রণেশ মৈত্র


অনিব শ্রেণীর স্বার্থে চোখ ধাঁধানো অনেক কিছু ঘটলেও দেশের সার্বিক পরিস্থিতি আজও উদ্বেগজনক। সকল দেশপ্রেমিকও চিন্তাশীল নাগরিকই এ প্রশ্নে একমত। কিন্তু এর সার্বিক সমাধান যেমন. দুর্নীতির মূলোৎপাটন, সাম্প্রদায়িক সহিংসতা বৃদ্ধি, শিক্ষা ব্যবস্থায় অসাম্প্রদায়িকীকরণ ও বৈজ্ঞানিকীকরণ, নদ-নদীগুলির প্রাণ ফেরানো, বেকারত্ব দূরীকরণ, দারিদ্র্যের সমাপ্তি টানা, শিল্পের প্রসার, কৃষক-খেতমজুরদের জীবন-যাবনের নিশ্চয়তা বিধান, ফসলের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিতকরণ, নারী নির্য্যাতদনের অবসান ঘটানো এবং সকল ক্ষেত্রে নারী পুরুষের সমানাধিকার প্রতিষ্ঠা, পরিবেশ দূষণ বন্ধ করা, শিল্প-সাহিত্যের প্রয়োজনীয় বিকাশ আজও হচ্চে না। কোন কোন ক্ষেত্রে উদ্যোগ নেওয়া হলেও আমলা-নির্ভরতা ও জবাবদিহিতার অভাবের কারণে তা ফলপ্রসূ হয় নি। দুর্নীতিদ অনেক কিছুই গ্রাস করে ফেলছে-আজ তা প্রমাণিত সত্য। 

কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের ৫০ বছর পূর্ণ হতে আর বেশী বাকী নেই বা তার সুবর্ণজয়ন্তী দরজায় কড়া নাড়ছে। আমরা স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উৎসবও পালন করতে চলেছি। তার আগে জাতীয় জীবনের সকল ক্ষেত্রেই একটা হিসাব নিকাশের প্রয়োজন আছে।

তেমনই আবার এসে গেল জাতীর জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের জন্ম শত বার্ষিকী যা আনন্দমুখর পরিবেশে সমগ্র জাতির স্বেচ্ছামূলক অংশগ্রহণে উদযাপিত হওয়া প্রয়োজন। জন্ম শতবার্ষিকী উদযাপনের নানামুখী প্রস্তুতি শুরু হয়ে গেলেও সময়মত মানুষের স্বেচ্ছামূলক অংশগ্রহণ ও ভূমিকা পালন ঘটবে কিনা-তা অজ্ঞাত।

বাঙালি জাতির জীবনে, বিশেষ করে বাংলাদেশের ক্ষেত্রে, এই উভয় বিষয়ই ঐতিহাসিক তাৎপর্য্য বহন করে। সেই তাৎপর্য্যরে উপলব্ধি ও তার বহুমুখীনতা যেন্ উৎসবের সকল পর্য্যায়ে প্রতিফলিত হয়-এ আকাংখা সকল সচেতন সমাজের।

বঙ্গবন্ধু দেশের প্রতি দায়বদ্ধ ছিলেন। সে দায়বদ্ধতা যথাযথধভাবেই তিনি পালন করেছেন এবং শেষ বিচারে সে কারণেই শত্ররা তাঁকে ও তাঁর পরিবার পরিজনকে নির্মমভাবে হত্যা করে উল্লাসে ফেটে পড়ে। ১৫ আগষ্টের সেই নিষ্ঠুরতার স্মৃতি বড়ই বেদনাবহ। যে জাতি ২৩ বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে জনসম্পৃক্ত নিয়মতান্ত্রিক পন্থায় সীমাহীন ত্যাগের বিনিময়ে ব্যাপক গণ-আন্দোলনের মাধ্যমে রাজপথ কাঁপিয়েছে যে জাতি অতঃপর নয় মাসব্যাপী সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনা করে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ গঠন করেছে- সেই মুক্তিযুদ্ধের মহান নেতা জাতির জনককে সপরিবারে নিহত হওয়ার পরে কীভাবে খুনীরা উল্লাসে ফেটে পড়তে পারলো এবং কিভাবেই বা নেতৃত্বের অবশিষ্টাংশ ও লাখো মুক্তিযোদ্ধার কোন সক্রিয় প্রতিরোধ গড়ে না তুলে শত্রুর বিজয়ে নিষ্পৃহ ভূমিকা পালন করতে সক্ষম হলো-তা ভাবলে লজ্জায় মাথা নীচু হয়ে আসে আজও।

