রাণীশংকৈল (ঠাকুরগাঁও) প্রতিনিধি : উত্তরবঙ্গের ভারতীয় সীমান্তবর্তী জেলা ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলায় পেঁয়াজের দাম বেড়ে বর্তমানে ১৮০ টাকায় পৌছেছে। 

স্থানীয় খুচরা পাইকারী ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, কয়েকদিন আগে পাইকারী পেঁয়াজ জেলা শহর ঠাকুরগাঁও আড়ৎ থেকে ১৫০ থেকে ১৬০ টাকায় রাণীশংকৈলে এনে ৫টাকা লাভ ধরে খুচরা ব্যবসায়ীদের নিকট বিক্রি করা হত। কিন্তু বুধবার থেকে আবারো পেঁয়াজের দাম পাইকারী বেড়ে ১৬৫ থেকে ১৭০ টাকায় ঠেকেছে। আর খুচরা ব্যবসায়ীরা তা কিনে ১৮০ টাকা দরে বিক্রি করছে।

বৃহস্পতিবার শিবদিঘী কাচা বাজারে কথা হয় বিজয় রায় নামের পেঁয়াজ ক্রেতার সাথে তিনি বলেন কাঁচা বাজারে এসে মনে হয় লটারী ড্রঃ খেলায় এসেছি ভাগ্য থাকলে বুঝি পাইলেও পাইতে পারতাম আরেকটু কম দামে। যে পেয়াজ কিছুদিন আগে কিনলাম ১৪০টাকা দরে সে পেয়াজ আজ ১৮০ টাকায় কিনতে হচ্ছে।

একইভাবে বন্দর গুদরি বাজারের পেয়াজ ক্রেতা সালাম কুশমত বলেন, পেয়াজের দাম নিয়ন্ত্রনে নেই কখন বাড়ছে কখন কমছে তা বলা যাচ্ছে না।

দিন মুজুর কবির বলেন, সারাদিন কাজ করে পাই ৩৫০ টাকা তাতে চাল ডাল কিনে পেঁয়াজ কিনতে গেলে পড়ে যায় বিপাকে। আধা কেজি পেয়াজ কিনতে গেলে দিতে হয়। তিন কেজি চালের দাম। সে হিসাবে ৬ কেজি চালে মিলে ১ কেজি পেয়াজ। ভাবছি চাল কিনবো না পেয়াজ কিনবো?

উপজেলা নির্মাণ শ্রমিক ইউনিয়নে সাবেক সম্পাদক সুমন পাটোয়ারী পেঁয়াজের দাম উঠা নামা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমার দিন মুজুর শ্রমিকরা সারাদিন খেটে যে টাকা পায় তা দিয়ে প্রতিদিনের চাল ডাল সবজির বাজার করে পেয়াজ কিনতে গেলে তারা অনেক বিপাকে পড়ে যায়। অনেকে চাহিদামত পেয়াজ কিনতে না পেরে নামে মাত্র পেঁয়াজ কিনে তা তরকারীতে দিয়ে খাচ্ছে। এতে না থাকছে তরকারীতে সাধ না পাওয়া যাচ্ছে তরকারী খেয়ে সাধ।

সুমন আরো বলেন, সারাদিন খেটে আমার শ্রমিকটা একটু সাধ করে সন্ধা বেলা শুধু মাত্র পেয়াজের জন্য তরকারী দিয়ে দুমুঠো ভাত শান্তি মত খেতে পারছে না।

আমি সরকারের দৃষ্টি আর্কষণ করে বলছি তরকারীর শিবদিঘী কাচা বাজারের খুচরা পাইকারী ব্যবসায়ী জাকির হোসেন বলেন, আমরা পেয়াজ যা দামে জেলা আড়ৎ থেকে ক্রয় করি তা থেকে মাত্র ৫ টাকা মুনাফা রেখে খুচরা ব্যবসায়ীদের নিকট বিক্রি করি। বর্তমানে আমরা ১৬৫ টাকা দরে পাইকারী কিনে ১৭০ টাকা দরে আমাদের খুচরা ব্যসায়ীদের নিকট বিক্রি করছি তারা আবার তা ১৮০ টাকা দরে বিক্রি করছে বলে শুনতে পেয়েছি। খুচরা ব্যবসায়ীরা বাজার যখন যে দরে যায় তখন তারা সে দরে বিক্রি করে আসছে।

পেঁয়াজের ঠাকুরগাঁও জেলা আড়ৎদার ওবাইদুর রহমান বৃহস্পতিবার মুঠোফোনে বলেন, পেয়াজের দাম উঠা নামা করে পেয়াজের আমদানির উপর। পেয়াজ যত বেশি আমদানি হয় তত কম দরে পেঁয়াজ পাওয়া যায়। যত কম আমদানি হয় তখন তত বেশি দাম বেড়ে যায়। পেঁয়াজ আমরা বর্তমানে পাবনা জেলা থেকে আমদানি করছি। সেখান থেকে যেমন পেঁয়াজ আমদানি হয় সেভাবেই পেয়াজের দাম নির্ধারণ করা হয়। এখানে আমাদের কিছুই করার নাই।

(এফ/এসপি/নভেম্বর ১৪, ২০১৯)