প্রহলাদ মন্ডল সৈকত, রাজারহাট (কুড়িগ্রাম) : কুড়িগ্রামের রাজারহাটে ২৪০টাকা দরে কিংবা আধামণ ধানেও মিলছে না ১ কেজি পেঁয়াজ। ১৪নভেম্বর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে পেঁয়াজের দাম এক লাফে তিনগুণ বৃদ্ধি পাওয়ায় ক্রেতাদের নাভিশ্বাস উঠেছে। জেলা শহর থেকে শুরু করে উপজেলার প্রতিটি বাজার মনিটরিং করতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছে ভূক্তভোগীরা। 

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, বেশ কয়েকদিন ধরে রাজারহাট বাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৮০ থেকে ১০০ টাকা দরে বিক্রি করে। সেই পেঁয়াজ ১৪নভেম্বর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আধা ঘন্টার ব্যবধানে ২২০টাকা থেকে ২৪০টাকা দরে বিক্রি করছে বিক্রেতারা।

আকস্মিকভাবে পেঁয়াজের তিনগুন দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় জনমনে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। ক্রেতারা অভিযোগ করে বলেন, পেঁয়াজের দাম বেড়ে যেতে পারে। কিন্তু এতো তাড়াতাড়ি কিভাবে। ইন্টারনেটের যুগে মোবাইল ফেসবুক, টিভি ও অনলাইনে জিনিসপত্রের দাম বাড়ার খবর আসলেই সাথে সাথে দাম বেড়ে যায়। কিন্তু কমানোর খবর এলে তো তারা কমায় না। এ কোন আজব দেশে বাস করছি আমরা। সন্ধ্যার আগে রফিকুল ইসলাম নামের এক স্কুল শিক্ষক ৮০ টাকা দরে আধা কেজি পেঁয়াজ বাজার থেকে কিনেছে। আর আধা ঘন্টার পর সন্ধ্যায় পেঁয়াজ নিতে এসে দেখি ওই ডালিরই (বাঁশের ঢাকি) পেঁয়াজ ২২০টাকা দরে বিক্রি করছে। এমনটি হলো কেন? এর সঠিক উত্তর নেই। শুধু বিক্রেতাদের একটাই কথা, বাজারে পেঁয়াজ নেই, দাম বাড়ছে।

রসিকতা করে ক্রেতারা বলে উঠলো, হামরা আর পেঁয়াজ তরকারীতে দিয়া খাবার পাবার নই। ডালির পেঁয়াজ ডালিতেই আছে ৮০টাকাে পেঁয়াজের দাম হলো ২২০টাকা। ৪ মাস আগে জুন-জুলাইয়ে পেঁয়াজের কেজি ছিল ১৮ টাকা। তার পর হঠাৎ করে ১২০টাকা থেকে ১৫০ টাকা। বাজার মনিটরিংয়ের পর ৭০ থেকে ১০০ টাকা। আর ১৪নভেম্বর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে ২২০ টাকা থেকে ২৪০টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে পেঁয়াজ।

ক্রেতারা আরো অভিযোগ করে বলেন, কিছু ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে গত ৪ মাস ধরে পেঁয়াজের দাম লাগামহীনভাবে বাড়িয়েছে। প্রতিবেশী দেশ ভারত পেঁয়াজ রপ্তানী বন্ধ করছে ঠিকই, কিন্তু দেশে যেসব পিঁয়াজ উৎপন্ন হয়েছে সেগুলো গেলো কোথায়? দেশের উৎপন্ন পেঁয়াজ হিমাগারে রয়েছে। সেগুলো বের করলেই এর চাহিদা লাঘব হবে বলে সচেতনমহল মনে করেন। বাজারে ধান ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা মন বিক্রি হচ্ছে। সেখানে ১ কেজি পেঁয়াজ কিনতে আধামণেরও বেশী ধান বিক্রি করতে হয়। কয়েকদিনের মধ্যে হয়তো ১ মন ধান বিক্রির টাকা দিয়েও ১ কেজি পেঁয়াজ মিলবে কিনা এ নিয়ে সংশয়ে রয়েছে কৃষকরা।

শুক্রবার দুপুরে এব্যপারে রাজারহাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ যোবায়ের হোসেন বলেন, সারা দেশেই পেঁয়াজ সংকট। কিন্তু কেউ যদি পেঁয়াজ মজুদ করে চড়া দামে বিক্রি করার অভিযোগ পেলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।

(পিএম/এসপি/নভেম্বর ১৫, ২০১৯)