নওগাঁ প্রতিনিধি : নওগাঁর রাণীনগরে দাদন ব্যবসায়ী সুদারুরা সংখ্যালঘুদের বাড়ি-ঘর জোড় করে লিখে নিয়ে  বসতবাড়ি ছাড়া করছে। চড়া সুদের ওপর টাকা দিয়ে কৌশলে বসতবাড়ি লিখে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে সুদারুদের বিরুদ্ধে। কেউ কেউ আবার জমি বা বসতবাড়ি রেজিষ্ট্রি করে দেয়ার ভয়ে বসতবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে।

অভিযোগে জানা গেছে, রানীনগর উপজেলার কাশিমপুর ইউনিয়নের কুজাইল হিন্দু পাড়ার জনৈক গৌর চন্দ্র সরকারকে চড়া সুদে এক লাখ বিশ হাজার টাকা দেয় সুদারু মিজানুর রহমান মিজু খন্দকার। বসত বাড়িসহ মোট ১৬ শতক জমি যার মোট মূল্য পাঁচ লাখ টাকা ধার্য্য করে তিন লাখ বাষট্টি হাজার টাকা প্রদান দেখিয়ে বায়না নামা রেজিষ্ট্রি করে নিয়েছে দাদন ব্যবসায়ী রশিদুলের সঙ্গী উক্ত মিজানুর রহমান মিজু খন্দকার। মিজানুর রহমান মিজু খন্দকার উপজেলার দূর্গাপুর গ্রামের মোঃ সমতুল খন্দকারের ছেলে।

ভুক্তভোগি গৌর সরকার দাদন ব্যবসায়ীর অত্যাচার থেকে মুক্তি চেয়ে বুধবার রানীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর একটি আবেদন করেছেন। তার অভিযোগে জানা গেছে, গৌর সরকার প্রায় ১ বছর আগে দাদন ব্যবসায়ী সুদারু মোঃ রশিদুলের কাছ থেকে লাভের ওপর এক লাখ বিশ হাজার টাকা গ্রহন করে। তার কিছুদিন পরে রশিদুল তার নিকট থেকে একটি সাদা ষ্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করিয়ে নেয়। বিগত প্রায় ৬ মাস আগে রশিদুলের সঙ্গী মোঃ মিজানুর রহমান মিজু খন্দকার ও মোঃ অহিদুল এরা দুইজন গৌর সরকারকে কুজাইল বাজার তার চায়ের দোকান থেকে ডেকে নিয়ে বলে, তোর টাকার পরিমান বেশি হয়ে গেছে।

তুই আমাদের একটি ডকুমেন্ট করে দে। নইলে এখই টাকা দে। না হলে আমাদের সাথে চল বলেই মিজুর মটর সাইকেলে গৌর সরকারকে মধ্যে বসিয়ে এবং রহিদুল পিছনে বসিয়ে তাকে রাণীনগর রেজিষ্ট্রি অফিসে নিয়ে যায়। সেখানে জোর পূর্বক মিজানুর রহমান মিজুর নামে বায়না নামা রেজিষ্ট্রি করিয়া নেয় এবং বলে তুই টাকা ফেরত দিলে তোর বায়না নামা বাতিল করিয়া দিব। পরে গৌর সরকার জানতে পারে, তার ঘরবাড়িসহ মোট ১৬ শতক জমি যা তিন লাখ বাষট্টি হাজার টাকা প্রদান দেখিয়ে এবং মোট মূল্য পাঁচ লাখ টাকা ধার্য্য করে। চক কুজাইল মৌজায় গৌর সরকারের বসত বাড়ির আশেপাশে সর্ব নি¤œ জমির মূল্য ৭০ থেকে ৯০হাজার টাকা শতক। সে একজন অসহায় গরীব মানুষ এবং শুধুমাত্র নাম সহি ছাড়া কোন প্রকার লেখাপড়া জানেনা ।

এছাড়া তপন সরকারের বসত বাড়িও রেজিষ্ট্রি করে নিয়েছে রশিদুল, সুদেব সরকারের জমি রেজিষ্ট্রি করে নিয়েছে রশিদুল, বাড়ি বিক্রি করে ছেলে-মেয়ে স্ত্রীসহ পালিয়ে গিয়েছে বিপ্লব সরকার, প্রদীপ সরকার সস্ত্রীক বসত বাড় ছেড়ে পালিয়ে আছে। হালদার পাড়া থেকে পালিয়ে গেছে সুশিল সহ আরো অনেকে। সুশিলের ঘরে তালা মারা আছে। উল্লেখ্য গৌর সরকার রাণীনগর থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছিল। কিন্তু ভালো কোন সমাধান পায়নি বলে জানায় সে।

শুক্রবার বিকেলে এব্যাপারে রশিদুলের মুঠো ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি এই প্রতিদেককে জানান, বছর ২ আগে আমি সুদের ব্যবসা করেছি। এখন করিনা। গৌর আর মিজানুনের টাকার ব্যাপারে আমি কিছুই জানিনা। তবে অনেকেই আমার নাম ভাঙ্গিয়ে সুদের ব্যবসা করছে বলে শুনেছি। আর যেসব জায়গা-জমি কিনেছি তা বাজার মূল্য নির্ধারন করে সমঝোতার মাধ্যমেই কিনেছি।

(বিএম/এসপি/নভেম্বর ১৫, ২০১৯)