শেখ আহসানুল করিম, বাগেরহাট : ঘূর্ণিঝড় বুলবুল উপকূলে ধেয়ে আসার খরবে রাস পূর্নীমা উপলক্ষে সুন্দরবনের আলোরকোলে শত বছরের ঐতিহ্য রাস উৎসব বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। একই সাথে দুবলারচরের শুঁটকি পল্লীর ১৫ হাজার জেলে ও দেশী-বিদেশী পর্যটকদের হ্যারিটেজ সাইড এই ম্যানগ্রোভ বনে প্রবেশ বন্ধ ঘোষনা করে বর্তমানে ভ্রমনে থাকা শত-শত পর্যটকদের ফিরিয়ে আনা হচ্ছে। মোংলা আর্ন্তজাতিক বন্দরে জারি করা হয়েছে বিশেষ সতর্কতা। বাগেরহাটে প্রস্তুত হয়েছে ২৩৪টি আশ্রয় কেন্দ্র। ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের কারনে বঙ্গোপসাগর উত্তাল হয়ে উঠেছে। আছড়ে পড়ছে বিশাল-বিশাল ঢেউ। বইছে ঝড়ো হাওয়া। এই অবস্থায় সাগরে টিকতে না পেরে সুন্দরবনসহ উপকূলের মৎস্য বন্দরে ফিরতে আসছে ফিশিং ট্রলারগুলো। বাগেরহাটে থেমে-থেমে বৃষ্টি ও দমকা হাওয়াার মধ্যে ঘূর্ণিঝড় বুলবুল মোকাবেলায় জনসাধারনকে সচেতন করতে জেলাব্যাপী শুরু হয়েছে মাইকিং। 

শুক্রবার দুপুরে বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদের সভাপতিত্বে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায় জেলার ২৩৪টি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্র ও ১০টি মেডিকেল টিম প্রস্তুত রাখার করা জানানো হয়েছে। খোলা হয়েছে ১০টি কন্টোল রুম। ঘূর্ণিঝড় বুলবুল মোকাবেলায় জেলাব্যাপী শুরু হয়েছে মাইকিং।

সুন্দরবনে দুবলারচরে শুঁটকি পল্লীতে অবস্থারত ১৫ হাজার জেলেকে ফিরিয়ে আনতে বাগেরহাটের জেলা প্রশাসন কোস্টগার্ড ও নৌবাহিনীর সাথে সমন্ময় করে কাজ করছে। ঘূর্ণিঝড়ের কারনে রাস পূর্ণিমাকে সামনে রেখে ১০ নভেম্বর থেকে সুন্দরবনের আলোরকোলে শুরু হতে যাওয়া ৩ দিনব্যাপী রাস উৎসব বন্ধ ঘোষনা করা হয়েছে বলে সবায় জানান সুন্দরবন রাস উৎসব কমিটির জেলা সভাপতি বাবুল সরদার।

বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. মাহমুদুল হাসান জানান, ঘূর্নিঝড়ের আগাম প্রস্তুতি হিসেবে সুন্দরবনের দেশী-বিদেশী পর্যটকদের ভ্রমনে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার পাশাপাশি বনের ভ্রমনে থাকা পর্যটকটের ফিরিয়ে আনার কাজ শুরু হয়েছে। একই সাথে সুন্দরবন বিভাগের ৮৩ বন অফিসের প্রায় ৮ শত কর্মকর্তা ও বনরক্ষীদের ঘূর্ণিঝড় শুরু হলে প্রথমে নিজেদের জীবন বাঁচাতে নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

মোংলা বন্দও কর্তৃপক্ষের হারবার মাষ্টার কমান্ডার শেখ ফকর উদ্দিন জানান, বিশেষ সতর্কতা জারির পাশাপাশি ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের ক্ষয়ক্ষতি মোকাবেলায় মোংলা আর্ন্তজাতিক সমুদ্র বন্দরে খোলা হয়েছে ৩টি কন্ট্রোল রুম।

বন্দরে এই মুহুর্তে মেশিনারী, ক্লিংকার, সার, জিপসাম, পাথর, সিরামিক ও কয়লাসহ দেশী-বিদেশি মোট ১৪টি বাণিজ্যিক জাহাজ অবস্থান করছে। এসব জাহাজে পণ্য খালাসে সতর্কতা জারি করা হয়েছে।

ঘূর্ণিঝড়ের সংকেত ৫ নম্বারে উঠলেই পন্য বোঝাই ও খালাসের কাজ বন্ধ করাসহ সকল জাহাজকে জেটি ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে নোঙ্গর করতে নির্দেশনা জারি করা হবে।

(এসএকে/এসপি/নভেম্বর ০৮, ২০১৯)