সে লজ্জায় অবসান কি জাতির জনকের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনের আনন্দ মুখর পরিবেশ রচনার মাধ্যমেই অবসান ঘটানো সম্ভব? সম্ভব কি নিজ নিজ বিবেকের কাছে এ ব্যাপারে নিশ্চিন্ত হওয়া বা নিশ্চিত থাকা?

পূর্বেই বলেছি, জাতির কাছে যত দায়বদ্ধতা ছিল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান তার পূরোটাই পালন করে গেছেন তাঁর অকালমৃত্যু সাধিত হওয়া সত্ত্বেও। কিন্তু আমরা? আমরা যারা সচেতন দেশেপ্রেমিক বাঙালি, যারা মুক্তিযুদ্ধের সুমহান চেতনার অনুসারী, যারা ২৬ মার্চ ও ১৬ ডিসেম্বরে প্রতি বছর নানা অনুষ্ঠান আয়োজন করে থাকি-তারা “অস্ত্র জমা দিয়েছি, ট্রেনিং জমা দেই নি” বলে মাঝে-মধ্যে যে শ্লোগানে উচ্চাকিত করি, উচ্চাকিত করি, রাজপথ জয় বাংলা”, “জয় বঙ্গবন্ধু” শ্লোগানে জনগণ, দেশ ও মুক্তিযুদ্ধের প্রতি তাঁদের দায়বদ্ধতা সম্পর্কে আসলেই সচেতন?

প্রশ্নটির জবাব এক কথায় দেওয়া সম্ভব না। আর জবাবে যা যা বলা সম্ভব তারও সবই নেতিবাচক-লজ্জাজনকভাবে নেতিবাচক।

উদাহরণ স্বরূপ বলিঃ-

এক. এুক্তিযুদ্ধের প্রথম প্রাপ্তি বাহাত্তরের সংবিধান যাতে ধর্মনিরপেক্ষতা বাঙালি জাতীয়তাবাদ গণতন্ত্র ও সমাজতন্ত্র ছিল পধান স্তম্ভ হিসেবে স্বীকৃত। পেছনে ফিরে তাকালেই দেখা যাবে ১৯৪৮ থেকে ১৯৭১ এর ১৬ ডিসেম্বর পর্য্যন্ত বাঙালি লড়েছে এই চারটি মৌলিক আদর্শ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যেই। কিন্তু আজ এগুলি অপহ্নিত;

দুই. জেনারেল জিয় সামরিক আই বলে ওগুলি বাতিল করে সংবিধানের সুরুতে “বিসমিল্লাহ” যোগ করেন। তার সাথে জামায়াতে ইসলামীকে এবং ধর্মাশ্রয়ী রাজনীতিকে বৈধতা প্রদান করেন।

তিন. পরবর্তীতে অপর জেনারেল “ স্বৈরাচারী” বলে খ্যাত, হুসায়েন মুহ: এরশাদ “বাংলাদেশের রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম” সংযুক্ত করেন ঐ সংবিধানের। ঐভাবে পাল্টে দেওয়া হয় বাহাত্তর সংবিধানের এবং মুক্তিযুদ্ধের মৌল আদর্শ। এর বিরুদ্ধে বহু আন্দোলন সংগ্রাম হওয়া সত্বেও আজও এগুলি বহাল তবিয়তে বহাল রয়েছে আমাদের সংবিধানে। ফলে সাম্প্রদায়িক শক্তি জোরদার হচ্ছে-অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক শক্তি দুর্বল থেকে দুর্বলতর হচ্ছে।

