রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা : দু’ বছরের এক শিশু সন্তানসহ তালাকপ্রাপ্ত এক মহিলাকে এসিডে ঝলসে দেওয়া অভিযোগে পুলিশ ওই নারীর তালাকপ্রাপ্ত স্বামীকে গ্রেপ্তার করেছে। সোমবার রাতে ঢাকার গেণ্ডারিয়া থানাধীন মনির হোসেন লেন থেকে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে।

গ্রেপ্তারকৃতের নাম শাহাজাহান মোড়ল। তিনি নড়াইল জেলা সদরের পঙ্কাবিলা গ্রামের শওকত মোড়লের ছেলে।

ঘটনার বিবরনে জানা যায়, ২০০৬ সালের ৫ মার্চ সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার দক্ষিণ চাপড়া গ্রামের ফতেমা খাতুনের সঙ্গে নড়াইল জেলা সদরের পঙ্কাবিলা গ্রামের ইলেকট্রিক মিস্ত্রী শাহজাহান মোড়লের বিয়ে হয়। বর্তমানে তার জাহেরা খাতুন (৯) ও জাকেয়া সেহজাবিন (২) নামের দু’টি মেয়ে রয়েছে। মাদকাসক্তি ও ভাবীর সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্কের প্রতিবাদ করায় ফতেমা ও তার বড় মেয়েকে মারপিট করা গতো।

এ কারণে ফতেমাকে কয়েকবার আশাশুনির দক্ষিণ চাপড়া গ্রামে ফুফু হাওয়া বেগমের বাড়িতে রেখে যাওয়া হয়। বিদেশ যাওয়ার নাম করে গত বছরের ২৩ ডিসেম্বর দু’ মেয়েসহ তাকে ফুফুর বাড়িতে রেখে যাওয়ার পর শাহজাহান আর তার সঙ্গে যোগাযোগ রাখতো না। একপর্যায়ে ফতেমা গত ২৭ ফেব্র“য়ারি স্বামীকে তালাকনামা পাঠান।

তালাকনামা পেয়ে শাহজাহান তাকে মোবাইল ফোনে বিভিন্নভাবে হুমকি ধামকি দিয়ে আসছিল। এরই জের ধরে গত ২১ অক্টোবর রাত ৮টার দিকে ছোট মেয়েকে নিয়ে উঠানের পাশে বাথরুমে যাওয়ার সময় শাহজাহান তাকে উদ্দেশ্য করে এসিড ছুঁড়ে মেরে মোটর সাইকেল যোগে পালিয়ে যায়। এতে তার মুখমণ্ডল, বুক ও ডান হাতের কিছু অংশ ঝলসে যায়। মুখের ডান পাশের অংশ ঝলসে যায় ছোট মেয়েটির। বর্তমানে তারা ঢাকা এসিড সারভাইভাস ফাউণ্ডেশনে ভর্তি রয়েছেন।

ফাতেমার বাবা একরাম হোসেন বাদি হয়ে শাহজাহান মোড়লসহ দু’জনের নামে থানায় মামলা করেন। গত শুক্রবার পুলিশ নড়াইল জেলা সদরের আবু ঈসা নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে। সোমবার রাতে পুলিশ ঢাকার গেণ্ডেরিয়া থানাধীন মনির হোসেন লেন থেকে গ্রেপ্তার করে বলে মঙ্গলবার পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান তার কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিং এ সাংবাদিকদের জানান।

আশাশুনি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুস সালাম বলেন, গ্রেপ্তারকৃত শাজাহান মোড়লের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। তাকে বুধবার সকালে আদালতে পাঠানো হবে।

(আরকে/এসপি/অক্টোবর ২৯, ২০১৯)