বেড়ে যায়। তার শশুরবাড়ি লোকজন জুলিয়াকে ঘরে আটকে রেখে দিনের পর দিন মারধর করে।

প্রায় দুই মাস আগে ঘরে আটকে নির্যাতনের খবর পেয়ে মাদারীপুরের মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মাহমুদা আক্তার কণা সদর থানা পুলিশের সহযোগিতায় জুলিয়াকে উদ্ধার করে।

এই নির্যাতনের কারণে জুলিয়া আদালতে মামলা করার স্বিদ্ধান্ত নেয়। এজন্য সে কাজীর কাছে কাবিননামা আনতে যায়। এসময় সে জানতে পারে তার কাবিননামায় কাজীর কোন স্বাক্ষর নেই। এরপর থেকে তার স্বামী বাদল হাওলাদার তার স্ত্রী জুলিয়াকে বলেন-মামলা করে কি করবি, বিয়ের তোর কোন প্রমাণ নেই। এ নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে আরো দ্বন্ধের সৃষ্টি হয়।

মাদারীপুর জেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মাহমুদা আক্তার কণা ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এই ঘটনায় বেশ কয়েকবার পরিবারের লোকজন নিয়ে সালিশ করেও কোন সমাধান হয়নি। পরে রবিবার রাতে জুলিয়া ও বাদলের আবার নতুনভাবে সারে ৩ লাখ টাকা দেনমোহরে কাবিন রেজিস্ট্রার করে তাদের বিয়ের ব্যবস্থা করি। বাদল তাকে আর নির্যাতন করবে বলে আমাদের কাছে অঙ্গিকার করে। পরে রাতেই জুলিয়াকে দুই সন্তানসহ স্বামী বাদল হাওলাদার তার নিজ বাড়িতে নিয়ে যায়।

(এএস/এসপি/অক্টোবর ২৮, ২০১৯)