বেরোবি প্রতিনিধি : বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) চলমান ভর্তি পরীক্ষায়  বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অবহেলা এবং মেডিকেল সেন্টারের অব্যবস্থাপনায় প্রাথমিক চিকিৎসাও পাননি ভর্তি-ইচ্ছুক ৩ শিক্ষার্থী। ফলে দুরদুরান্ত থেকে আসলেও তারা ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারেননি। পরে বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিকদের সহযোগিতায় তাদেরকে রংপুর মেডিকেলে চিকিৎসা দেওয়া হয়।

আজ ১ম বর্ষ ভর্তি পরীক্ষার প্রথম দিন ‘এ’ ইউনিটের দ্বিতীয় শিফটে এ ঘটনা ঘটে। সকাল ১১টা থেকে ১২টা পর্যন্ত ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের ১ম বর্ষ ভর্তি পরীক্ষার ‘এ' ইউনিটের (কলা অনুষদ) দ্বিতীয় শিফটে পরীক্ষা গ্রহণ করা হয়। পরীক্ষা শুরু হওয়ার প্রায় ১ ঘণ্টা আগে নরসিংদির ঘোড়াশালের আফসানা আকতার নামের এক শিক্ষার্থী শারিরীকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন। ভর্তি পরীক্ষায় বিশেষ মেডিকেল টিম থাকার কথা থাকলেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উদাসীনতা লক্ষ্য করা যায়। মেডিকেল সেন্টারে তাকে নিয়ে যাওয়া হলে মেডিকেল সেন্টারের কর্মরত কোন চিকিৎসককে তাৎক্ষনিক পাওয়া যায়নি।

পরে এক চিকিৎসক মেডিকেল সেন্টারে আসলে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার সরঞ্জামাদি না থাকায় অপরগতা প্রকাশ করেন মেডিকেল সেন্টার কর্তৃপক্ষ। পরে তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজে (রমেক) নিয়ে গিয়ে ভর্তি করান হয়।

এর কিছুক্ষণ পর আরও দুই পরীক্ষার্থী নীলফামারী থেকে আসা ইয়াসমিন ও পাবনা থেকে আসা রোকসানা অসুস্থ হয়। কিন্তু সেখানে ছিলো না কোন স্ট্রেচারের ব্যবস্থা। বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কাউট, বিএনসিনি ও সাংবাদিক সমিতি সদস্যদের সহযোগীতায় মেডিকেল সেন্টারে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু চিকিৎসা না মেলায় নিয়ে যাওয়া হয় রংপুর মেডিকেল কলেজে।

এদিকে শিক্ষার্থী অসুস্থতার ঘটনায় সাংবাদিকদের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে কোন শিক্ষক-কর্মকর্তা কিংবা কর্মচারী কেউ সঙ্গে যাননি। এমনকি তারা কোন কার্যকর পদক্ষেপ নেননি। মেডিকেল টিম থাকলেও তাদের বেশিরভাগ পরীক্ষার হলে ডিউটিতে ছিলেন। সম্প্রতি ডিজিটাল ও অত্যাধুনিক মেডিকেল সেন্টার ঘটা করে উদ্ধোধন করলেও ভর্তি পরীক্ষার সময় প্রাথমিক কোন সেবা দিতে না পারাকে কর্তৃপক্ষের উদাসীনতাকে দায়ী করছেন অনেকেই।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী ও ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টারকে ডিজিটাল ঘোষণা করলেও সেখানে কোন প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার সরঞ্জামাদি নেই। পরীক্ষা শুরু হওয়ার এক ঘণ্টা আগেও তারা বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসা পাননি। প্রথমিক চিকিৎসা পেলে ভর্তিচ্ছু পরীক্ষার্থীরা পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারতেন।

বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেলকে ডিজিটাল ঘোষণা করেও মেডিকেল সুবিধা না থাকার বিষয়ে প্রক্টর (চলতি দায়িত্ব) আতিউর রহমান বলেন, মেডিকেল টিম আমাদের আছে কিন্তু কেন এমন হলো বুঝতে পারছিনা। হয়তো দায়িত্বে অবহেলা করেছে তারা। বিষয়টা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

(এম/এসপি/নভেম্বর ১০, ২০১৯)