রঞ্জন কৃষ্ণ পন্ডিত, টাঙ্গাইল : টাঙ্গাইলে বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে যথাযোগ্য মর্যাদায় মজলুম জননেতা মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর ৪৩তম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত হয়।

এ উপলক্ষে রবিবার (১৭ নভেম্বর) ভোর থেকে সন্তোষে ভাসানীর মাজারে নামে মানুষের ঢল।

তার অসংখ্য মুরিদান ও ভক্তদের কন্ঠে যুগ যুগ জিও তুমি মাওলানা ভাসানী শ্লোগানে মুখরিত হয়ে উঠে মজলুম জননেতার সমাধিস্থল টাঙ্গাইলের সন্তোষের মাজার প্রাঙ্গন। সকাল সাড়ে ৭টার দিকে মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যায়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. আলাউদ্দিন মাওলানা ভাসানীর মাজারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করার মধ্য দিয়ে কর্মসূচির সূচনা করেন।

এরপর থেকেই মাজারে ভাসানীর পরিবার, বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন ও রাজনৈতিক দলসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে মরহুমের মাজারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। এতে ফুলে ফুলে ঢেকে যায় ভাসানীর মাজার। ভাসানীর মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বিভিন্ন সংগঠন পৃথকভাবে নানা কর্মসূচির আয়োজন করে। বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে কোরআন খানী, দোয়া ও মিলাদ মাহফিল, কাঙালিভোজ, আলোচনা সভা ইত্যাদি।

উল্লেখ্য, ১৯৭৬ সালের এই দিনে (১৭ নভেম্বর) ঢাকার পিজি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন। ১৮৮০ সালের ১২ ডিসেম্বর সিরাজগঞ্জের ধানগড়া গ্রামে মওলানা ভাসানীর জন্ম। সিরাজগঞ্জে জন্ম হলেও মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী তার জীবনের সিংহভাগই কাটিয়েছেন টাঙ্গাইলের সন্তোষে। সন্তোষের মাটিতেই তিনি চিরনিদ্রায় শায়িত আছেন। মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী তার কৈশোর-যৌবন থেকেই রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন।

দীর্ঘদিন তিনি তৎকালীন বাংলা-আসাম প্রদেশ মুসলিম লীগের সভাপতি ছিলেন। লাইন-প্রথা উচ্ছেদ, জমিদারদের নির্যাতন বিরোধী আন্দোলন সারাজীবনই তিনি সাধারণ মানুষের কল্যাণে আন্দোলন-সংগ্রাম করেছেন। তার উদ্যোগে ১৯৫৭ সালে কাগমারীতে অনুষ্ঠিত ঐতিহাসিক কাগমারী সম্মেলন বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন দিগন্ত তৈরি করে।

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় তিনি সর্বদলীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলের উপদেষ্টা ছিলেন। স্বাধীনতার পর তার সর্বশেষ কীর্তি ছিল ফারাক্কা লং মার্চ। বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানকে অত্যন্ত স্নেহ করতেন মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী। বঙ্গবন্ধুও তাকে শ্রদ্ধা করতেন পিতার মত।

(আরকেপি/এসপি/নভেম্বর ১৭, ২০১৯)