স্টাফ রিপোর্টার : সিন্ডিকেটের কারসাজিতে পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে মন্তব্য করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, পেঁয়াজের সংকটের প্রচার পেঁয়াজের সিন্ডিকেটদের আরও বেশি সুযোগ করে দিয়েছে। কারণ, কোন জিনিসের অভাব হলে তার দাম এমনিতেই বেড়ে যায়। শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবের আকরাম খা হলে নাগরিক অধিকার আন্দোলন ফোরাম আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।

বিএনপির প্রয়াত ভাইস চেয়ারম্যান সাদেক হোসেন খোকার স্মরণে ও দোয়ান উদ্দেশ্যে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

অনুষ্ঠানে গয়েশ্বর আরও বলেন, ভোটবিহীন ভোটে নির্বাচিত হয়ে সংসদ গঠন সম্ভব হলে, পেঁয়াজ ছাড়া রান্নাও সম্ভব হয়। বর্তমান সময়ে বিএনপির আন্দোলন দুই ধারায় প্রবাহিত হচ্ছে। একটি প্রেসক্লাবকেন্দ্রীক আন্দোলন, সংবাদ সম্মেলন এবং আরেকটি বিএনপি কার্যালয়কেন্দ্রীক আন্দোলন। বর্তমানে বিএনপির রাজনীতি হয়ে উঠেছে আত্মরক্ষামূলক রাজনীতি। আত্মরক্ষামূলক রাজনীতি করে জয়ী হওয়ার সম্ভাবনা নেই। তার চেয়ে আক্রমণাত্মক রাজনীতি করলে জয়ী হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

বিএনপি নেতাদের উদ্দেশ করে গয়েশ্বর বলেন, এখানে যারা উপস্থিত হয়েছেন বিদ্যালয় উপস্থিতির তালিকার মতো করে তাদের নাম বলতে হয়। পত্রিকায় তাদের নাম ছবি না এলে ক্ষুব্ধ হন। পত্রিকার নাম না এলে কি আন্দোলন হয় না? এরশাদবিরোধী আন্দোলনের সময় অনলাইন পত্রিকা, এত টেলিভিশন এবং ফেসবুক ছিল না। তাহলে সেই সময় কি আন্দোলন হয়নি? সুতরাং আমাদের পত্রিকায় নাম ও ছবি আসা, নিজেকে জাহির করার মন-মানসিকতা থেকে বেরিয়ে আন্দোলনে মনোনিবেশ করতে হবে।

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সরকারের ইচ্ছা ছাড়া আইনি প্রক্রিয়ায় বেগম জিয়ার মুক্তি সম্ভব নয়। আন্দোলন সংগ্রাম করেই বেগম জিয়ার মুক্তি অর্জন করতে হবে। আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় আন্দোলন করে শেখ সাহেবকে মুক্ত করতে না পারলে, তার ফাঁসি হয়ে যেত। জনগণের আন্দোলনের ফলেই তিনি মুক্ত হয়ে আসেন এবং সেইসব মামলাও কোথায় গেছে তার কোনো হদিস নেই।

বিএনপির জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার সমালোচনা করে তিনি বলেন, নির্বাচনের আগে বিএনপি সাতটি দফা দিয়েছিল। একদফা দাবি খালেদার মুক্তি যদি চাইতাম তাহলে খালেদার মুক্তি না হয়ে যেত না। নির্বাচনের ফলাফল যে এমন হবে এটা তো আমরা আগে থেকেই জানতাম। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তো আমাদের দাওয়াত দেয়নি। ড. কামাল হোসেন দাওয়াত চেয়েছেন। চেয়ে দাওয়াত নিলে সেখানে অতিথি আপ্যায়নও তেমনি হয়।

গয়েশ্বর আরও বলেন, সাদেক হোসেন খোকা একজন আপসহীন নেতা ও বীর মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। বিএনপি নেতাকর্মী ছাড়াও অনেকেই তার কাছ থেকে নানা সুযোগ-সুবিধা নিয়েছেন। সাদেক হোসেন খোকা ঢাকার অনেক রাস্তার নামকরণ করেছিলেন মুক্তিযোদ্ধাদের নামে। শুধু একজন মুক্তিযোদ্ধার নামে ঢাকার রাস্তার কোনো নামকরণ করা হয়নি তিনি হলেন বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান। হয়তো তিনি ভেবেছিলেন জিয়াউর রহমানের নামেতো বিমানবন্দর আছেই। তাই নতুন করে তার নামে আর কোনো রাস্তার নামকরণ করা হয়নি।

নাগরিক অধিকার আন্দোলন ফোরামের উপদেষ্টা সাঈদ আহমেদ আসলামের সভাপতিত্বে সাধারণ সম্পাদক এম জাহাঙ্গীর আলমের সঞ্চালনায় শোকসভায় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, জাতীয়তাবাদী ওলামা দলের আহ্বায়ক প্রিন্সিপাল শাহ মোহাম্মদ নেসারুল হক, বগুড়া ৪ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ মো. মোশাররফ হোসেন, প্রয়াত সাদেক হোসেন খোকার বড় ছেলে প্রকৌশলী ইশরাক হোসেন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযুদ্ধা ফরিদ উদ্দিন, জাতীয়তাবাদী তাঁতী দলের যুগ্ম আহ্বায়ক কাজী মনিরুজ্জামান মনির, তেজগাঁও থানা বিএনপির সহ-সভাপতি হাফিজুর রহমান কবির, কোতোয়ালি থানা কৃষকদলের সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মোফাজ্জল হোসেন হৃদয়, কৃষকদলের রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ, আব্দুল্লাহ আল নাঈম প্রমুখ।

(ওএস/এসপি/নভেম্বর ১৫, ২০১৯)