চট্টগ্রাম প্রতিনিধি : চট্টগ্রামে মাদক কারবারে সহায়তা না করায় স্বামী কর্তৃক নির্যাতনের শিকার হয়ে মৃত্যু শয্যায় দিনাতিপাত করছেন এক গৃহবধূ।

চট্টগ্রাম নগরীরর বাকলিয়া থানাধীন দর্জি সমিতির মাঠ ক্ষেতচর এলাকায় এ নির্যাতনের ঘটনা ঘটে।

জানা গেছে, নগরীর বাকলিয়া থানাধীন নোমান কলেজের পরে ক্ষেতচর এলাকায় মরিয়ম আক্তার চম্পা (২৫) স্বামী নুরুল ইসলাম প্রকাশ বাচা (৩৫) এর সাথে বসবাস করে। তাদের সংসারে ১ বছরের একটি পুত্র সন্তানও রয়েছে। ঐ এলাকার আবুল বশরের ছেলে বাচার সাথে মরিয়মের বিয়ে হয় প্রায় ৮/১০ বছর আগে। মরিয়মের স্বামী বাচা একজন পেশাদার মাদক বিক্রেতা। সে ইয়াবা, গাঁজা এবং চোলাইমদসহ নানা প্রকার নেশা দ্রব্য বিক্রির সাথে জড়িত। মরিয়মকে সে প্রায় সময় তার ব্যবসায় সহযোগিতা করার জন্য মারধর করত। মরিয়ম রাজী না হলে চলত অমানবিক অত্যচার।

স্বামীর মাদক ব্যবসায় সহায়তা না করার দায়ে সম্প্রতি মরিয়মকে তার স্বামী বাচা প্রথমে মাথায় তুলে আছাড় দিয়ে পঙ্গু করে এবং পরে গরম ছ্যাঁকা দিয়ে তার শরীর ঝলসে দেয়। এতে মরিয়ম এক প্রকার পঙ্গু ও শারীরিকভাবে অক্ষম হয়ে যায়। ঘটনার ১০/১৫দিন পর তার বাপের বাড়ীর লোকজন খবর পেয়ে তাকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করায়। পরে তার অবস্থার অবনতি দেখে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও তাকে রিলিজ দিয়ে দিতে বাধ্য হন। ফলে মরিয়ম বর্তমানে মৃত্যু শয্যায় দিনাতিপাত করছেন।

এ ব্যাপারে মরিয়মের পিতা শামসুল আলম বলেন, আমার মেয়ে স্বামীর অবৈধ মাদক ব্যবসার সহযোগী না হওয়ায় তাকে নির্যাতন করে মেরে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছে। আমরা এ মাদক কারবারী বাচা ও তার সহযোগী বোন জামাই আলমগীর (৩৫), বোন বুচুনি (৩০) এর গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।

এ ব্যাপারে নুরুল ইসলাম বাচার সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করেও তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।

এদিকে নির্যাতিত ময়িরমের পরিবার দরিদ্র হওয়ায় তারা অসহায়বোধ করছেন। তারা মামলা করতে সাহস না পেলেও থানায় যোগাযোগ করে বিষয়টি অবহিত করেছেন বলে জানিয়েছেন আয়শা খাতুন জানিয়েছেন। বাচা মামলা না করার জন্য হুমকি ধামকি দিয়ে যাচ্ছেন বলেও তিনি অভিযোগ করেছেন।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বাকলিয়া থানার ওসি নিজাম উদ্দিন বলেন, বিষয়টি আমি শুনিনি বা কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ করলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে।

তিনি নির্যাতিতাকে থানায় যোগাযোগ করে বিষয়টি জানানোর জন্য পরামর্শ দিয়েছেন।

মাদক ব্যবসায়ী কর্তৃক গৃহবধুকে নির্যাতনের বিষয়ে জানতে চাইলে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক মো.মুজিবুর রহমান পাটোয়ারী বলেন, অভিযোগটি পেয়ে শনিবারেই তাকে গ্রেপ্তারে অভিযান চালিয়েছিলাম কিন্তু ধরতে পারিনি। তবে অভিযান অব্যাহত আছে। যেকোন সময় সে ধরা পড়বেই।

উল্লেখ্য, বিগত একমাস আগে বাচা মাদক মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কিছুদিন জেল খাটার পর পুনরায় ছাড়া পেয়ে মাদক ব্যবসা করছেন বীরদর্পে। তার বিরুদ্ধে থানায় একাধিক মাদকের মামলাও রয়েছে।

(জেজে/এসপি/নভেম্বর ০৪, ২০১৯)