পাথরঘাটা (বরগুনা) প্রতিনিধি : বরগুনার পাথরঘাটার উপকূলীয় এলাকার মানুষ ও বিভিন্ন প্রাণী রাতে আশ্রয় কেন্দ্রে না গেলেও আজ শনিবার দুপুর থেকে আশ্রয় কেন্দ্রে যেতে শুরু করেছে। জেলা ও উপজেলা প্রশাসন ইতিমধ্যেই জরুরী সেবা দিতে খুলেছেন কন্ট্রোলরুম। চলছে ঘন ঘন মাইকিং আর সাইরেন বাঁজিয়ে জনসাধারনকে সতর্ক করনের প্রক্রিয়া।

উপকূলীয় এলাকার গাব্বারিয়া,টেংরা,তাফালবাড়িয়া, পদ্মা, নিজলাঠিমারা, চরলাঠিমারা, গাববাড়িয়া, চরদুয়ানী সহ বিষখালী ও বলেশ্বর নদী সংলগ্ন বেড়িবাঁধ ঘুরে দেখা গেছে, এখানকার বাসিন্ধারা তাদের মালামাল নিয়ে আশ্রয় কেন্দ্রে ছুটে চলেছেন, শিশু ও বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সেচ্ছাসেবকরা আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে যাচ্ছেন।

বলেশ্বর নদী সংলগ্ন চরদুয়ানী ইউনিয়নের সিপিপি টিম লিডার হারুন অর রশিদ জমাদ্দার মুঠোফোনে জানান,আমরা এখন নদীর পাড়ে সতর্কাবস্থায় রয়েছি। বুলবুলের তান্ডব থেকে রক্ষাপেতে ইতিমধ্যেই নদীর তীরবর্তি জনসাধারনকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেয়ার জন্যে সেচ্ছাসেবকরা সক্রিয় আছে।

বিষখালী নদী সংলগ্ন উত্তরণ আবাসনের বাসিন্দা আ. ছোবাহান জানিয়েছেন, সিডরে সব কিছু খুয়াইছি, এখন কোন কিছু হারাইতে চাইনা। তাই আমরা সকলকে নিয়ে মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সে অবস্থান নিয়েছি।

এদিকে ঘূর্ণিঝড় বুলবুলকে কেন্দ্র করে উপকূলবর্তী এলাকায় ১০ নম্বর বিপদ সংকেত জারির পরে ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচি (সিপিপি), রেডক্রিসেন্টসহ বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সেচ্ছাসেবকরা মাইকিং শুরু করেছে। পাশাপাশি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী, পুলিশ, আনসার, ফায়ার সার্ভিস, সেচ্ছাসেবী সংগঠন ও রোভার স্কাউটের সদস্যরাও উপকূলের বাসিন্দাদের নিরাপদে আশ্রয় যাওয়ার জন্য কাজ করছেন।

আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে বলা হয়েছে, ঘূর্ণিঝড় ও মুন ফেজ এর প্রভাবে উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, বরগুনা, ভোলা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোর নিন্মঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৫-৭ ফুট অধিক উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে। উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।

পাথরঘাটা উপজেলা চেয়ারম্যান মোস্তফা গোলাম কবির আমাদের সময়কে বলেন, আমাদের সকল প্রস্তুতি রয়েছে। শুক্রবার রাত থেকেই বেড়িবাঁধ এলাকাসহ বিভিন্ন জায়গায় নিরাপদে যাওয়ার জন্য মাইকিং করা হয়েছে। এখনও মাইকিং চলছে। নিরাপদ স্থানে আশ্রয় কারীদের জন্য শুকনো খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

শনিবার বিকাল ৩টায় এরিপোর্ট তৈরিকালে বরগুনার বিষখালী নদীর তিরঘেষা পাথরঘাটা পৌরএলাকায় মাইকিং করতে দেখা গেছে। মাইকে প্রচারকালে জয় বিশ্বাস নামক এক সেচ্ছাসেবকের সাথে কথা বলে জানাগেছে, সিডর আক্রান্ত এলাকা বিধায় মানুষ অনেকটা আতংগ্রস্থ। যারফলে সন্ধ্যেনামার আগেই অধিকাংশ বাসিন্ধারা নিরাপদ আশ্রয়ে ছুটে যাবে বলেও তার বিশ্বাস।

বিকাল থেকে প্রচন্ড বৃষ্টি হচ্ছে, বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। বুলবুলের সমুহ বিপদ থেকে জানমাল রক্ষায় মসজিদ-মন্দিরে চলছে বিশেষ প্রার্থনা।

(এটি/এসপি/নভেম্বর ০৯, ২০১৯)