সমরেন্দ্র বিশ্বশর্মা কেন্দুয়া, (নেত্রকোনা) : হেমন্তের সকালে শিশির ভেজা আমন ধান ক্ষেত যেন হেসে হেসে বলছে আর কদিন পরেই আমরা কৃষকের আঙ্গিনায় যাব। সুজলা সুফলা শস্য শ্যামলা এই বাংলার ৬ ঋতুতে নানা ফসল ও ফলন ফলে। কিন্তু একেবারেই শান্ত প্রকৃতির হেমন্ত ঋতু আমন ধান ক্ষেত যেন নব বধুর সাজে সেজে থাকে সারাক্ষণ।

নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার পৌর এলাকার ওয়াশেরপুর মহল্লার একটি আমন ধানের ক্ষেতের দৃশ্য দেখে চোখ জুড়ায়। শিশির ভেজা সকালে ধানের শিষ যেন মুক্তর ফুটো দিয়ে নব বধুর মতো ঘোমটা পড়ে আছে। প্রকৃতির এই রূপ জন্ম ভূমি বাংলাদেশের সুন্দর্য্যকে ফুটিয়ে তোলে।

কৃষি বিভাগ জানায়, এবার আমনের ফলন হবে বাম্পার। যদি ধান পাঁকার আগে প্রাকৃতিক তেমন কোন বিপর্যয় দেখা না দেয় তবে আমন ধান কৃষকের বাড়িতে গিয়ে কৃষানীর মুখে মুখে হাসি ফুটাবে। কিষানীরা মনের আনন্দে তৈরি করবেন পিঠা পুলি পায়েস। আমন ধান কাটা হবে নবান্ন উৎসবের মধ্য দিয়ে। বাঙালী কৃষকদের এটি একটি রেওয়াজ। সকলে মিলে আনন্দ উৎসব করে ধান কেটে বাড়িতে নেয়া এবং সেই ধান শুকিয়ে গোলায় তোলার আনন্দ অনেক বেশি।

এখনও গ্রামের কৃষক পরিবারগুলোতে ধানের চারা রোপন উৎসব, নবান্ন উৎসব, পিঠা উৎসব হয়ে থাকে। তবে কৃষকরা মনের আনন্দে ধান আবাদ করলেও ধান কেটে মারাইয়ের পর তারা ন্যায্য মূল্য না পেয়ে মনের কষ্টে গালে হাত দিয়ে বসে থাকেন। এতো সুন্দর প্রকৃতির মাঝে কৃষকদের এই মনের কষ্ট সকলকেই বেদনা দেয়।

কৃষক জাহাঙ্গীর আলম জানান, এবার আমনের বাম্পার ফলন হয়েছে। মনের আনন্দে ধান কেটে গোলায় তুলব, কিন্তু চাই ন্যায্য মূল্য।

তিনি বলেন, কৃষি প্রধান এই বাংলাদেশে কৃষকের উৎপাদিত পন্যের ও ফসলের মূল্য যদি কৃষকরা না পান, তাহলে কৃষি ক্ষেত্রে আগ্রহ হারিয়ে ফেলবে কৃষক। তিনি কৃষি বিভাগকে উদ্যোগী হয়ে ধানের পরিবর্তে এই সুন্দর প্রকৃতির বাংলাদেশে অন্যান্য সবজি ও ফসলের চাষ করার দাবী করেন।

(এসবি/এসপি/নভেম্বর ০৩, ২০১৯)