চার. গণতন্ত্রের যে প্রতিশ্রুতি বাহাত্তরের সংবিধান ও মহান মুক্তিযুদ্ধে নিশ্চিত করা হয়েছে আজ তা থেকেও বিচ্যুতি ঘটেছে। সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন না থাকায় কার্য্যত: একদলীয় শাসন বহাল রয়েছে, বলা চলে, নব্বুই এর দশক থেকে আজ পর্য্যন্ত। সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবী প্রত্যাখ্যাতদ হচ্ছে-এগুলি আদৌ কোন সংগ্রামের লক্ষ্য ছিল না।

পাঁচ. দেশে আজ প্রায় অর্ধশত বৎসর পরে যদিও চোখ ধাঁধানো কিছু উন্নয়ন কাজ সংঘটিত হতে দেখা যাচ্ছে তার সুফল শতকরা ৯০ ভাগেরও বেশী পৌঁছাচ্ছে ধনিক শ্রেণীর হাতে যারা জনসংখ্যার শতকরা মাত্র এক থেকে দুইভাগ। বাদ-বাকীরা বঞ্চিত কিন্তু তাঁরাই সংখ্যায় অধিক।

ছয়. দেশে সড়ক, সেতু, দালাকোঠা নির্মিত হলেও শিল্পায়ন কার্য্যত: উপেক্ষিত। জেলাওয়ারী নতুন শিল্প প্রতিষ্ঠায় খতিয়ান সংগ্রহ করলে হতাশার চিত্রই ফুটে উঠবে। ফলে ব্যাপকভাবে বেকারত্ব থেকেই যাচ্ছে। ওষুধ শিল্প এবং গার্মেন্টস্ শিল্প বাদ দিলে উল্লেখযোগ্য আর কোন শিল্প কারখানা চোখেই পড়ে না। ফলে দেশটি আজও আমদানী নির্ভর। আর যা যা শিল্প সক্রিয়ভাবে অর্থনীতিতে অবদান রাখছে সেগুলিতেও শ্রমিকরা ন্যায্য মজুরী থেকে আজও বঞ্চিত। বহু শিল্প-কারখানা ১৯৭২ থেকেই বন্ধ এবং এগুলি খোলার সম্ভাবনাও দৃশ্যমান নয়।

সাত. কৃষি আজও বাংলাদেশের বৃহত্তম খাত এবং শত প্রতিক’লতা সত্বেও তার উন্নতি লক্ষ্যনীয়। কিন্তু যাঁদের শ্রমে, ঘামে কৃষির এ গৌরব সেই ক্ষেতমজুররা সাংসারিক কাজ না পেয়ে বছরের অর্ধেকের বেশী কাল বেকার থাকেন, তাদের ট্রেড ইউনিয়ন অধিকারও অস্বীকৃত এবং বেতন বা মজুরী যৎসামান্য মাত্র। আবার কৃষক পান না উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্য মূল্য। এই সমস্যাগুলি যথা পূর্বং-তথা পরং।

আট. ইারী নির্য্যাতনের মাত্রা প্রতিদিনই সর্বত্র আসংকাজনকভাবে বাড়ছে। বিচারিক দীর্ঘসূত্রিতা এই সংকটকে দীর্ঘস্থায়ী করতে সহায়ক হচ্ছে।

নয়. সাম্প্রদায়িকতা নতুন করে সমাজকে গ্রাস করতে চলেছে। নানা তুচ্ছ অজুহাত ও মিথ্যা জিগীর তুলে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের জীবন বির্পয্যস্ত করে তোলা হচ্ছে। মন্দির, মূর্তি, গীর্জা, প্যাগোডা, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, বসতবাড়ী সবই আক্রমণ, ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত। বছরের পর বছর ধরে এগুলি ঘটে চললেও সরকার নির্বিকার। বিচারহীনতা অপরাধীদের দুঃসাহস জোগাচ্ছে। অসাম্প্রায়িক বলে অভিহিত দলগুলি এ ব্যাপারে নিষ্ক্রিয়-নিদ্রাচ্ছন্ন। ফলে সাম্প্রদায়িক শক্তিগুলির পোয়াবারো।

