জাহিদুর রহমান তারিক, ঝিনাইদহ : ঝিনাইদহের হরিনাকুন্ডু উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে গেন্ডারি আখ চাষ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। সেখানকার ছোট-বড় বাজারগুলোতে অসংখ্য গেন্ডারি আখের দোকান। রাস্তার ধারে ধারে বিক্রি হচ্ছে হরিণাকুন্ডুতে উৎপাদিত গেন্ডারি আখ। ৯০ দশক থেকে এই অঞ্চলে গেন্ডারি আখ খাওয়ার প্রচলন শুরু হয়। 

ফরিদপুর, মানিকগঞ্জ সহ বিভিন্ন জেলা থেকে এই আখ ক্রয় কিনে এনে ঝিনাইদহে বিক্রি করা হতো। কিন্তু ২০১২ সালের পর থেকে হরিণাকুন্ডু উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে গেন্ডারি আখের চাষ হচ্ছে। গত ৪ বছরে হরিনাকুন্ডু উপজেলার এই গেন্ডারি আখের চাষ ব্যপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে।

হরিনাকুন্ডু উপজেলা কৃষি বিভাগ সুত্রে জানাগেছে, এবছর প্রায় ১৫ হেক্টর জমিতে চাষ গেন্ডারি আখের চাষ হয়েছে।

হরিনাকুন্ডু উপজেলার শহর, বাউল সম্রাট লালনের গ্রাম হরিশপুর, দৌলতপুর গ্রাম ঘুরে দেখা যায় মাঠের পর মাঠ গেন্ডারি আখ দাড়িয়ে আছে।

পারবতীপুর গ্রামের কৃষক আব্দুল বারী মন্ডল জানান, তিনি গত দুই বছর গেন্ডারি আখের চাষ করছেন। হরিশপুরে তার আত্মিয় গান্ডারি আখের চাষ করেন। চাষটি লাভজনক বলে শুনে তিনি সিদ্ধান্ত নেন নিজেও চাষ করবেন। এরপর নিজে ২০১৮ সালে ১৮ শতক জমিতে চাষ করেন। আখের বয়স ১০ মাস হলে কেটে বাজারে বিক্রি করা হয়।

তিনি বলেন, ১৮ শতক জমিতে গেন্ডারি আখের চাষ করে তিনি একলাখ টাকা লাভ করেছেন। হরিশপুর গ্রামের গিয়ে দেখা যায় মাঠে প্রচুর পরিমানে গেন্ডারি আখ।

কৃষকরা জানান, ২০১২ সালের দিকে তাদের গ্রামের নাজিম উদ্দিন রাস্তার ধার থেকে আখ ক্রয় করে খাচ্ছিলেন। এই আখের চোখ বাড়িতে নিয়ে রোপন করেন। এভাবে তাদের এলাকায় গেন্ডারি আখের চাষ ছড়িয়ে পড়েছে।

কুষক ইতাহার আলী জানান, বাজারে ধানের মুল্য কমে গেছে। অন্য ফসল উৎপাদন করেও কৃষক খরচ উঠাতে পারছে না। সেখানে এক বিঘা জমিতে এক লাখ টাকা খরচ করলে ৪ লাখ টাকার গেন্ডারি আখ পাওয়া যায়। অল্প জমিতে অধিক লাভ হওয়ায় এলাকার কৃষকরা বর্তমানে এই চাষে ঝুঁকে পড়েছেন।

হরিনাকুন্ডু উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ আরশেদ আলী চৌধুরী জানান, মাত্র ৪ থেকে ৫ বছরের ব্যবধানে ১৫ হেক্টর জমিতে এই আখের চাষ ছড়িয়ে পড়েছে। এটা খুবই লাভজনক হওয়ায় কৃষকরা এই চাষে ঝুকে যাচ্ছে। তারাও কৃষকদের এই চাষের পরমর্শ দিচ্ছেন।

(জেআরটি/এসপি/নভেম্বর ০৬, ২০১৯)