বাগেরহাট প্রতিনিধি : বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলার সাউথখালী ইউনিয়নের বকুলতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নাসির উদ্দিন মুক্তা’র নির্দেশে পরাতন স্কুল ভবনের ইট নতুন ভবনের তিন তলার ছাদে তুলতে গিয়ে ডান হাতের কনুইয়ের হাড় ভেঙ্গেছে পঞ্চম শ্রেনীর এক ছাত্রের। 

সোমবার সকালে স্কুলের ক্লাস রেখে প্রধান শিক্ষকের নির্দেশ পালনে করতে গিয়ে মারুফ হোসেন (১১) নামের ওই শিশুটির হাত ভেঙ্গে গেলে প্রধান শিক্ষক গোপনে উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়েছেন।

চিকিৎসকরা বলছেন, উপজেলা হাসপাতালে হাড় ভাঙ্গার কোন চিকিৎসক না থাকায় শিশুটিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য প্রধান শিক্ষককে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলেছেন বলে দাবী করেছেন, শরণখোলা উপজেলা হাসপাতালের চিকিৎসক মাশরুরুল হক জুনায়েদ। তবে, প্রধান শিক্ষক শিশুটিকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে না নিয়ে বাড়িতে পাঠিয়ে তার দায়িত্ব শেষ করেছেন।

আহত শিশুটির মা মাশুরা বেগম জানান, তার স্বামী একজন প্রতিবন্ধী। মানুষের বাড়ি দিনমজুরীর কাজ করে যা পান তা দিয়ে সংসারই চলেনা। সোমবার সকালে অন্য ছাত্রদেন সাথে প্রধান শিক্ষকের নির্দেশে পরাতন স্কুল ভবনের ইট নতুন ভবনের তিন তলার ছাদে তুলতে গিয়ে আমান ছেলের হাত ভেঙ্গেছে। প্রধান শিক্ষক হাতে ব্যান্ডেজ করে বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়ার পর তার ছেলের আর কোনো খোঁজখবর নেইনি।

বকুলতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র অভিভাবক মো. বাবুল খান জানান, আমার ছেলে জিয়াদ ওই বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ে। ছোট ছোট ছাত্রদের দিয়ে তিন তলার ছাদে ইট উঠাতে দেখে তিনি প্রধান শিক্ষককে বার বার বারণ করা সত্বেও তিনি আমার কথা আমলে নেননি।

সাউথখালী ইউপি সদস্য দেলোয়ার হোসেন খলিল জানান, প্রধান শিক্ষক নিজে হাতে বেত নিয়ে দাঁড়িয়ে থেকে ছাত্রদের দিয়ে ইট তিন তলার ছাদে উঠিয়েছেন। এখন গ্রাম থেকে চাঁদা তুলে শিশুটির চিকিৎসায় সহযোগীতার চেষ্টা চলছে।

শরণখোলা উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা সরদার মোস্তফা শাহীন বলেন, আহত শিশুর পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ পেয়ে মঙ্গলবার দুপুরে ওই বিদ্যালয়ে গিয়ে ঘটনার সত্যতা পেয়েছি। এব্যাপারে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আশরাফুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে বলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও একজন এটিইও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তাদের কাছ থেকে বিস্তারিত জেনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তবে, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. নাসির উদ্দিন মুক্তা বলেন, আমি কোনো ছাত্রদের ইট ওঠাতে বলিনি। তারা নিজেরাই উৎসাহিত হয়ে উঠিয়েছে। ক্লাস ফেলে ছাত্ররা স্কুলের তিন তলার ছাদে ইট তুলতে দেখে আপনি বারন করেননি কেন ? এমন প্রশ্ন করা হলে প্রধান শিক্ষ কোন উত্তর দেননি। তবে, আহত ছাত্রকে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে বলে তিনি দাবী করেন।

(এসএকে/এসপি/নভেম্বর ১২, ২০১৯)