মানিক বৈরাগী


দেশ জাতি সব সময় আশায় বুক বাঁধে দেশরত্ন শেখ হাসিনা কে নিয়ে। মেহনতী মানুষ একটি সুখী সমৃদ্ধ সুন্দর বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখে একমাত্র দেশরত্ন শেখ হাসিনা কে ঘিরে। গণ মানুষ অতিতেও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিল জীবনের, সংসার, সন্তান, পিতামাতা, ভাই বোন স্বজনের মায়া ত্যাগ। তিরিশ লক্ষ শহীদ, তিন লক্ষ মা বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে অর্জিত স্বপ্ন ও ৭৫এ ভেঙ্গে চুরমার হয়ে গেলো। এরপর মানুষ স্বপ্নহারা হলো, হলো দিশাহারা। আমরা যারা ৭০-৮০-৯০ এর প্রজন্ম পিতা হারা বাংলাদেশে আবারও নতুন করে স্বপ্ন দেখতে শুরু করি মুজিব তনয়া দেশরত্ন শেখ হাসিনা কে ঘিরে।

আমরা ও স্বপ্ন দেখেছিলাম একটি সুখী সমৃদ্ধ অসাম্প্রদায়িক মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় অপরুপ বাংলাদেশের। এমনই একটি বাংলাদেশ বিনির্মাণের কত ছাত যুবক শ্রমিক কৃষক, দিনমজুর, ক্ষেতমজুর শুধু শেখ হাসিনা কে বাংলার মসনদে দেখবে বলে ২১বছরে মুজিব ভক্ত শহীদ হয়েছেন, নির্যাতিত হয়েছেন অন্তত কয়েক লক্ষ।

জিয়া এরশাদ খালেদা কে চিরতরে রাজনীতি থেকে নির্বাসন দিবে বলে এ বেহুলা বাংলার ব্রাত্য জনতার ২১টি বছর লড়াই সংগ্রাম করতে হয়েছে। তারপর ও আআন্তর্জাতিক চক্রান্ত ও ৭১এর পরাজিত শক্তি পাকিস্তানি বংশদ্ভূত এদেশিয় দালাল চক্রের চক্রান্তের ফলে অর্জিত ক্ষমতা আবারও হারাতে হলো। আমাদের আবারও মিছিলের লড়াইয়ে নামতে হলো। বিগত জামাত বিএনপি জোট সরকারের সময়ে বাংলার বুকে নেমে এলো অন্যরকম একাত্তরের ভিবিশিখা।

এভাবে আবারো আমাদের ৮বছর জীবন বাজি রেখে লড়াই করে শেখ হাসিনা কে পুনর্বার ক্ষমতায় বসাতে অন্তত দুই লক্ষের অধিক আওয়ামী জনগোষ্ঠী নির্যাতিত, নিপিড়ীত, ধর্ষিত, খুন হলো।

হলো ২১শে আগস্ট, ১৭আগস্ট সহ কতো রকমের জঙ্গি হামলা। যার শিকার শেখ হাসিনা সহ শতশত কর্মী, সাধারণ মানুষ, পথচারী।

এ বাংলায় দেশরত্ন শেখ হাসিনার দক্ষতা, প্রজ্ঞায়,পরিশ্রমে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ টানা তৃতিয় বারের মতো ক্ষমতায় আছে।

এতে বাংলার মেহনতি মানুষ যারপরনাই খুশি। আবার অখুশি ও।কারণ আওয়ামীলীগের ভেতর অবস্থান করে ৭১ও ৭৫এর প্রেতাত্মারা।

এরা মানুষ রুপে অন্য কিসিমে’র প্রাণী। এরাই বারে বারে আওয়ামীলীগ, বঙ্গবন্ধু, ও শেখ হাসিনা কে প্রশ্নবিদ্ধ করে। এদের লক্ষ্য শেখ হাসিনার সামনে চরম চামচামি আর অলক্ষ্যে চরম নেমক হারামি ও আখের গুছারি।

বাংলাদেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা কে জনমানস থেকে বিচ্ছিন্ন করতে, গণমানুষের আস্থা ও বিশ্বাস ধ্বংস করতে সদা তৎপর।

সরকার যখন শুদ্ধি অভিযানের সিদ্ধান্ত নিলো,শুরুর প্রাক্কালে হুমকি দিয়ে বসলো যুবলীগের চেয়ারম্যান, সাবেক জাতিয় পার্টির নেতা ওমর ফারুক চৌধুরী। চলমান শুদ্ধি অভিযান যখনি গণমানুষের আস্থা অর্জন করতে শুরু করেছে তখনি সাবোটাজ ঘটনা ঘটালো আপনার প্রাণ প্রিয় ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের বুয়েট শাখার নেতারা আবরার কে হত্যা করে শুদ্ধি অভিযান কে প্রশ্নবিদ্ধ ও জনমনে সংশয় সংখ্যা সৃষ্টি করলো। ছাত্র জনতার মাঝে ক্ষোভ সৃষ্টি হলো।

শেখ হাসিনা তড়িৎ গতিতে সেই ক্ষোভ প্রশমিত করতে না করতেই মৌলবাদী, ধর্মান্ধ, রাজনৈতিক দুষ্ট চক্র সাম্প্রদায়িক সংঘাত সৃষ্টি করলো। এর রেশ কাটতে না কাটতেই গতকাল সরকারের নিয়মিত মানবিক কার্যক্রমের অংশ হিসাবে দুস্ত সাংবাদিক গণের চিকিৎসা ও অন্যান্য সহায়তা প্রাদানেও রাজনৈতিক জালিয়াতি করে বসলো।

এ বিষয় টি মুলত তথ্য ও সাংস্কৃতিক মন্ত্রণালয়, সাংবাদিক ইউনিয়ন এর সরকার সমর্থক ইউনিয়ন, প্রেস ক্লাব ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রেস উইং দেখবাল করেন। এবং তাদের সার্বিক যাছাই বাছাইয়ের মাধ্যদিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আনুষ্ঠানিক ভাবে অনুদান অনুষ্ঠান সম্পাদন করেন।

এসব অনুষ্ঠান ও অনুদান কারা পাবে না পাবে এসবের ও একটি গোয়েন্দা রিপোর্ট প্রয়োজন পড়ে প্রশাসনিক রীতিনীতি অনুযায়ী। এসব ধাপ পেরিয়ে অনুদান, সাক্ষাৎ, সফর লোকজন নির্ধারিত হওয়ার কথা। কিন্তু মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তিন মেয়াদের এসব ব্যবস্থাপনার মধ্যে বারে বারে বিতর্ক, সন্দেহ, আপত্তি,অপরাধী কিভাবে অংশগ্রহণ করতে পারে তা নিয়ে নিয়মিত বিতর্ক, সমালোচনা, বিদ্রোপ ও ক্ষোভের সঞ্চার হয়ে আসছে।

প্রশ্ন হচ্ছে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এসব দেখবালের জন্য যাদের দায়িত্ব দেন তারা তাহলে শেখ হাসিনার পরিক্ষিত লোক নয়।এর ভেতর ভেজাল আছে। এখন জন মনে একটি কথাই প্রচলিত হয়েছে শেখ হাসিনা যাকেই বিশ্বাস করে দায়িত্ব দেন না কেন অধিকাংশই মোনাফেক, খন্দকার মোস্তাকের প্রেতাত্মা, প্রেতাত্মা তাহের উদ্দিন ঠাকুরের।

এই মুহুর্তে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক, জাতিয় চার নেতার অন্যতম রক্তধারা মরহুম সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম এর সেই অমিয় বাণীর কথা,তিনি তাঁর এক বক্তব্যে বলেছেন "আওয়ামীলীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগের মধ্যে যেমন বীরের জন্মহয়,ঠিক একি ভাবে বিশ্বাস ঘাতকের ও জন্মহয়"

