স্পোর্টস ডেস্ক : বড়দের বিশ্বকাপে সর্বশেষ সাফল্য সেই ২০০২ সালে। এরপর ব্রাজিল আর বিশ্বকাপের ফাইনালই খেলতে পারেনি। সর্বোচ্চ ঘরের মাঠে ২০১৪ সালে খেলেছে সেমিফাইনাল। যদিও, সবচেয়ে বেশি ৫ বার বিশ্বকাপ জিতেছে ব্রাজিলিয়ানরা।

তবে, বড়রা না পারলেও এবার ছোটরাই বিশ্বকাপের স্বাদ উপহার দিল সেলেসাওদের। ব্রাসিলিয়ায় ঘরের মাঠে অনুর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপ ফাইনালে মেক্সিকোকে ২-১ গোলে হারিয়ে ৪র্থ বারের মত শিরোপা জিতলো ব্রাজিলের তরুণ ফুটবলাররা।

তবে ম্যাচটা ছিল বেশ নাটকীয়। ঘরের মাঠেই আরও একটি হতাশার মুখোমুখি হতে যাচ্ছিল সেলেসাওদের তরুণ ফুটবলাররা। ৬৬ মিনিটেই মেক্সিকোর ব্রায়ান গঞ্জালেজ গোল করে পিছিয়ে দেয় ব্রাজিলকে।

তবে ৮৪ মিনিটে পেনাল্টি থেকে গোল করে স্বাগতিকদের সমতায় ফেরান কাইয়ো জর্জ। এরপর ম্যাচের যোগ করা সময়ে (৯০ +৩ মিনিটে) গোল করে ব্রাজিলকে বিশ্বকাপ উপহার দেন ল্যাজারো।

অনুর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপের ফাইনালে ভিএআর নিয়ে অবশ্য বড় বিতর্ক তৈরি হয়েছে। কারণ, ৮৪ মিনিটে যে পেনাল্টি দেয়া হয়েছে ব্রাজিলকে, সেটা নিয়েই তৈরি হয় বিতর্ক।

ঘরের মাঠে অনুর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপের ম্যাচ। ব্রাজিলের ফুটবল পাগল মানুষ কি আর ঘরে বসে থাকতে পারে? সুতরাং, ব্রাসিলিয়ার বেজেরাও স্টেডিয়াম হয়ে গিয়েছিল লোকে লোকারণ্য। তাদের সামনে শুরু থেকেই দুর্দান্ত ছিল ব্রাজিলের তরুণ ফুটবলাররা। যদিও ভাগ্যটা কেন যেন তাদের সঙ্গে বেশ লুকোচুরি খেলাও খেলেছিল।

কারণ, প্রথম থেকে দুর্দান্ত খেলা সত্ত্বেও গোল পাচ্ছিল না স্বাগতিকরা। দু’বার বল ক্রসবারে লেগে ফিরে আসে। বেশ কয়েকবার মিস হয় সহজ গোলের সুযোগ। মেক্সিকোকে ১০-২ গোলে ব্যতিব্যস্ত করে তোলে ব্রাজিল। কিন্তু ম্যাচের ধারার বিপরীতে গোল খেয়ে বসে তারা।

৬৬ মিনিটের মাথায় ইউজেনিও পিজ্জুতো বাম উইং থেকে লম্বা ক্রস করেন গঞ্জালেজকে। সেই বল নিয়ন্ত্রণে নিয়ে ব্রাজিলের জালে সহজেই জড়িয়ে দেন তিনি। স্তব্ধ করে দেন ব্রাজিল সমর্থকদের। তবে, সেমিফাইনালে ফ্রান্সের সঙ্গে দুই গোল পিছিয়ে থেকেও জিতেছিল ব্রাজিলের তরুণরা। সে কারণে, সমর্থকরা তখনও আশা হারায়নি।

ম্যাচের ৮৪ মিনিটে গ্যাব্রিয়েল ভেরনকে বক্সের মধ্যে চ্যালেঞ্জ করে বসেন মেক্সিকোর জেসাস গোমেজ। তবে বিষয়টা রেফারি আন্দ্রেস ত্রেইমানিস প্রথমে দেখেননি। পরের ভিএআর দেখে তিনি ব্রাজিলকে পেনাল্টি দেন। ম্যাচের পর মেক্সিকো কোচ হোসে মারিয়া চিমা অভিযোগ করেন, ‘ফাইনালের জন্য রেফারি ছিলো সিলেক্টিভ। তারা যেন বসেই ছিল ভিএআরের মাধ্যমে একটা সিদ্ধান্ত আমাদের বিপক্ষে দেয়া। সব সময়ই ফাইনালে আমরা হয়ে যাই ভিকটিম।’

তবে পেনাল্টি নিতে গিয়ে কাইয়ো জর্জ কোনো ভুল করেননি। সমতায় ফেরান ব্রাজিলকে। মেক্সিকো গোলরক্ষক এডওয়ার্ডো গার্সিয়া ঝাঁপিয়ে পড়ে হাত লাগিয়ে ফেরানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন।

এই গোলেই যেন পুরো বদলে যায় ব্রাজিল। ম্যাচ জয়ের জন্য ঝাঁপিয়ে পড়ে তারা। ইনজুরি সময়ে (৯০+৩ মিনিটেচ) ডান উইং থেকে ল্যাজারোকে বল বাড়িয়ে দেন ইয়ান চউতো। সঙ্গে সঙ্গে চিতার মত ক্ষিপ্রতায় বলটা তিনি জড়িয়ে দেন মেক্সিকোর জালে। পুরো এস্টাডিও বেজেরাও যেন বুনো উন্মাদনায় ফেটে পড়ে।

(ওএস/এসপি/নভেম্বর ১৮, ২০১৯)