নাটোর প্রতিনিধি : নাটোরের বড়াইগ্রামে আবুল হাসেম (২৫) নামে এক যুবককে শ্বাসরোধে হত্যা এবং বাগাতিপাড়ায় বাবু ও মানিক নামে দু’জনকে মারপিট করে গাছের সঙ্গে বেঁধে দু’টি মোটর সাইকেল সহ নগদ ৬৪ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয় দুর্বৃত্তরা।

নিহত আবুল হাসেম বড়াউগ্রাম উপজেলার চন্ডিপুর গ্রামের বাসিন্দা ও আদগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ওসমান গণির ছেলে। পুলিশ এই হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে নিহত হাসেমের বন্ধু জুয়েল রানা (২৬) ও ইদ্রিস আলীকে (২৬) গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃতরা ছিনতাইয়ের সময় আবুল হাসেমের সঙ্গে ছিল। এছাড়া বাগাতিপাড়া থানার পুলিশ ছিনতাইয়ের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে পাকা এলাকা থেকে মনিরুর ও হাফিজুর রহমান নামে দু’জনকে ছিনতাইকাজে ব্যবহৃত একটি নসিমন সহ আটক করে।
এদিকে একই রাতে বাগাতিপাড়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমানের জামনগর গ্রামের বাড়িতে চোরের দল হানা দিয়ে গ্রিল কেটে একটি মোটর সাইকেল চুরি করে নিয়ে যায়। পরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে চেয়ারম্যানের বাড়ি থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দুরে স্বরাপুর এলাকা থেকে মোটর সাইকেলটি পরিত্যক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে। অপরদিকে লালপুর উপজেলার ওয়ালিয়া গোপালপুর সড়কে একই রাতে মোটর সাইকেলসহ গণছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। নাওদারা গ্রামের তিনযুবক এক মোটর সাইকেলে ওয়ালিয়া বাজার থেকে বাড়ি ফেরার পথে একই কায়দায় মোটর সাইকেল ছিনিয়ে নেয় দুর্বৃত্তরা।
পুলিশ জানায়, রোববার রাত ১১ টার দিকে বড়াইগ্রাম উপজেলার চন্ডিপুর গ্রামের আবুল হাসেম দুই বন্ধু জুয়েল রানা ও ইদ্রিস আলীকে সঙ্গে নিয়ে মোটর সাইকেলে করে অপর এক বন্ধুকে ঢাকাগামী নৈশ কোচে উঠিয়ে দিতে বড়াইগ্রাম যাচ্ছিল। পথে বড়াইগ্রাম-জোনাইল ফিডার সড়কের আদগ্রাম এলাকায় দুর্বৃত্তরা দড়ি দিয়ে বেরিকেড দিয়ে তাদের পথরোধ করে। এসময় দুর্বৃত্তরা আবুল হাসেমকে শ্বাসরোধে হত্যা করে মোটর সাইকেল নিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা মোটর সাইকেলের আরোহী দুই বন্ধু জুয়েল রানা ও ইদ্রিস আলীকে উদ্ধার করে বড়াইগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি করে। খবর পেয়ে রাতেই নাটোরের পুলিশ সুপার বাসুদেব বণিক, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান, বড়াইগ্রাম সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মাহফুজ্জামান আশরাফ, ওসি (প্রশাসন) মোহাম্মদ ইব্রাহিম, ওসি (তদন্ত) ইমরান হোসেন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
এদিকে দুই বন্ধুর উপস্থিতিতে আবুল হাসেমকে শ্বাসরোধে হত্যার ঘটনাটি এলাকায় রহস্যের সৃষ্টি করে। খোদ পুলিশ বিভাগেও হত্যাকান্ডটি রহস্যজনক বলে সন্দেহ করে। পরে এঘটানয় নিহতের মামা অধ্যাপক জালাল উদ্দিন বাদী হয়ে ইদ্রিস আলী, জুয়েল রানাসহ অজ্ঞাত ১৪/১৫ জনকে আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করলে পুলিশ জুয়েল রানা ও ইদ্রিস আলীকে হাসপাতাল থেকে গ্রেফতার করে।
বড়াইগ্রাম থানার ওসি মোহম্মদ ইব্রাহিম জানান, গ্রেফতারকৃত ২জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। খুব দ্রুতই এর রহস্য উদঘাটন করা সম্ভব হবে বলে তিনি আশা করছেন।
অপরদিকে একই রাতে বাগতিপাড়া উপজেলার চকগোয়াস এলাকায় বাবু ও তার ব্যবসায়ীক পার্টনার মানিক ছোটবাঘা থেকে মোটর সাইকেলে বাড়ি ফিরছিল। পথে বাগাতিপাড়া-আড়ানি সড়কের ধোপার বিল এলাকায় সড়কে দড়ি টানিয়ে বেড়িকেড দিয়ে বাবু ও মানিকের পথ রোধ করে। এসময় তাদের মারপিট করে গাছের সঙ্গে বেধে রেখে মোটর সাইকেল ও মানিকের কাছে থাকা ৬৪ হাজার টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যায়। পরে পুলিশ পাকা এলাকা থেকে মনিরুল ও হেকমত নামে দুই জনকে আটক করে। এসময় ছিনতাই কাজে ব্যবহৃত একটি নসিমন জব্দ করা হয়েছে।
পুলিশ সুপার বাসুদেব বনিক জানান,জেলার অপরাধপ্রবন এলাকায় চেকপোষ্ট বসানো হয়েছে। বড়াইগ্রামের আবুল হাসেম হত্যা রহস্য দ্রুত উদঘাটন করা সম্ভাব হবে। এছাড়ার বাগাতিপাড়ায় মোটর সাইকেল ছিনতাইকারী চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
(এমআর/এএস/আগস্ট ০৪, ২০১৪)