গতকাল ৭ অক্টোবর ০১৯ তারিখ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুস্ত, অসুস্থ, অসহায় সাংবাদিকদের সহায়তা প্রদান অনুষ্ঠানে অনুদান প্রাপ্ত দুস্ত সাংবাদিকের মধ্যে এমন এক ভূয়া সাংবাদিকের অনুদান গ্রহণের ছবি দেখে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে জনমনে, আওয়ামীলীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ, সাংবাদিক মহলে।
এই অনুদান গ্রহীতার মধ্যে অনেক কে নিয়েই বিতর্ক শুরু হয়েছে পাশাপাশি ক্ষোভ পরিলক্ষিত হচ্ছে।

বাংলাদেশের দক্ষিণ চট্টগ্রামের লোহাগড়া উপজেলার চরম্বা ইউনিয়নের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও সাবেক শিবির ক্যাড়ার ও জামাত নেতা, বহু নাশকতা মামলার আসামি, সাতকানিয়া লোহাগড়ার আওয়ামী রাজনীতি ও নেতাকর্মীদের মূর্তিমান আতংক সাদাত উল্লাহ কিভাবে এই অনুদানের চ্যাক পায় ও নেয়।

তাকে কারা সিলেকশন করলো?সে অনুদান পাওয়ার উপযুক্ত কি-না? গোয়েন্দা রিপোর্ট কই গেছিলো। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা ইউনিটের কাজ কি?এমন প্রশ্নও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাসছে।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা নিয়েও জনমনে সংশয় দেখা দিয়েছে।

প্রশ্ন আসছে অতিতে যারা সাতকানিয়া লোহাগাড়ায় জীবনের ঝুকি নিয়ে আওয়ামীলীগ, ছাত্রলীগ,ও আওয়ামীলীগ নেতাদের পক্ষে নিউজ কাবার করেছে,দেশের স্বার্থে, আওয়ামীলীগের স্বার্থে দুর্দিনে সাংবাদিকতা করতো তাদের বঞ্চিত করা হলো কেন?কার স্বার্থে বারবার জনগণ ও তৃণমূল নেতাকর্মীদের মনে মানসিক আঘাত করার কারণ কি?

কেন নেতাকর্মীদের নেত্রীর প্রতি যে বিশ্বাস ও আস্থা আছে সেই বিশ্বাস ভেঙ্গেদিতে কারা কলকাটি নাড়ছে।
সাইদি’র চাঁদে উঠার সময়ে কোন নেতা মন্ত্রী যখন অরাজকতা ঠেকাতে মাঠে নামেনি, দলের স্বার্থে, শেখ হাসিনা কে ভালোবেসে, বিশ্বাস করে রাজপথে ছিলো তাদের আস্থা হারানোর কারণ কি? ওরা কারা এদের খুব দ্রুত চিহ্নিত করা হোক।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনি নিজেই জানেন বিগত জোট সরকারের সময়ে এই জামাতি হায়েনা গোষ্ঠী কত সাংবাদিক, সম্পাদক কে হত্যা করেছে। এখনো তাদের হত্যার বিচার সম্পন্ন হয়নি।কত দেশি-বিদেশি সাংবাদিক কে গ্রেফতার হয়রানি করা হয়েছে, বিখ্যাত ক'জন সাংবাদিক ছাড়া আওয়ামীলীগের ওয়েব সাইটেও সঠিক তথ্য নাই।অথচ আপনার শহীদ সাংবাদিকদের রক্তের উপর পা দিয়ে আপনার প্রেস উইং, আপনার পুষ্য সাংবাদিক নেতারা এই শিবির ক্যাড়ার ভূয়া সংবাদিক পরিচয়ে অনুদান পায় কি করে।এসব কিসের ইঙ্গিত বহন করে।

