স্টাফ রিপোর্টার : দেশের ১৯টি উপজেলায় পাসপোর্ট নির্মাণের জন্য প্রায় ৪৩ কোটি টাকা ব্যয় বাড়ছে। এতে চলমান প্রকল্পের আওতায় ১০৩ কোটি ৮৫ লাখ থেকে ব্যয় বেড়ে দাঁড়াবে ১৪৬ কোটি ৭৫ লাখ টাকায়।

১৯টি আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস ভবন নির্মাণ প্রকল্পটির বাস্তবায়নকারী সংস্থা বহিরাগমন ও পাসপোর্ট অধিদফতর এবং গণপুর্ত অধিদফতর। মঙ্গলবার বাস্তবায়নকারী সংস্থার ব্যয় বৃদ্ধির প্রস্তাব জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) সভায় উপস্থাপন করবে বলে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।

১০৩ কোটি ৮৫ লাখ টাকা ব্যয় ধরে প্রকল্পটি জানুয়ারি ২০১২ সালে শুরু হয়। সমাপ্তি হওয়ার কথা ছিল ডিসেম্বর ২০১৪ সাল নাগাদ। ব্যয় বৃদ্ধির পাশপাশি ডিসেম্বর ২০১৬ সাল নাগাদ প্রকল্পের সময়ও বৃদ্ধি করা হয়েছে।

প্রথমে প্রকল্পটি দেশের ৭টি বিভাগের ১৮টি জেলার ১৯টি উপজেলায় শুরু হয়। উল্লেখ্যযোগ্য সংখ্যাক লোকের কথা চিন্তা করে ঢাকার উত্তরা ও যাত্রবাড়ী, নরসিংদী সদর, কিশোরগঞ্জ সদর, মানিকগঞ্জ সদর, টাঙ্গাইল সদর, কক্সবাজার সদর, রাঙামাটি সদর, পাঁচলাইশ, ফেনী সদর, চাঁদপুর সদর, মানিকগঞ্জ সদর, মুন্সিগঞ্জ সদর, দিনাজপুর সদর, কুষ্টিয়া সদর, মৌলভিবাজার সদর, পাবনা সদর, দিনাজপুর সদর, পটুয়াখালী সদর ও ব্রাম্ম্ণবাড়িয়া সদর উপজেলায় আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস নির্মাণ শুরু হয়।কিন্তু নির্মার্ণের শেষ সময়ে ব্যয় ‍ও সময় বৃদ্ধি করা হলো প্রকল্পের।

ব্যয় ও সময় বৃদ্ধি প্রসঙ্গে প্রকল্প পরিচালক আতিকুল হক বলেন, প্রকল্পের নানা উন্নয়নের জন্য আরো প্রায় ৪৩ কোটি টাকা ব্যয় বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়েছে। মঙ্গলবার একনেক সভায় এই প্রস্তাব উপস্থাপন করা হবে বলে আমরা চিঠি পেয়েছি। ব্যয় বৃদ্ধির পাশাপাশি প্রকল্পের সময়ও দুই বছর বৃদ্ধি করা হয়েছে।’

বহিরাগমন ও পাসপোর্ট অধিদফতর এবং গণপুর্ত অধিদফতর থেকে জানা গেছে নানা কারণে প্রকল্পের ব্যয় বাড়ছে। এর মধ্যে অন্যতম ভূমি অধিগ্রহণ বাবদ ৯ কোটি ৭৯ লাখ ব্যয় বৃদ্ধি, গণপূর্ত অধিদফতরের ২০১৪ সালে রেট সিডিউল অনুসারে প্রাক্কলনের ব্যয় বৃদ্ধি, উত্তরা ও যাত্রবাড়ী পাসপোর্ট অফিসের জন্য চার তলা ভীত বিশিষ্ঠ তিন তলা ভবনের পরিবর্তে ১০ তলা ভীত বিশিষ্ঠ ৬ তলা ভবন নির্মাণ, প্রকল্পের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বেতন বৃদ্ধি, সাইট উন্নয়ন, বহি:বিদ্যুতায়ন, ফার্নিচার, বাউন্ডারি ওয়াল, পানি সরবরাহ অঙ্গে ব্যয় বৃদ্ধি, অফিস যন্ত্রপাতি, ক্যামেরা, সিসিটিভি, সয়েল টেস্টিং, বৃষ্টির পানি সরবরাহ বাবদ ব্যয় বৃদ্ধির কারণে প্রকল্প ব্যয় বেড়েছে।

বহিরাগমন ও পাসপোর্ট অধিদফতর সরকারের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান। প্রতিবছর উল্লেখযোগ্য সংখ্যক লোক শিক্ষা, কর্মসংস্থান, চিকিৎসা ও পযর্টনের উদ্দেশ্যে বিদেশে যাতায়াত করে থাকে। সংস্থার ঢাকার প্রধান কার্যালয়ে অতিরিক্ত চাপ থাকায় ৩৪টি আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। প্রথমে ৪টি নির্মাণের কাজ শেষ হয়েছে আরো ১১টি অফিসের কাজ জুন ২০১৪ সালে শেষ হবে।

অবশিষ্ট ১৯টি আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস ভবন নির্মাণের জন্য গ্রহীত প্রকল্পটি ১০৩ কোটি ৮৫ লাখ টাকা ব্যয়ে জানুয়ারি ২০১২ থেকে ডিসেম্বর ২০১৪ মেয়াদে বাস্তবায়নের জন্য ৩ জানুয়ারি একনেক সভায় চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে সরকারী খাতের উন্নয়নের মাধ্যমে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন, ই-গর্ভনেন্স বাস্তবায়নের মাধ্যমে সাধারণ জনগণকে আরো স্বচ্ছ ও জবাবদিহিতামূলক প্রক্রিয়ায় সেবা প্রদান এবং সুশাসন প্রতিষ্ঠারও প্রকল্পের অন্যতম উদ্দেশ্য।

কিন্তু প্রকল্প বাস্তবায়নের শেষ সময়ে এসে নানা কারণে সময় ও ব্যয় বাড়ানো হলো ১৯টি আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস নির্মাণে। এতে করে প্রকল্প থেকে সুফল পেতে হলে দেশবাসী অপেক্ষা করতে হবে ডিসেম্বর ২০১৬ সাল নাগাদ।

(ওএস/এটিআর/আগস্ট ০৪, ২০১৪)