আঞ্চলিক প্রতিনিধি, বরিশাল : ঘুর্ণিঝড় বুলবুলের ছোবলে লন্ডভন্ড আগৈলঝাড়া উপজেলার ক্ষয়-ক্ষতির তালিকা নিরুপন করেছে উপজেলা প্রশাসন।

রবিবার (১০ নভেম্বর) দুপুরে বয়ে যাওয়া ঝড়ের পর সোমবার দুপুরে উপজেলা প্রশাসনের সাথে ঘুর্ণিঝর বুলবুলের দুর্যোগ পরবর্তি করনীয় জরুরী সভা করেছেন জাতির পিতার ভাগ্নে, মন্ত্রী পদ মর্যাদায় পার্বত্য শান্তি চুক্তি বাস্তবায়ন ও পরীবিক্ষণ কমিটির আহ্বায়ক আলহাজ্ব আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ এমপি। ওই সভায় উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

সভায় এমপি হাসানাত উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে কর্মকর্ত ও দলীয় নেতা কর্মীদের দ্রুত ক্ষয়-ক্ষতির তালিকা করার নির্দেশ দেন।

এসময় দুর্যোগ মোকাবেলায় ত্রাণ মন্ত্রনালয়ের বরাদ্দকৃত ২০ মেট্টিক টন জিআর চাল ক্ষতিগ্রস্থ লোকজনের মধ্যে ৫০ কেজি করে বিতরনের জন্য ইউএনও বিপুল দাসকে নির্দেশ দেন তিনি।

সরকারী কর্মকর্তা ও ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে বুধবার প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আহসান হাবিববের বরাত দিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিপুল চন্দ্র দাস জানান, প্রাপ্ত তালিকা অনুযায়ি উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নে সম্পূর্ন ও আংশিক বিধ্বস্ত হয়েছে ১ হাজার ৪শ ৪২টি ঘর। ঝড়ে সর্বাধিক ক্ষতি হয়েছে পান বরজের। ক্ষতিগ্রস্থ পান চাষির সংখ্যা ১ হাজার ৮৭জন।

এরমধ্যে রাজিহারে ৩০৬, বাকালে ২৩৫, বাগধায় ৩৩, গৈলায় ২২৬ ও রতœপুর ইউনিয়নে ২২৭জন। চারটি মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ৬লাখ ৯০হাজার টাকা, ৮টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৬ লাখ ৮০হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে। ২০ দশমিক ৭৪ হেক্টর জমির ২০৫টি পুকুরের মাছ ভেসে গিয়ে ৫৫ লাখ ৩৫ হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে। ঝড়ে ৩টি গরু নিহত ও ১০টি আহতসহ ২০৫টি মুরগীর নিহত হয়। প্রাণি সম্পদ খাতে ক্ষতি হয়েছে ৮লাখ ৩৫ হাজার টাকা। ঝরে প্রায় ২৭ হেক্টর জমির বিভিন্ন প্রজাতির আমন ধান, শাক সবজি বিনস্ট হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্থ চাষির সংখ্যা ১ হাজার ৪শ ৪৯জন।

ঝড়ের কবলে পড়ে অশোকসেন গ্রামের জান্নাত খানম(৮), বাকাল গ্রামের কার্তিক মিস্ত্রী (৪০), সেরাল গ্রামের মনির মল্লিক (৪০), ও ভদ্রপাড়া গ্রামের নিলুফা (২০) আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছে। ঝড়ে কয়েক হাজার গাছ উপরে পরে অন্তত কোটি টাকার ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে। তিন দিন পরে উপজেলা সদরে বিদ্যুৎ ব্যবস্থা চালু হয়েছে। বিদ্যুৎ বিপর্যস্থ হওয়ায় কয়েক কোটি টাকার ক্ষতি হলেও পূর্নাঙ্গ তালিকা এখনও করা সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছেন আগৈলঝাড়া পর।রী বিদ্যুৎ জোনাল অফিসের জিডিএম হযরত আলী।

উপজেলা প্রকৌশলী রাজকুমার গাইন জানান, ঝড়ে সড়কের পাশে থাকা গাছ উপরে পড়ে উপজেলার অন্তত ১৫টি আভ্যন্তরীণ সড়কের বিভিন্ন স্থানে ধ্বসে পরে অন্তত ২০ কিলোমিটার পাকা সড়কের ক্ষতি হয়েছে। একইভাবে গাছ উপড়ে রাস্তা ধ্বসে অন্তত ১০ কিলোমিটার কাচা রাস্তার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।

(টিবি/এসপি/নভেম্বর ১৩, ২০১৯)