স্টাফ রিপোর্টার : ফ্র্যাঞ্চাইজি বিপিএল হবে না এবার। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে এবারের বিপিএল হবে বিসিবির ব্যবস্থাপনায়। দল সাজানো, পরিচালনার দায়িত্বও পালন করবে বিসিবি। যদিও সাত দলের ৫টি স্পন্সর পার্টনারও দল গড়া, ক্রিকেটার নেয়া, কোচিং স্টাফ নিয়োগসহ অনেক কাজই করবে। তারপরও পুরো আয়োজন নতুনত্বে ভরা।

ইন্দোরে ভারতের কাছে প্রথম টেস্টে চরম পর্যুদস্ত টাইগাররা। এইতো ২৪ ঘন্টা আগে ইনিংস পরাজয় ঘটেছে মুমিনুল হকের দলের। জাতীয় দল দেশের বাইরে ভারতে খাবি খেলেও কিছুই করার নেই। এমনিতেই দেরি হয়ে গেছে। তাই সময় বদলানোর আর সুযোগও নেই। আর সবচেয়ে বড় কথা, সব কিছুৃ আগে থেকে ঠিক করা। তাই সময় পাল্টানোর কোনই সুযোগ নেই।

এরই মধ্যে বেজে গেছে বিপিএল ডংকা। গতকাল (শনিবার) রাতে উন্মোচিত হলো জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামের ‘বঙ্গবন্ধু বিপিএলের’ লোগো।

আজ (রবিবার) সন্ধ্যায় হোটেল রেডিসনে প্লেয়ার্স ড্রাফট। এবারের আসরে কোন ক্রিকেটার কোন দলে খেলবেন? দেশি-বিদেশি তারকা ও নামী-দামি পারফরমারদের এবার কার ঠিকানা কোথায়? আজ রাতেই তা জানা যাবে।

অংশগ্রহণকারী সাত দলের মধ্যে ৫টির স্পন্সর পার্টনার নিয়োগ দেয়া হয়েছে। দল গড়া, ক্রিকেটার নেয়া, কোচিং স্টাফ নিয়োগসহ অনেক কাজের দায়িত্ব পেয়েছে যমুনা ব্যাংক, প্রিমিয়ার ব্যাংক, আকতার গ্রুপ, জেভিনি ফুটওয়্যার আর আইসিপি ৫ কর্পোরেট হাউজ স্পন্সর পার্টনার হিসেবে দল পরিচালনার দায়িত্ব পেয়েছে। দল সাজানো সবই হবে এই ৫ কর্পোরেট হাউজের প্রত্যক্ষ ব্যবস্থাপনায়।

আগের মত আইকন, এ + ক্যাটাগরি, প্লেয়ার্স রিটেনশন (আগের বারের অন্তত ৪ ক্রিকেটার রেখে দেয়া) এবং আগে থেকে একাধিক বিদেশি ক্রিকেটার দলে ভেড়ানোর নিয়মকানুনও বাদ। যা হবার সব প্লেয়ার্স ড্রাফটেই হবে। তাই কোন দলে আইকন বা এ+ ক্যাটাগরির কোন ক্রিকেটারও নেই। সব নতুন করে হবে।

আগের মত ৭ বিভাগীয় দল ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা, সিলেট, রাজশাহী, কুমিল্লা আর রংপুর- এই দলগুলো থাকলেও কোন পুরাতন ফ্র্যাঞ্চাইজি সম্পৃক্ত নেই। এবার স্পন্সর পার্টনারও একদম নতুন। নতুন স্পন্সর পার্টনাররাই আজ প্লেয়ার্স ড্রাফটে দল সাজাবেন। বাংলাদেশের ১৮১ আর ৪২৯ বিদেশী ক্রিকেটার বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে বিপিএল ড্রাফট লিষ্টে আছেন। তাদের মধ্য থেকেই ক্রিকেটার দলে ভেড়ানো যাবে।

আর ৭ দলের ভাগ্যে এবার দেশি ৭ এ+ ক্যাটাগরির ক্রিকেটারও জুটবে না। কারণ এক বছরের জন্য নিষিদ্ধ সাকিবকে ছাড়া এবার ‘এ+’ ক্যাটাগরিতে বাংলাদেশের ক্রিকেটার আছেন মোটে চারজন- মাশরাফি বিন মর্তুজা, তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহীম ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। তাদের ভিত্তিমূল্য ধরা হয়েছে ৫০ লাখ টাকা।

