নওগাঁ প্রতিনিধি : নওগাঁয় নব্য আওয়ামীলীগারদের দাপটে ত্যাগী নেতা-কর্মীরা কোনঠাসা হয়ে পড়েছেন। ঘুষ, চাঁদাবাজি ও টেন্ডারবাজিতে অতীতের রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। এতে দলের ত্যাগী নেতাকর্মীরা চরম বিব্রতকর অবস্থায় পড়েছেন। জাতির জনকের আদর্শ আর জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বকে বুকে লালন করেও তারা কিছুই করতে পারছেন না। এমন চিত্র জেলার কম-বেশী সকল উপজেলাতেই বিদ্যমান।

এমনিভাবে জেলার মান্দা উপজেলা যুবলীগের সভাপতি এ্যাডভোকেট নাহিদ মোর্শেদ বাবু ও তার ভাই গণেশপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের যুগ্ম-সম্পাদক হারুন অর রশিদ বাবুর বিরুদ্ধে ঘুষ-বাণিজ্য ও অনিয়ম, দূর্ণীতির বিস্তর অভিযোগ উঠেছে। তারা দল ও সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করে ত্যাগী নেতা-কর্মীসহ এলাকাবাসীকে অতীষ্ঠ করে তুলেছেন। ইতোমধ্যেই এলাকাবাসী অভিযোগের বিষয়টি তুলে ধরে জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি-সম্পাদক বরাবর অভিযোগ করেছেন।

অভিযোগে জানা গেছে, উপজেলার গণেশপুর ইউনিয়নবাসীকে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়ার নাম করে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়ার পর এখনো এলাকায় বিদ্যুৎ দেয়া হয়নি। ভুক্তভোগীরা টাকা ফেরৎ চাইলে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দেয়াসহ বিভিন্ন ভয়-ভীতি দেখায় ওই যুবলীগ সভাপতি ও তার ভাই। সাতবাড়িয়া ডিস ব্যবসায়ী ও গনেশপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোয়াজ্জেম হোসেনের ডিস ব্যবসা কেড়ে নিয়ে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে মিরপুর গ্রামের বিএনপি নেতা আব্দুর রাজ্জাককে দেয়া হয়। সতীহাট বাজার মসজিদের জমি জোড়পূর্বক দখল করে ৮০ হাজার টাকার বিনিময়ে এক লবন ব্যবসায়ীকে দিয়ে দেয়।

বাঙ্গালপাড়া প্রাইমারী স্কুলে পিয়ন নিয়োগ দেয়ার কথা বলে গ্রামের সেকেন্দার মিনার কাছ থেকে ৫ লাখ টাকা ঘুষ নিয়েও তাকে নিয়োগ দেয়া হয়নি। সতীহাট খালের ওপর অবৈধভাবে ৪টি দোকান নির্মান করে রড-সিমেন্টের ব্যবসা করছে। কাঞ্চন হাই স্কুলে প্রধান শিক্ষক নিয়োগে ১০ লাক টাকা ঘুষ বাণিজ্য করেছেন। দেলুয়াবাড়ির যুবলীগ নেতা তারেক রহমানের আড্ডাখানা থেকে পুলিশ যে মাদক ও জুয়ার সরঞ্জাম উদ্ধার করেছে, তার সঙ্গে নাহিদ জড়িত বলে অভিযোগ করা হয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন চাকরি দেয়ার কথা বলে কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ তাদের দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে। তাদের দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে এমন বিস্তর অভিযোগ আনয়ন করা হয়েছে।

অভিযোগে বলা হয়, উপজেলার মিরপুর গ্রামের আলহাজ্ব আবুল কাশেমের ২ পুত্র যুবলীগ নেতা নাহিদ মোর্শেদ বাবু ও আওয়ামীলীগ নেতা হারুন অর রশিদ সোহেল। একাত্তরে তাদের দাদা আবুল হাসেম স্বাধীনতা বিরোধী শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন। স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারাও একথা স্বীকার করেছেন।

ভুক্তভোগীরা জানায়, তাদের বিরুদ্ধে মুখ খুললেই তারা মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে দেয়ার ভয় দেখায়। এমনকি তাদের ক্যাডার বাহিনী লেলিয়ে দিয়ে সন্ত্রাসী তান্ডব চালানোর ভয় দেখায়। ওই যুবলীগ নেতা নিজেকে মান্দার আওয়ামীলীগের এক প্রভাবশালী নেতার ভাগ্নে পরিচয় দিয়ে ধরাকে সড়া জ্ঞান করে চলে।

এ ব্যাপারে যুবলীগ নেতা এ্যাডভোকেট নাহিদ মোর্শেদ বাবু গনমাধ্যমকে বলেন, তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ মিথ্যা। আমাদেরকে রাজনৈতিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন করার লক্ষ্যে এসব অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।
জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মোঃ আব্দুল মালেক বলেন, এখন পর্যন্ত এব্যাপারে কোন কাগজপত্র পাইনি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

(বিএম/এসপি/অক্টোবর ৩১, ২০১৯)