নওগাঁ প্রতিনিধি : প্রাণী সম্পদ দপ্তরের লোকবল সংকটসহ ওষুধ স্বল্পতা প্রতিষেধক না থাকায় নওগাঁ জেলা জুড়ে লাম্পি স্কিন ডিজিজ ভাইরাস চর্মরোগে আক্রান্ত শতশত গবাদী পশুর কাঙ্খিত চিকিৎসা ব্যাহত হচ্ছে না। জেলার ১১ উপজেলার ৯৯ ইউনিয়নের প্রতিটি গ্রামেই গরু এবং মহিষের এ রোগ ব্যাপক বিস্তার রাভ করেছে।

জেলার গরু খামারিরা এ রোগে আক্রান্ত গবাদী পশুর ওষুধ বা চিকিৎসা নিয়ে চরমভাবে বেকায়দায় পড়লেও তাদের পরিচর্যা ও সতর্কতা অবলম্বন করা ছাড়া কোন উপায় নেই। তবে গৃহস্থের বসতবাড়িতে পালিত গবাদী পশুগুলো অসচেতনতার কারনে এ রোগে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে বলে জেলা প্রাণী সম্পদ দপ্তর সূত্রে জানা গেছে। নওগাঁ জেলার রানীনগর, সদর, মান্দা ছাড়াও এবার মহাদেবপুর উপজেলায় এ রোগ ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়েছে।

রবিবার নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলার খাজুর ইউনিয়নের গোবিন্দপুর গ্রামের কৃষক রাহামেল উদ্দীন লাম্পি স্কিন ডিজিজ ভাইরাস চর্মরোগে আক্রান্ত একটি বাচ্চা গরু চিকিৎসা নিতে আসে স্থানীয় প্রাণীসম্পদ অফিসে। ওই কৃষক জানান, এখানে ওষুধ না থাকায় ডাক্তাররা পেসক্রিপশন লিখে দিয়েছেন। বাজারে পেসক্রিপশনের ওষুধ মেডিক্যাল ষ্টোর থেকে কিনতে গিয়ে অনেক হয়রানির স্বীকার হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন। মূল্য নিয়ে একেকটি দোকানী একেক রকমের দাম হাঁকছে।

উপজেলা প্রাণী সম্পদ অফিসার ডা. এস এম খুরশিদ আলম জানান, গবাদী পশু এ ভাইরাস জনিত চর্মরোগটি আমাদের দেশে নতুন ভাবে আবির্ভূত হয়েছে। এ কারনে গবাদী পশুর এ রোগ নিরাময়ে তেমন কোন উল্লেখযোগ্য ওষুধ এ পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। তবে এ রোগ থেকে পরিত্রান পেতে হলে বসতবাড়ি এবং পশু খামারের আশপাশের ঝোপঝাড় ও জঙ্গল কেটে পরিষ্কার করতে হবে এবং গবাদী পশুকে যেন মশা কামড় না দেয় সে লক্ষ্যে প্রয়োজনে মশারি ব্যবহার অপরিহার্য।

এ রোগের প্রাথমিক লক্ষন পশুর শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাওয়া, শরীরের চামড়ার ওপর নাডিউলের মত ফুলে যাবে এবং উপরের লিম্ফনোডগুলো ফুলে যেতে পারে। এ সব রোগে আক্রান্ত প্রাণী লালা নাক ও চোখের ডিসচার্জের মাধ্যমে চড়ায়। গবাদী পশু এ রোগে আক্রান্তের সংখ্যা কমাতে ইতোমধ্যেই উপজেলার গ্রামে গ্রামে কৃষকদের নিয়ে উঠান বৈঠক করা হচ্ছে বলে ওই কর্মকর্তা জানান।

জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. উত্তম কুমার দাস জানান, রোগটি সারাদেশেই কম-বেশী রয়েছে। তবে গত অক্টোবর মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহের দিকে এ জেলায় ওই রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। এটি একটি ভাইরাস রোগ। যা মশা-মাছির কামড় থেকে ছড়ায়। আমাদের ডাক্তার সংকট, ওষুধও নেই। প্রতি বছরের শেষের দিকে একবার মাত্র ওষুধের বরাদ্দ মিলে। তাও অত্যন্ত অপ্রতুল। এবিষয়ে কৃষকদের সচেতন করার লক্ষ্যে গ্রামে গ্রামে পোষ্টারিং এবং নিয়মিত উঠোন বৈঠক করা হচ্ছে।

(বিএম/এসপি/নভেম্বর ০৩, ২০১৯)