স্টাফ রিপোর্টার : প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে শেয়ারবাজারে আসা নতুন কোম্পানির লেনদেনের প্রথমদিনেই শেয়ারের দাম বাড়া অথবা কমার সীমা (সার্কিট ব্রেকার) চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত বিএসইসির ৭০৪তম নিয়মিত কমিশন সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয় বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

সূত্র বলছে, প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির প্রথম দু’দিন ৫০ শতাংশ সার্কিট ব্রেকার থাকবে। অর্থাৎ লেনদেনের প্রথম দুদিন একটি কোম্পানির শেয়ারের দাম সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়াতে অথবা কমাতে পারবে। এ হিসাবে আইপিওতে আসা একটি কোম্পানির শেয়ারের দাম লেনদেনের প্রথমদিন সর্বোচ্চ ১৫ টাকা পর্যন্ত উঠতে পারবে। বিপরীতে কমাতে পারবে ৫ টাকা পর্যন্ত।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের দাবির প্রেক্ষিতে লেনদেনের প্রথমদিন থেকেই এই সার্কিট ব্রেকার চালু করা হয়েছে বলে জানিয়েছে সূত্রটি। লেনদেনের প্রথমদিনে কোম্পানির শেয়ারে অস্বাভাবিক উত্থান হওয়ায় ডিএসই এই সার্কিট ব্রেকারের প্রস্তাব দিয়েছিল।

লেনদেনের প্রথম দুই কার্যদিবস ৫০ শতাংশ সার্কিট ব্রেকার থাকার পর তৃতীয় কার্যদিবস থেকে স্বাভাবিক সার্কিট ব্রেকারের নিয়ম চালু হবে। অর্থাৎ তৃতীয় লেনদেন কার্যদিবস থেকে শেয়ারের দাম সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ কমাতে অথবা বাড়াতে পারবে।

এ বিষয়ে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. সাইফুর রহমান জানান, লেনদেনের প্রথম দিকে নতুন তালিকাভুক্ত শেয়ারের উচ্চমূল্য থাকায় আইপিও লটারি পাওয়া বিনিয়োগকারীরা প্রাথমিক শেয়ার উচ্চমূল্যে বিক্রি করে বাজার থেকে বেরিয়ে যান। পরবর্তীতে নতুন তালিকাভুক্ত শেয়ার তার প্রথম দিনের উচ্চমূল্য ধরে রাখতে পারে না। ফলে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা ক্ষতিগ্রস্ত হয় ও সূচকের ওপর ঋণাত্মক প্রভাব পড়ে। এতে বাজার তার স্বাভাবিক গতি হারায়। তাই ডিএসইর প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে লেনদেনের প্রথমদিন থেকেই সার্কিট ব্রেকার চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন।

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. বখতিয়ার হাসান বলেন, লেনদেনের প্রথমদিন সার্কিট ব্রেকার দেয়া খুবই ভালো উদ্যোগ। সার্কিট ব্রেকার না থাকার কারণে লেনদেনের প্রথমদিনই ১০ টাকার একটি শেয়ারের দাম অস্বাভাবিকভাবে বাড়তে দেখা যায়। কিন্তু সেই দাম বেশি দিন স্থায়ী হয় না। এতে একটি পক্ষ সুবিধা পেলেও, সার্বিক বাজার ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

তিনি বলেন, লেনদেনের প্রথমদিন সার্কিট ব্রেকার দেয়ার কারণে সেকেন্ডারি মার্কেট জন্য ভালো ফল বয়ে আনবে। তবে প্রাইমারি মার্কেট বা আইপিও’র প্রতি বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ কমে যেতে পারে।

শেয়ারবাজারের বিনিয়োগকারীদের একটি বড় অংশ আইপিও’র ওপর নির্ভরশীল। তারা আইপিওতে পাওয়া শেয়ার দিয়ে বড় লাভের আশা করেন। এ ধরনের বিনিয়োগকারীদের জন্য এ সিদ্ধান্ত কিছুটা নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে জানান তিনি।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সদস্য ব্রোকারেজ হাউসের মালিকদের সংগঠন ডিএসই ব্রোকারেজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ডিবিএ) সভাপতি শাকিল রিজভী বলেন, লেনদেনের প্রথমদিন সার্কিট ব্রেকার চালু করা খুবই ভালো পদক্ষেপ। এতে আইপিওতে আসা কোম্পানির শেয়ারের দাম প্রথমদিনেই অস্বাভাবিকভাবে বাড়বে না।

(ওএস/এসপি/নভেম্বর ০৫, ২০১৯)