অন্যদিকে ‘এ’ ক্যাটাগরিতে আছেন ৯ দেশি ক্রিকেটার। তাদের ভিত্তিমূল্য ২৫ লাখ টাকা। এখানে মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত, মোস্তাফিজুর রহমান, মেহেদী হাসান মিরাজ, সৌম্য সরকার, লিটন দাস, তাইজুল ইসলাম, ইমরুল কায়েস, মুমিনুল হক এবং মোহাম্মদ মিঠুনরা আছেন।

‘বি’ ক্যাটাগরিতে আছেন মোট ২৪ জন ক্রিকেটার। তাদের ভিত্তিমূল্য ধরা হয়েছে ১৮ লাখ টাকা। তারকা ক্রিকেটারদের মধ্যে শফিউল ইসলাম, আবু জায়েদ রাহী, এনামুল হক বিজয়, রুবেল হোসেন, সাব্বির রহমান, তাসকিন আহমেদ, আফিফ হোসেন, আল আমিন, আবু হায়দার রনিরা আছেন এই ক্যাটাগরিতে।

‘সি’ ক্যাটাগরির ৪১ জন ক্রিকেটারের ভিত্তিমূল্য ১২ লাখ টাকা। এই ক্যাটাগরিতে আছেন মোহাম্মদ আশরাফুল, শাহরিয়ার নাফীস, অলক কাপালি, আরাফাত সানী, নাইম শেখ, নাসির হোসেন, আবদুর রাজ্জাক, সাদমান ইসলামরা।

‘ডি’ ক্যাটাগরিতে আছেন ৫৯ জন। শাহাদাত রাজীব, এনামুল হক জুনিয়র, আমিনুল ইসলাম বিপ্লব, ধীমান ঘোষ, নাজমুল হোসেন মিলনদের ভিত্তিমূল্য ধরা হয়েছে ৮ লাখ টাকা।

‘ই’ ক্যাটাগরিতে আছেন তুষার ইমরান, জয়রাজ, সাজেদুল ইসলামসহ ৪৪ জন ক্রিকেটার। এই ক্যাটাগরির ক্রিকেটারদের ভিত্তিমূল্য ধরা হয়েছে ৫ লাখ টাকা।

বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের ৫ টি ক্যাটাগরি রাখা হলেও দেশি খেলোয়াড়দের ৬টি গ্রেড করা হলেও, বিদেশিদের জন্য করা হয়েছে পাঁচটি গ্রেড। তবে সর্বোচ্চ 'এ+' গ্রেডে রাখা হয়েছে মাত্র ৪ জন দেশি খেলোয়াড়, অন্যদিকে বিদেশি খেলোয়াড়দের মধ্যে 'এ+' গ্রেডে রয়েছেন মোট ১১ জন খেলোয়াড়।

বিদেশি এ + ক্যাটাগরিতে আছেন ১১ জন। তারা হলেন ড্যান ভিয়াস (দক্ষিণ আফ্রিকা), শহীদ আফ্রিদি (পাকিস্তান), রিলে রুশো (দক্ষিণ আফ্রিকা), মোহাম্মদ নবী (আফগানিস্তান), শোয়েব মালিক (পাকিস্তান), হাসান আলি (পাকিস্তান), ক্রিস গেইল (ওয়েস্ট ইন্ডিজ), থিসারা পেরেরা (শ্রীলঙ্কা), ড্যারেন ব্রাভো (ওয়েস্ট ইন্ডিজ), ডোয়াইন স্মিথ (ওয়েস্ট ইন্ডিজ) ও মুজিব উর রহমান (আফগানিস্তান)।

এছাড়া দেশি-বিদেশিদের বৈষম্য রয়েছে পারিশ্রমিকের ক্ষেত্রেও। দেশি খেলোয়াড়দের এ+ গ্রেডে থাকা চারজন পাবেন ৫০ লাখ টাকা করে। অন্যদিকে বিদেশিদের এ+ গ্রেডের ভিত্তিমূল্য ধরা হয়েছে ১ লাখ ডলার।

বিদেশি খেলোয়াড়দের মধ্যে নিবন্ধিত খেলোয়াড়দের ভাগ করা হয়েছে এ+, এ, বি, সি ও ডি গ্রেডে। সবচেয়ে বেশি ডি গ্রেডে রাখা হয়েছে ২৭২ জনকে। এছাড়া এ+ গ্রেডে ১১, এ গ্রেডে ১৫, বি গ্রেডে ৬৬ ও সি গ্রেডে ৭৫ জন খেলোয়াড় রাখা হয়েছে।

(ওএস/এসপি/নভেম্বর ১৭, ২০১৯)