অমল তালুকদার, পাথরঘাটা (বরগুনা) : বরগুনার পাথরঘাটা সহ গোটা উপকূলজুড়ে এক অজানা আতঙ্ক। নির্ঘুম রাত কেটেছে বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রের আশ্রিতদের। ঘূর্ণিঝড় বুলবুল কোথায় আছড়ে পরে!

বরগুনার পাথরঘাটায় স্থানীয় প্রশাসন,সাংবাদিক এবং রাজনীতিকদের যৌথ তৎপরতায় বন্যার্তরা নিরাপদে ছিলো। এখানকার উপজেলা নির্বাহী অফিসার মি. হুমায়ুন কবিরকে রাতভর নানা আশ্রয়কেন্দ্রে ঘুড়ে ঘুড়ে সুকনো খাবার, মোমবাতি ইত্যাদি বিতরন করতে দেখাগেছে।

এছাড়াও পৌরমেয়র মি.আনোয়ার হোহেন আকন সহ তার কাউন্সিলরদের সঙ্গে নিয়ে পৌর এলাকা ও তদ্বসংলগ্ন এলাকার বাসিন্ধাদের নিরাপদ আশ্রয়ে পৌছে দিতে শনিবার দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত মাঠে দেখা গেছে। পাথরঘাটা কলেজের ক্যাডেটের ছাত্রদের বন্যার্তদের আশ্রয়কেন্দ্রে পৌছুনোর কাজে নিয়োজিত থাকতে দেখাগেছে। স্থানীয় সিপিবি,সদস্যরা রাতভর ছিলো তৎপর।

এছাড়াও উপজেলা চেয়ারম্যান মোস্তফা গোলাম কবির বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রের আশ্রিতদের সুকনো খাবার বিতরন করেন। সকল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান-মেম্বরেরা রাতভর আশ্রিতদের খোজখবর নিয়েছেন বলে জানাগেছে।

গোটা এলাকাজুড়ে এখন অন্ধকার।বিদ্যুৎ সংযোগ কবে পাওয়া যাবে তার খবর কেউ জানেন না।
রাতে বুলবুল সুন্দরবনের ভারতীয় অংশে আছড়ে পরলে ভারতের উপর দিয়েই সকল ধরনের ধ্বংসযজ্ঞের সমাপ্তি ঘটে। বাংলাদেশের দক্ষিন উপকূলে রয়ে যায় তার রেশ। আজ রবিবার ভোর থেকে চলছে প্রচন্ডগতিতে ঝড়বাতাস। পাথরঘাটায় শত শত গাছপালা উপরে গেছে। আমনধানের মাঠে ব্যপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা কৃষকদের। অনেক কাঁচাঘরের চালা উপরে গিয়ে অন্যত্র পরেছে।

পাথরঘাটার খলিফারহাট এলাকা থেকে সমাজসেবক কামালউদ্দিন কুদ্দুছ মুঠোফোনে জানান,দক্ষিন চরদুয়ানী এলাকার বাসিন্ধা জামালের বসতঘর ঝড়ে বিধ্বস্ত হয়েছে।

কাঠালতলী এলাকার সিপিবি সদস্য টুটুল মাঝী মুঠোফোনে জানান,পরিঘাটা গ্রামজুড়ে গাছপালা আর উঠতি রবিশষ্য তছনছ করে দিয়েছে বুলবুলের বিদায়ী ঝড়ে।

কাঠালতলী বাজারের সুদেবী রানী জানান,রবিবার ভোররাত থেকে বয়ে যাওয়া ঝড়োবাতাসের তান্ডবে বিশাল গাছ ভেঙ্গে পরেছে ঘরের উপরে।

কালিপুর গ্রামের গৌতম মৃধা জানান,গাছপালা ভেঙ্গে তছনছ হওয়ার খবর।

চরদুয়ানী এলাকার বাসিন্ধা শুভঙ্কর হাওলাদর মুঠোফোনে জানান, ঝড়ে মূল্যবান রেইন্ট্রি,চাম্বল গাছ ভেঙ্গে উপরে পরেছে,পাশাপাশি বিভিন্ন ফলের গাছও ধ্বংস হয়েছে।

পাথরঘাটা উপজেলা নির্বাহি অফিসার মো.হুমায়ুন কবির আজ দুপুর পৌনে ১২টায় মুঠোফোনে ভোরের কাগজকে বলেন,আমরা সারারাত মানুষের খোঁজখবর নিয়েছি,সুকনো খাবার পৌছে দিয়েছি। এখন চারদিকে কেউ অভুক্ত রয়েছে কিনা তার খবর নিচ্ছি ।

অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, কোথাও মানুষের ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি তবে গরু বাছুর মারা যাওয়ার কথা শুনেছি।

উপজেলা চেয়ারম্যান মোস্তফা গোলাম কবির জানান, ঝড়োবাতাসে কোথায় কি ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে; প্রাথমিকভাবে তা বলা মুশকিল।আমরা চারদিকের খোঁজ খবর নিচ্ছি।

(এটি/এসপি/নভেম্বর ১০, ২০১৯)