সমরেন্দ্র বিশ্বশর্মা, কেন্দুয়া (নেত্রকোনা) : নেত্রকোণার কেন্দুয়া উপজেলার অধিকাংশ মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোতে এস.এস.সি পরীক্ষার ফরম পূরণের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত ফি আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। 

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর পক্ষ থেকে মাসিক বেতনের বাইরে বোর্ড ফি, অনলাইন, যাতায়াত ও মিলাদ খরচ এবং অন্যান্য ফি বাবদ ২ হাজার ৩ শ থেকে আড়াই হাজার টাকা পর্যন্ত আদায় করে নেয়া হচ্ছে। অথচ বোর্ডফি বাবদ খরচ ধার্য্য করা হয়েছে ১হাজার ৯শ ৭০ টাকা।

ছাত্র-অভিভাবকগণের পক্ষ থেকে অভিযোগ ওঠেছে, গন্ডা দ্বি-মুখী উচ্চ বিদ্যালয়, মজলিশপুর, গগডা, আশুজিয়া, রামনগর আনোয়ারা, কাউরা আদর্শ বালিকা, বাশাটি, জনতা ও বেখৈরহাটি উচ্চ বিদ্যালয় সহ অন্যান্য বিদ্যালয়গুলোতে নানা অজুহাতে ফরম পূরণের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত টাকা আদায় করা হচ্ছে।

ছাত্র-অভিভাবকরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এমনিতেই ধান চালের ন্যায্য মূল্য না থাকায় তারা তাদের উৎপাদিত পন্য নিয়ে বিপাকে। এরপরও ছেলে মেয়েদের লেখাপড়ার খরচ সহ এস.এস.সি পরীক্ষার ফরম পূরণের বেলায় অতিরিক্ত ফি আদায়ের বিষয়টি তাদের কষ্টের কারন হয়ে দাঁড়ায়। তারা তাদের এ অভিযোগ লিখিত ও মৌখিক ভাবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরও দাখিল করেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল-ইমরান রুহুল ইসলামের কাছে অতিরিক্ত ফি আদায়ের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, গন্ডা দ্বি-মুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে ফরম পূরণের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত ফি আদায়ের অভিযোগ এসেছিল। এছাড়া বাশাটি উচ্চ বিদ্যালয়ে ব্যাবহারিক পরীক্ষায়ও অতিরিক্ত টাকা নেয়ার অভিযোগটি এলে আমি উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে তদন্ত করে প্রতিকারের নির্দেশ দেই।

অতিরিক্ত ফি আদায়ের বিষয়ে জানতে চাইলে মজলিশপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রতন চন্দ্র দেবনাথ বলেন, আমরা সরকার নির্ধারিত বোর্ডফির বাইরে ১ টাকাও বেশি নিচ্ছি না। তবে যে সব ছাত্র-ছাত্রীর ৬মাস বা ১ বছরের বেতন বকেয়া আছে, সেসব বকেয়ার সাথে বোর্ডফির কোন সম্পর্ক নেই।

আমরা বোর্ড ফির সঙ্গে বকেয়া বেতনও আদায় করে নিচ্ছি। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, অতিরিক্ত ফি আদায়ের অভিযোগের মধ্যে গন্ডা দ্বি-মুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের অভিযোগটি তদন্ত করে প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আমাকে বলেছিলেন। আমি গন্ডা দ্বি-মুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে গিয়ে প্রধান শিক্ষক ও ছাত্র অভিভাবকদের সঙ্গে আলোচনা করে সমাধান করে দিয়েছি।

তিনি বলেন, গন্ডা ছাড়া অন্যান্য বিদ্যালয়ের অতিরিক্ত ফি আদায়ের অভিযোগ লিখিত ভাবে জানালে আমরা প্রতিকারের ব্যবস্থা নেব।

মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আরো বলেন, এস.এস.সি পরীক্ষার ফরম পূরণের বোর্ডফির বিষয়টি নির্ধারিত থাকলেও মাসিক বেতন একেক বিদ্যালয়ে একেক রকম। ফলে বিদ্যালয়গুলোতে ম্যানেজিং কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক এসএসসি পরীক্ষার ফরম পূরনের ফির সঙ্গে একেক রকম বকেয়া বেতনের টাকা আদায় করে নেয়া হচ্ছে। এতে অভিভাবকগণ কিছুটা বেকায়দায় পড়েছেন বলে তিনি মন্তব্য করেন।

(এসবি/এসপি/নভেম্বর ১৬, ২০১৯)