চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি : গত চারদিনে চুয়াডাঙ্গায় ডায়রিয়া পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। সোমবার দুপুর পর্যন্ত চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে পাঁচ শতাধিক ডায়রিয়া রোগী ভর্তি হয়েছে। কিছুক্ষণ পরপরই হাসপাতালে আসছে নতুন রোগি। এছাড়াও অনেকেই বাড়িতে বসে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছে চিকিৎসক, নার্স ও অন্যরা। ইতোমধ্যে স্বাস্থ্য বিভাগ তাদের সব কর্মকর্তা কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে জেলার বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিক থেকে চিকিৎসক ও নার্সদের ডেপুটিশনে সদর হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছে।
স্বাস্থ্য বিভাগের পাশাপাশি চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার পক্ষ থেকে আক্রান্ত এলাকাগুলোতে খাবার স্যালাইন ও পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট বিতরণ করা হচ্ছে। একই সঙ্গে শহরে মাইকিং করে পৌরসভার সরবরাহকৃত পানি ফুটিয়ে পান করার জন্য পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
এলাকাবাসি ও চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের দায়িত্বরত চিকিৎসকরা জানান, চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার মসজিদ পাড়া, মাঝেরপাড়া, বাগানপাড়া, জ্বিনতলাপাড়া ও ইসলামপাড়ার বাসিন্দারা পৌরসভার সরবরাহ করা পানীয় পানি পান করে শুক্রবার রাত থেকে ডায়রিয়া রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ছেন। রবিরার দুপুর পর্যন্ত চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ২১০ জন রোগী ভর্তি হয়। সোমবার দুপুর পর্যন্ত এ সংখ্যা পাঁচশ’ অতিক্রম করে। আক্রান্তরা সকলেই চুয়াডাঙ্গা শহরের মসজিদপাড়া, বাগানপাড়া, মাঝেরপাড়া, ইসলামপাড়া ও জ্বিনতলাপাড়ার বাসিন্দা। আক্রান্তদের অভিযোগ, পৌরসভার সরবরাহ করা পানি পান করে তারা ডায়রিয়া রোগে আক্রান্ত হয়েছেন।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. মাসুদ রানা জানান, ১০০ শয্যার এ হাসপাতালে ডায়রিয়া আক্রান্ত পাঁচ শতাধিক রোগীসহ প্রায় সাতশ’ রোগী নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। অবস্থা ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে।
চুয়াডাঙ্গা পৌর মেয়র রিয়াজুল ইসলাম জানান, ইতোমধ্যেই আক্রান্ত এলাকার পানি পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। একই সঙ্গে ডায়রিয়া নিয়ন্ত্রণে পৌরসভার পক্ষ থেকে আক্রান্ত এলাকাগুলোতে স্যালাইন ও পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট বিতরণ করা হচ্ছে। পাশাপাশি পানি ফুটিয়ে পান করার জন্যও শহরে মাইকিং করা হচ্ছে।
চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জন ডা. আজিজুল হক জানান, ডায়রিয়া যেহেতু পানিবাহিত রোগ, সে কারণে আক্রান্ত এলাকার পানি পরীক্ষার জন্য সংগ্রহ করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই ডায়রিয়া পরিস্থিতির ভয়বহতার তথ্য উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। এ বিষয়ে সহযোগিতার জন্য আজ সোমবার রাতেই ঢাকা থেকে একটি চিকিৎসক প্রতিনিধিদল চুয়াডাঙ্গায় আসতে পারে।
(জেএ/এএস/আগস্ট ০৪, ২০১৪)