ধামরাই (ঢাকা) প্রতিনিধি : ধামরাইয়ে বখাটেদের উত্যক্ত সহ্য করতে না পেরে রবিবার সন্ধ্যায় সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী মুন্নি আক্তার গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। মুন্নি চৌহাট ইউনিয়নের চর কহেলা গ্রামের মনির হোসেনের মেয়ে ও চর রাজাপুর কহেলা বাহরাম মল্লিক উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী ছিল।
উত্যক্তকারীরা একই বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর ছাত্র বলে পুলিশ জানিয়েছে।

এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ওই চারজন বখাটেদেরকে আটক করেছে পুলিশ। আটকরা হলো রবিন, পিতা-সিদ্দিক হোসেন, শফিকুল ইসলাম পিতা- ইউনুচ ওরফে ইনসু, ও রোকন,পিতা আঃ বারেক, রাব্বি মাহমুদ (শীতল)পিতা-জাকির হোসেন।এছাড়াও শরফ উদ্দিন সৌরভ পিতা-নজরুল ইসলাম পলাতক আছে। এরা সবাই একই বিদ্যালয়ের ছাত্র ও বখাটে সবার বাড়ি বিদ্যালয়ের আশপাশে এলাকায়।এই বখাদেরদের বিরুদ্ধে আগে অভিযোগ ও বিচার হলেও কোনো ব্যাবস্থা না নেবার কারনে এমন ঘটনা ঘটেছে বলে এলাকাবাসি অীভযোগ করেন।

পুলিশ ও নিহতের পরিবার থেকে জানা গেছে, চর রাজাপুর কহেলা বাহরাম মল্লিক উচ্চ বিদ্যালয়ে যাওয়া আসার পথে মন্নিকে প্রায়ই উত্যক্ত করে আসছিল কয়েক জন বখাটে। কখনো দল বেধে কখনো একাও মুন্নিকে নানা রকম অশ্লীল বাক্য প্রযোগ ও কুপ্রস্তাব দিয়ে উত্যক্ত করতো বলে অভিযোগ আছে।

তাদের অভিভাবকের কাছে এবিষয়টি জানানো হলেও বখাটেদের অভিভাবকরা এব্যাপারে প্রযোজনীয় কোন ব্যবস্থা নেয়নি।

রবিবার স্কুল ছুটির পর প্রতি দিনের ধারা বাহিকতার সুত্র ধরে ওই বখাটে গ্রুফটি ঘাপটি মেরে পথি মধ্যে বসে থেকে মুন্নিকে ঘিরে ধরে ও জোড় পুর্বক কুরচি পুর্ন প্রস্তাব দেয় । তাদের কথা না শুনলে ভয়ভতি প্রদর্শন করে। এলাকায় কোনো প্রতিকার নাপেয়ে উত্যক্তের যন্ত্রনা সহ্য করতে না পেরে সপ্তম শ্রেনীর ছাত্রী মুন্নি রবিবার সন্ধ্যায় নিজ বাড়িতে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে। এঘটনা এলাকায় জানাজানি হলে মুন্নিদের বাড়িতে শিক্ষক,সহপাঠি,অন্যান্য শিক্ষার্থী,এলাকার শত শত মানুষ গিয়ে ভীর করে।

ধামরাই থানা পুলিশী তদন্ত কেন্দ্র কাওয়ালী পাড়া ফাড়ির দায়িত্ব প্রাপ্ত কর্মকর্ত এসআই মোঃ আবু-সঈদ এ সংবাদ জেনেই ঘটনাস্থল থেকে স্কুল ছাত্রী মুন্নির মৃতদেহ উদ্ধার করে ধামরাই থানায় নিয়ে আসে। দ্রুত অভিযান চালিয়ে এ ঘটনায় জড়িত চারজনকে আটক করেছেন পুলিশ। আরো জড়িত দের গ্রেফতারের অভিযান অব্যাহত আছে বলে জানান তিনি। বিদ্যালয়ের ছাত্র হিসেবে এই বখাটেরা ফাকিবাজ বলে জানান।এদের কাজই নানা ধরনের অপরাধের সাথে সম্পৃক্ত থাকা।

ওসি দীপক চন্দ্র সাহা ভোরের কাগজ প্রতিনিধিকে জানিয়েছেন।তিনি বলেন সোমবার তাদের আদালতে প্রেরন করা হয়েছে। বয়স কম থাকায় তাদের বিরুদ্ধে রিমান্ড প্রার্থনা করা হয়নি বিজ্ঞ আদালতে।গ্রেফতাকৃত সকল বখাটেরাই এক স্কুলে লেখাপাড়া করে বলেও জানান তিনি। এ ঘটনার পর পরই ঘটনাস্থল পরিদর্শন আসেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সাভার সার্কেল) তাহমিদুল ইসলাম। এসময় সাথে ছিলেন ধামরাই থানার ওসি দীপক চন্দ্র সাহা ওসি (তদন্ত)মোঃ কামাল হোসেন, ওসি (অপারেশন)মোহাম্মদ মাসুদুর রহমান।

ধামরাই থানার ওসি দীপক চন্দ্র সাহা আরো জানান, উত্যক্তের ঘটনায় জড়িত চারজনকে আটক করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে মামলা ও সোমবার দুপুরে গ্রেফতার কৃত চারজনকেই বিজ্ঞ আদালতে প্রেরন করা হয়েছে। লাশের ময়না তদন্তের জন্য শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এদের বিরুদ্ধে আত্ম হত্যার প্ররোচনা ও সহায়তা করার অভিযোগে নিহতের বাবা মনির হোসেন মামলা করেছেন। ধামরাই থানায় মামলা নং-৫,তারিখ ০৩/১১/১৯ ইং।

নিহতের বাবা মনির হোসেন ও এলাকাবাসি দ্রুত বিচার করে উত্যক্তকারীদের ফাঁসির দাবি জানিয়েছে।

(ডিসিপি/এসপি/নভেম্বর ০৪, ২০১৯)