অথচ এই ব্যাক্তি তার ফেইসবুক আইডি তে নিয়মিত সরকার ও শেখ হাসিনা বিরোধী অপপ্রচার ও জঙ্গিবাদ প্রচার করতো। বিষবাষ্প ছড়াতো সাম্প্রদায়িকতার। বর্তমানে সে ওসব ওনলি মি করে রেখেছে।এর ভেতর ও কয়েকটি স্কিনশট সাথে দিলাম।

আমিতো মনে করি সম্প্রতি কয়েকটি সাংবাদিক সম্মেলনে ক্যাসিনো বিষয়ক প্রশ্নে উল্টো যখন তাদের অবহেলা ও তাদের মাসোহারা নিয়ে ইঙ্গিত করলেন, সম্পাদকের চাঁদাবাজি তথ্য ফাস করলেন সেই সব বিষয় কে উল্টো প্রশ্নবিদ্ধ করতে তারা তালিকা প্রণয়ন করে নিতো?

এই সংবাদ দেখে ও পড়ে লোহাগাড়ার এক ছাত্রনেতা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যেমে হতাশা ব্যাক্ত করেছে এভাবে "আওয়ামীলীগ কে দুর্দিনে পুলিশ, শিবির, ছাত্রদল যুবদলের হামলা মামলা খেয়ে জীবন বাজি রেখে আওয়ামীলীগ কে সংগঠিত করি আমরা।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কে ক্ষমতায় বসাই আমরা। চাইনাতো কিছুই, কিন্তু আমরা শেখ হাসিনার সাথে সাক্ষাৎ করে পায়ে ধরে সালাম করার সুযোগ ও পাইনা বছরের পর বছর অপেক্ষা করে।অথচ জামাত শিবিরের ক্যাড়ারেরা আমার প্রাণের নেত্রীর থেকে দুই দুই বার সাক্ষাৎ ও অনুদান পায়।আগামীতে যদি খোদা না করুক আওয়ামীলীগ যদি কোন না কোন কারনে ক্ষমতায় না থাকে মিটিং এ মাইক ধরার জন্য লোক পাবেনা"

আমি জানিনা আমার এ লেখা শেখ হাসিনার কাছে পৌছাবে কি-না, তবুও আমিও এই আওয়ামীলীগের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী র জন্য নির্যাতিত, আঘাত প্রাপ্ত বলে না লিখে পারলাম না।

পরিশেষে বলতে চাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমি লজ্জিত আহত হয়েছি,আপনার বিশ্বাসী মোনাফেক, বিশ্বাস ঘাতক এসব কর্মকর্তা, কর্মচারী, দলিয় নেতা, এমপি ও সাংবাদিক নেতাদের জামাত শিবির কানেকশনের কারনে। আমি মর্মাহত আপনার বিশ্বস্ত কর্মকর্তা, গোয়েন্দাদের দায়িত্ব অবহেলার কারনে। এদের উচিৎ হয়নি সাতকানিয়া লোহাগড়ার তৃণমূল ত্যাগি, নির্যাতিত মুজিব সেনাদের মনে আঘাত দেয়ার কারণে।
আপনি নিজেই এক বক্তব্যে বলেছেন আপনার গণভবনের কর্মকর্তা, কর্মচারীদের ও শুদ্ধি অভিযানের আওয়াতায় আনবেন। নাহয় অন্যকোন বড় ধরনের অপরাদ কর্ম, নাশকতা ঘটতে কতক্ষণ। কথায় আছে "ঘর পোড়া গরু সূদুরে মেঘ দেখলে ভয় পায়"।

আমরা যারা আপনাকে ভালোবেসে নিজের স্বর্ণালি জীবন নষ্ট করেছি আমাদের বারেবারে আপনাকে নিয়ে ভয় হয়।ভালোবাসি বলেই।


লেখক : নব্বইয়ের নির্যাতিত ছাত্রনেতা ও কবি, কক্সবাজার।