স্টাফ রিপোর্টার : অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, গত জুন পর্যন্ত দেশে ঋেলাপি ঋণের পরিমাণ ১ লাখ ১৪ হাজার ৯৭ কোটি টাকা। এসব ঋণের মধ্যে ব্যাংকের খেলাপি ১ লাখ ৬ হাজার ৫৫ কোটি টাকা এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ৮ হাজার ৪২ কোটি টাকা।

বুধবার সংসদে গোলাম মোহাম্মদ সিরাজের লিখিত প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী এ তথ্য জানান।

মন্ত্রী আরো বলেন, খেলাপি ঋণ আদায়ের লক্ষ্যে সরকার ইতোমধ্যেই অর্থ ঋণ আদালত আইন, ২০০৩ প্রণয়ন করেছে। এ আইনের আলোকে খেলাপি ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হচ্ছে।

মন্ত্রী বলেন, ২০১৮-১৯ অর্থবছরের ২০১৮ সালের ১ জুলাই থেকে চলতি বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত শ্রেণিকৃত ঋণের বিপরীতে ১৬ হাজার ৮শ' ২৬ কোটি টাকা আদায় করা হয়েছে।

মহিবুল রহমান মানিকের প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, ব্যাংকসমূহে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ব্যাংক কোম্পানি আইন, সংশোধনের মাধ্যমে ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ও ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব, কর্তব্য এবং কর্মপরিধি সম্পর্কে দিক-নিদের্শনা দেয়া হয়েছে। ব্যাংকের ঝুঁকি মোকাবেলায় ১২ ধরণের পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে বলে জানান মন্ত্রী।

মো. মহিববুর রহমানের প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, সরকারি কর্মচারীদের জন্য ব্যাংকিং ব্যবস্থার মাধ্যমে গৃহ নির্মাণ ঋণ প্রদান কার্যক্রম চলমান রয়েছে। নীতিমালা অনুযায়ী তারা রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাংক সোনালী, রূপালী, জনতা, অগ্রণী ও বাংলাদেশ হাউস বিল্ডিং ফাইন্যান্স কর্পোরেশনে অনলাইনে সরাসরি আবেদন করে থাকে। গত ৩ নভেম্বর-১৯ পর্যন্ত ২৪৬ জন সরকারি কর্মচারি ঋণের আবেদন করলেও ১৯০ জন এ সুবিধা পেয়েছেন। আবেদনে ত্রুটি থাকায় ৫৬ জনের আবেদন প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এ নীতিমালার আওতায় একক আবেদনকারী কেবলমাত্র জমি ক্রয়ের জন্য কোন ঋণ সুবিধা পাবেন না। তবে, গ্রুপভিত্তিক জমি ক্রয়সহ বাড়ি নির্মাণের জন্য ঋণ প্রদানের ব্যবস্থা রয়েছে।

পীর ফজলুল রহমানের প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, বাংলাদেশ থেকে বিদেশে অর্থ পাচার রোধে সরকারের বিভিন্ন সংস্থা নিরলসভাবে কাজ করছে। ইতোমধ্যে বিদেশ হতে পাচার করা অর্থ ফিরিয়ে আনা হয়েছে। বর্তমানে অর্থ পাচার বিষয়ক প্রায় ৪০টি মামলা আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। বিদেশে পাচার হওয়া অর্থ দেশে ফেরত আনতে অ্যাটর্নি জেনারেলের নেতৃত্বে গঠিত আন্তঃসংস্থা টাস্কর্ফোস অর্থ উদ্ধারে কাজ করছে।

গোলাম মোহাম্মদ সিরাজের প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, বর্তমানে দেশে টিআইএনধারী করদাতার সংখ্যা ৪৫ লাখ ১৬ হাজার ৬৩২ জন। ঢাকাসহ ২৭ কর অঞ্চলের মাধ্যমে করদাতারা কর প্রদান করছেন।

বেগম রুমিন ফারহানার প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, বিদ্যমান বিও অ্যাকাউন্টধারীদের মধ্যে সকল বিনিয়োগকারী একই সঙ্গে পুঁজিবাজারে লেনদেন করে না। কিছু সংখ্যাক বিনিয়োগকারী প্রায়শই লেনদেন করেন, কিছু সংখ্যক বিনিয়োগকারী স্বল্প ও দীর্ঘ বিরতির পর লেনদেন করেন।

তিনি আরো বলেন, পুঁজিবাজারে সিকিউরিটিজের মূল্যের উখান-পতন একটি স্বাভাবিক ঘটনা, এর ফলে বিনিয়োগকারীগণ স্বাভাবিক নিয়মেই লাভ-লোকসান করতে পারে।

মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরীর প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, চলতি বছরের সেপ্টেম্বর গত ৯ মাসে বিদেশ থেকে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্সের পরিমাণ ১৩ হাজার ৪৩৮ দশমিক ৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।

(ওএস/এসপি/নভেম্বর ১৩, ২০১৯)