রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা : ঘূর্নিঝড় ‘বুলবুলে’র প্রভাবে সাতক্ষীরায় শনিবার সকাল থেকে বৃষ্টি হচ্ছে। এখনো  সূর্যের মুখ দেখা যায়নি। বেলা বাড়ার সাথে সাথে বৃষ্টির সাথে বাতাসের তীব্রতা বেড়েছে।  জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ১০নং সতর্ক সংকেত জারি করা হয়েছে।

‘বুলবুলে’র সম্ভাব্য আঘাত মোকাবেলায় সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসন ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে।

শুক্রবার সন্ধ্যায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত দুর্যোগ মোকাবেলা কমিটির সভায় জেলা প্রশাসক এসএম মোস্তফা কামাল জানান, সুন্দরবন সংলগ্ন উপকূলীয় উপজেলা শ্যামনগর, আশাশুনি ও কালিগঞ্জসহ সাতটি উপজেলায় সতর্কতা জারি করা হয়েছে। শনিবার সকাল থেকে শ্যামনগরের গাবুরা, পদ্মপুকুর, বুড়িগোয়ালিনি, আটুলিয়া ,মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়ন, আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর ইউনিয়নের মানুষদের সাইক্লোন শেল্টারে নিয়ে আসার কাজ চলছে।

শ্যামনগরের গাবুরা ও পদ্ম পুকুরের মানুষদের নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে আসার জন্য যশোর থেকে এক পদাতিক সেনা বাহিনী চাওয়া হয়েছে। সুন্দরবন সংলগ্ন মাহমুদা, চুনি, কালিন্দি, কপোতাক্ষ ও থোলপেটুয়া নদীতে পানি বেড়েছে। রাস্তাঘাটে মানুষজন ও যানবাহন চলাচল কম রয়েছে। মানুষজনকে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রচারনা চলছে। জেলার ৮৫৬ কিলোমিটার ভেড়িবাঁধের মধ্যে আশাশুনির প্রতাপনগরের চাঁকলা, শ্যামনগরের বুড়িগোয়ালিনি ইউনিয়নের দাঁতিনাখালি, মাদিয়া, পুশ্চিম দুর্গাবাটি, গাবুরার ডুমুরিয়া, পদ্ম পুকুর, কৈখালি, কাশিমাড়ি, মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়নের ছোটভেটখালি শেখপাড়া ও রমজাননগরের একাংশসহ ৭০টি পয়েন্টে বেড়িবাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ বলে জানা গেছে।

এদিকে বিকেল চারটা পর্যন্ত ৯২ হাজার নারী , পুরুষ ও শিশুকে নিরাপদ আশ্রয়ে নেওয়া হয়েছে বলে জেলা প্রশাসক দাবি করেছেন।

জেলা প্রশাসক আরো জানিয়েছেন এরই মধ্যে ২৭০ টি আশ্রয়শিবির প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ১২৫২ টি স্কুল কলেজ মাদ্রাসা ফাঁকা করে রাখা হয়েছে। জেলার ৭৮টি ইউনিয়নের প্রত্যেকটিতে একটি করে মেডিকেল টিম প্রস্তুত রাখা হয়েছে। দুর্গত মানুষদের সহায়তায় কাজ করছে ২২ হাজার স্বেচ্ছাসেবক। দুর্যোগ কবলিতদের সহায়তায় ৩০০ মেট্রিক টন চাল, ২৮০০ প্যাকেট শুকনো খাবার, পানীয় জল, ওষুধপত্র, পাঁচ লাখ ১০ হাজার নগদ টাকা মজুদ রাখা হয়েছে।

রেডক্রিসেন্ট , স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী, মেডিকেল টিম, নৌ ও স্থলযান প্রস্তুত রাখা হয়েছে। একইভাবে পুলিশ, বনবিভাগ ,কোস্টগার্ড, র‌্যাব ও বিজিবির পক্ষ থেকেও উপকূলীয় এলাকায় বুলবুল মোকাবেলায় আগাম ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। জেলা প্রশাসক জানান সরকারি কর্মকর্তাদের ছুটি বাতিল ঘোষনা করা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত তাদের কর্মস্থল ত্যাগ করতে নিষেধ করা হয়েছে।

(আরকে/এসপি/নভেম্বর ০৯, ২০১৯)