এই নেতিবাচকতার ফর্দ আর বাড়িয়ে লাভ নেই বরং করণীয় হলো এগুলি থেকে উত্তর ঘটিয়ে কিভাবে দেশটাকে মুক্তিযুদ্ধের ধারায় পুনরায় ফিরিয়ে এনে শত-সহশ্র সংগ্রাম লাখো মানুষের আত্মাহুতিকে সার্থক করে তোলা যায়-তার পথ সন্ধান। পরিস্থিতির গভীর পর্য্যালোচনা এবং দেশকে ইতিবাচক পথে অগ্রসর করে নেওয়া জাতির এক অপরিহার্য্য দায়িত্ব।

আবারও বঙ্গবন্ধুর কাছেই ফিরে যেতে হয়। শক্তিশালী জাতীয় ঐক্য তিনি গড়ে তুলেছিলেন দীর্ঘ ২৩ বছর ব্যাপী আন্দোলন সংগ্রামের পথ বেয়ে। এতে অবদান রেখেছিলেন মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাষানী, কমরেড মনি সিংহ, অধ্যাপক মোজাফ্ফর আহমেদ প্রমুখ। সেই ইতিহাস, সেই গৌরবোজ্জ্বল ঐতিহ্যকে ধারণ করেই আবারও নামতে হবে রাজপথে বাহাত্তরের সংবিধান অবিকলভাবে ফিরিয়ে আনতে।

এ লক্ষ্য অর্জন করতে জনজীবন সম্পৃক্ত নানাবিধ অপরাপর দাবী নিয়েও শক্তিশালী আন্দোলন নিয়মতান্ত্রিক পথে গড়ে তুলে তার ধারাবাহিক বিকাশ এবং মানুষের সকল বিপদ-আপদ সম্মিলিতভাবে সকলে মিলে ছুটে গিয়ে তাদের পাশে দাঁড়াতে হবে। জনগণের আস্থা অর্জন করতে অভ্যস্ত নিষ্ঠা ও আন্তরিকতা নিয়ে নানা পদ্ধতিতে আন্দোলন গড়ে তোলার বিকল্প নেই।

এত বিতং করে বলছি এ কারণে যে এখন রাজনীতি তার জনপ্রিয়তা ও আস্থা হারিয়েছে চূড়ান্তভাবে। মানুষ রাজনীতিকদেরকে স্বার্থান্ধ, দুর্নীতিবাজ বলে মনে করে। তাই তারা রাজনীতি থেকে যোজন যোজন দূরে অবস্থান করে। গণতন্ত্রের জন্য এটি সর্বাপেক্ষা বিপজ্জনক।

এ কথাও সকলকে মনে রাখতে হবে যে রাজনীতিকে আবর্জনামুক্ত যত সত্বর করতে পারা যাবে ততই মঙ্গল। যত বিলম্ব হবে এ কাজে দেশের নানাক্ষেত্রে আবর্জনা বাড়তেই থাকবে। রাজনীতি স্বচ্ছ ছিল বলে ১৯৪৮ থেকে ধাপে ধাপে আন্দোলন করে ১৯৭১ এ মুক্তিযুদ্ধের মত দুরুহ লড়াইতে ঐক্যবদ্ধভাবে নামতে মানুষ দ্বিধা করে নি-জীবন বাজি রেখে বিপুল ত্যাগের বিনিময়ে দেশটাকে স্বাধীন করেই ছেড়েছে।

তেমনই আবার রাজনীতে ব্যাপকভাবে আবর্জনা ঢুকে পড়ায় ১৯৭৫ এর ১৫ আগষ্টের পর থেকে দেশ ক্রমান্বয়ে পিছিয়ে মানুষও রাজনীতি থেকে দূরে সরে গেছে। তাই স্বাধীনতা পূর্ব যুগের স্বচ্ছ রাজনীতে ফিরে আন্দোলন আজকের প্রধান আন্দোলন। মানুষের অংশগ্রহণ ঐ আন্দোলনে যতই বাড়বে ততই রাজনীতি আবর্জনা মুক্ত হবে।

