স্টাফ রিপোর্টার, ঝিনাইদহ : ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর নাসির চৌধুরী ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলায় গঠন করেন দলিল লেখক সমিতি। এরপর তিনি সরকারের প্রভাবশালীদের ম্যানেজ উপজেলা সাব রেজিস্টার কার্যালয়ে তৈরি করেন নিজস্ব বলয়। চলতে থাকে সাধারণ মানুষের পকেট কাটা। এরপর ২০১৪ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ২য় মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে কোটি টাকা দিয়ে নৌকা প্রতিক নিয়ে বিনা প্রতিদ্বন্দিতায় শিমলা-রোকনপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। চেয়ারম্যান আর দলিল লেখকের তকমায় নাসির গড়ে তোলে তার বিশাল সম্রাজ্য।

সরকারি হিসেবে জমির কবলা খরচ ইউনিয়নে ৯% ও পৌরসভা এলাকায় ১০% ধার্য করা। কিন্তু কালীগঞ্জ উপজেলায় জমি রেজিস্ট্রি করতে গেলে সরকারি ফি ছাড়া জমির মোট মূল্যের ৫% অধিকহারে মুল্য পরিশোধ করতে হয় সাধারণ মানুষের। যা থেকে প্রতি মাসেই তিনি কোটি কোটি টাকা উপার্জন করেন। কালীগঞ্জ উপজেলা দলিল লেখকদের একটি সমিতি থাকলেও তিনি নিজ হাতে টাকা পয়সা ভোগ করেন। কেউ হিসাব চাইতে গেলে সেই দলিল লেখকের উপর নেমে আসে অত্যাচার ও লাইসেন্স বাতিলের হুমকি।

এ ব্যাপারে কালীগঞ্জ উপজেলা সাব রেজিস্ট্রার আমিনা বেগম বলেন, ৫% অধিকহারে যে টাকা নেওয়া হয় তিনি এ বিষয়ে কিছু জানেন না।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক দলিল লেখক জানান, আমাদের নিজস্ব কোন বেতন নেই। জমি রেজিস্ট্রিকারী বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে আমরা কিছু টাকা নিয়ে থাকি। কিন্তু দলিল লেখক সমিতির সাধারণ সম্পাদক নাসির চৌধুরী আমাদের নাম ভাঙিয়ে মানুষের কাছ থেকে শতকরা ৫% বেশি টাকা নিয়ে থাকেন। যে টাকার কোন হদিস নেই। আমরা হিসাব নিতে গেলে বিভিন্ন ভাবে ক্ষমতাসীন নেতাদের দিয়ে হুমকি ও লাইসেন্স বাতিলের হুমকি দেওয়া হয়।

কালীগঞ্জ উপজেলার ষাটবাড়িয়া গ্রামের শরিফুল ইসলাম জানান, আমি কিছুদিন আগে জমি রেজিস্ট্রি করতে কালীগঞ্জ উপজেলা সাব রেজিস্ট্রি অফিসে যায়। জানতাম সরকারি ফি ইউনিয়নে ৯% হারে মোট জমির মুল্যের উপর ভ্যাট দিতে হয়। কিন্তু এখানে আমাকে ১৪% টাকা দিতে হয়েছে। এটা বিশাল দুর্নীতি।

(জেআরটি/এসপি/নভেম্বর ০৬, ২০১৯)