তবে এক্ষেত্রে আজকের সরকারেরও করণীয় কম নয়। সরকারী দুলকে কঠোরভাবে আবর্জনামুক্ত করতে সকল দুর্নীতিবাজ, টেন্ডারবাজ, ভর্তি বাণিজ্যে লিপ্ত ও নানা অপরাধমূলক কর্মকা-ের সিন্ডিকেট যেভাবে সর্বত্র গড়ে উঠেছে কঠোরভাবে সেগুলি ধ্বংস করা সকল অপরধীকে জেলে পুরে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করার মাধ্যমেই সরকার তার আবর্জনা মুক্ত করার অভিযান সাফল্যম-িত করতে পারে।

অনুরূপভাবে উপরোক্তদ ধরণের চরিত্রের তো নয়ই সৎ, আদর্শনিষ্ঠ, দেশপ্রেমিক এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় অবিচল এমন গুণাবলী সম্পন্ন ব্যক্তিদের দিয়ে মূল দল ও সকল অঙ্গসংগঠনের কমিটি গঠন নিশ্চিত করতে হবে।

দেশের নির্বাচনগুলিকে অবাধ,ত সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ও অবিচলিত করার লক্ষ্যে স্বাধীন নিরপেক্ষ ও শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন দ্রুত গঠন করলে সকল দলের নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিশ্চিত হতে পারে।

ভিন্নমত থাকলেও বলি, রাজনীতি ও সংগঠনগুলিকে আবর্জনামুক্ত করার পর রাজনীতিতে সুবাতাস ফিরিয়ে এনে ২০২০ সালের শেষে বা ২০২১ সালের শুরুতে নতুন করে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত করলে এবং তাতে সকলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে পারলে দেশের বিপুল কল্যাণ সাধিত হতে পারে-নির্বাচনী ব্যবস্থার উপর সৃষ্ট অনাস্থাও দূর হতে পারে। জেনেও জাতীয় স্বার্থেই বললাম। তাতে দুটি ঐতিহাসিক বর্ষও যথধাযথভাবে পালর্মেন্টের পরিবেশ ব্যতিত হবে।

এ কাজগুলি বলা যতটা সহজ তার বাস্তবায়ন ততটাই বা তদাধিক দুরুহ তবুও এর বিকল্প নেই। বিরাজমান রাজনৈতিক দলগুলি বিশেষত: বিরোধী অবস্থানে থাকা প্রগতিশীল, গণতান্ত্রিক ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা-আদর্শে নিষ্ঠাবান দলগুলি আজ দেশে বিরাজমান অপরজনীতির দৌরাত্ম্যে অত্যন্ত দুর্বল হয়ে পড়েছে। এই দুর্বলতা দূর করতে না পারলে দেশের সমূহ ক্ষতি নিশ্চিত। তাই আজ রাজনীতিতে নতুন রক্ত সঞ্চালন অপরিহার্য্য। এবং সে লক্ষ্যে পৌঁছাতে হলে একটি শক্তিশালী যুব আন্দোলন অপরিহার্য্য। যুব জাগরণই একমাত্র যুবসমাজকে ঐ কাজে নামতে কার্যকরভাবে উদ্বুদ্ধু করতে পারে। দেশের অতীত ইতিহাসও তাই বলে।

বিদ্যমান পরিস্থিতিতে যুব সমাজই সর্বাধিক বিপর্য্যন্ত। অ-শিক্ষা, কু-শিক্ষা বেকারত্ব, অপরাজনীতি দুর্নীতি প্রভৃতি শেষ বিচারে যুবসমাজকেই ক্ষতিগ্রস্থ করে চলেছে তাদের নিষ্ক্রিয়তা আরও ভয়াবহ সংকট ডেকে আনতে পারে তাদের জীবনে এবং দেশের সকল গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে। তাই সুনির্দিষ্টত লক্ষ্যাভিসারী শক্তিশালী যুব জাগরণই আজকের প্রত্যাশা।

লেখক : সভাপতিমন্ডলীর সদস্য, ঐক্য ন্যাপ, সাংবাদিকতায় একুশে পদকপ্রাপ্ত।